আর্জেন্টিনার মুখোমুখি না হলে যেন বিশ্বকাপ অভিযান অপূর্ণ থাকে নাইজেরিয়ার
ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮: মঙ্গলবার বিশ্বকাপে পঞ্চমবারের মতো মুখোমুখি নাইজেরিয়া ও আর্জেন্টিনা
মঙ্গলবার গ্রুপ ডি-র মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়া। আরজেন্টিনা-কে বাদ দিয়ে আফ্রিকার 'সুপার ঈগল'-দের বিশ্বকাপ অভিযান যেন সম্পূর্ণই হয় না। এই নিয়ে ৬ বার বিশ্বকাপ খেলছে নাইজেরিয়া। তারমধ্যে এবার ধরে পাঁচবার তারা আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয়েছে।
এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ ডি থেকে ইতিমধ্যেই শেষ ষোলয় জায়গা করে নিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। কাজেই আর্জেন্টিনা বনাম নাইজেরিয়া ম্যাচেই ঠিক হবে, পরের রাউন্ডে এই গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় কোন দল যাচ্ছে। এই মহারণের আগে আসুন দেখে নেওয়া যাক বিশ্বকাপে দুদলের দ্বৈরথের ইতিহাসটা। সেই ১৯৯৪ সালে নাইজেরিয়ার বিশ্বকাপ অভিষেকের বছর থেকে ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপ পর্যন্ত।
১৯৯৪-এর ইউএসএ বিশ্বকাপে, অভিষেকেই তাদের গতি, শক্তি, স্টাইলে ফুটবল বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল নাইজেরিয়া। প্রথম ম্যাচেই বুলগেরিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে দেয় তারা। পরের ম্যাচটিই ছিল আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে। প্রথমে ১ গোলে এগিয়েও গিয়েছিল সুপার ঈগল-রা। কিন্তু ক্লদিও ক্যানিজিয়ার গোলে প্রথমার্ধেই সমতা ফিরিয়েছিল আর্জেন্টিনা। শেষ অবধি মারাদোনার শেষ বিশ্বকাপে তাঁর দেশ ২-১ গোলে জিতেছিল। দুদলই পরের রাউন্ডে যায়।
২০০২-তে কোরিয়া-জাপানে, গ্রুপের প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে বেশ চেপে ধরেছিল নাইজেরিয়া। কিন্তু আর্জেন্টিনার পক্ষে ছিলেন 'বাতিগোল' অর্থাৎ গ্রাব্রিয়েল বাতিস্তুতা। দ্বিতীয়ার্ধে তাঁর হেডে করা গোল থেকেই ১-০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু আর কোনও ম্য়াচ তারা সেবার জিততে পারেনি। কোনো ম্য়াচ জেতা হয়নি নাইজেরিয়ানদেরও। দুটি দেশই গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়।
২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে তেভেজ, হিগুয়াইন ও মেসি-কে নিয়ে শক্তিশালী আক্রমণ ছিল আর্জেন্টিনার। কিন্তু নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপের ম্যাচে মাত্র ৬ মিনিটের মাথায় দুরন্ত হেডে গোল করে যান গাব্রিয়েল হেইঞ্জে। ১-০ য় জেতে আর্জেন্টিনা। মারাদোনার কোচিং-এ এই বিশঅবকাপে আর্জেন্টিনা কোয়ার্টার ফাইনাল অবধি এগিয়েছিল। নাইজেরিয়া অবশ্য গ্রুপ থেকেই বিদায় নিয়েছিল।
২০১৪-য় ব্রাজিলে, গ্রুপ পর্বের লড়াইটি নিশ্চয়ই এখনও দুদলের সমর্থকদের মনে আছে। নাইজেরিয়ার পক্ষে আহমেদ মুসা আর আর্জেন্টিনার পক্ষে মেসি দুজনেই ২ টি করে গোল করেছিলেন। কারা জিতবে এ নিয়ে যখন উত্তেজনা তুঙ্গে তখনই আর্জেন্টিনার পক্ষে গোল করে যান মার্কাস রোহো। শেষ অবধি জেতে ৩-২ গোলে জেতে আর্জেন্টিনা।
কাজেই দেখা যাচ্ছে আর্জেন্টিনা কিন্তু নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে এখনও তাদের জয়ের রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রেখেছে। তবে এটাও ঠিক, প্রত্যেকবারই কিন্তু যথেষ্ট লড়াই করে জিততে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। যে কারণে কখনই হারের ব্যবধান ১ গোলের বেশি বাড়তে দেয়নি আফ্রিকান সুপার ঈগলরা। পঞ্চমবার কি হবে? আর্জেন্টিনা কি পারবে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে নকআউটে জায়গা করে নিতে, নাকি সুপার ঈগলরা প্রথমবারের মতো টপকে যাবে আলবিসেলেস্তেদের বাধা, সেটাই দেখার।