চরম বিতর্কে ব্যালন ডি'ওর! বিশ্বসেরা ফুটবলারকে মঞ্চেই বলা হল পশ্চাতদেশ নাচাতে, ক্ষুব্ধ ফুটবল-জগত
প্রথম মহিলা ব্যালন ডি'ওর বিজয়ী অ্যাডা হেগেরবার্গকে মঞ্চে পশ্চাতদেশ নাচাতে বলেয় কী প্রতিক্রিয়া এল টুইটারে, দেখে নিন।
সোমবারের ব্যালন ডি'ওর-এর মঞ্চে অনেক কিছুই ঘটলো প্রথমবার। মেসি-রোনাল্ডোর আধিপত্য ভেঙে প্রথমবার এই ট্রফি জিতলেন ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলার লুকা মদ্রিচ। প্রথমবার বিশ্বসেরা অনুর্ধ্ব-২১ ফুটবলারকে পুরস্কৃত করা হল। প্রথমবার সেরা মহিলা ফুটবলারকেও দেওয়া হল ব্যালন ডি'ওর।
বিশ্বসেরা অনুর্ধ্ব-২১ ফুটবলার হিসেবে কোপা ট্রফি জিতলেন কিলিয়ান এমবাপে আর প্রথম মহিলা ফুটবলার হিসেবে ব্যালন ডি'ওর জিতলেন নরওয়ের মহিলা ফুটবলার অ্যাডা হেগারবার্গ। কাজেই আলোচনাটা হওয়ার কথা ছিল মদ্রিচ, এমবাপে ও হেগারবার্গকে নিয়েই।
বিশেষ করে এই প্রথমবার ফুটবল দুনিয়ার সেরা এই সম্মান মহিলা ফুটবলারকে দেওয়ার মাধ্যমে পুরুষ অধ্য়ুসিত এই খেলায় মহিলাদের সমান স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে বলে, অনেকেই উচ্ছ্বসিত ছিলেন। কিন্তু সেই মঞ্চেই স্পষ্ট হয়ে গেল মহিলাদের এখনও কোন চোখে দেখা হয়।
তালটা কাটলেন ব্য়ালন ডি'ওর প্রদান অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ফরাসী ডিজে মার্টিন সলভেইগ। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মহিলা ফুটবলার হিসাবে ব্য়ালন ডি'ওর গ্রহন করার পরেই হেগারবার্গকে তিনি মঞ্চেই টোয়ার্ক করতে (পশ্চাতদেশ নাচাতে) বলেন তিনি। কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে হেগারবার্গ 'না' বলে নেমে যান। পেছনে সলভেইগ-কে হাসতে শোনা যয়।
স্বাভাবিক ভাবেই শ্রেষ্ট মহিলা ফুটবলারকে এই চরম লিঙ্গবিদ্বেষী প্রশ্নের করা নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছে ফুটবল ও তার বাইরের সব ক্ষেত্রের মানুষ। প্রশ্নটা শুনে কোপা ট্রফি জয়ী তরুণ ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপেকেও বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যেতে দেখা যায়।
বিতর্কটা মাথা চাড়া দিতেই অবশ্য সলভেইগ সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই প্রশ্নের করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্য এটা নাকি নিছক মজা ছিল। হেগারবার্গ নিজেও অবশ্য জানিয়েছেন, এই ঘটনাটিতে তিনি কিছু মনে করেননি। এটি যৌন হেলস্থার ঘটনা বলেও তিনি মনে করেননি। আসলে ব্যালন ডি'ওর জেতার আনন্দে এরকম কিছু তাঁর মাথায় আসেনি।
তিনি বিষয়টি লঘু করতে চাইলেও সলভেইগকে ছেড়ে কথা বলছে না কেউ। ফরাসী ক্লাব অলিম্পি লিওঁ-কে হেগারবার্গ তিন-তিনবার মহিলা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দিয়েছেন। ২০১৭-১৮ মরসুমে ক্লাবের হয়ে তিনি মাত্র ২৫টি খেলায় ৪২টি গোল করেছেন।তারপরও তাঁকে এই প্রশ্ন শুনতে হওয়ায়, ক্রীড়া সাংবাদিক গ্র্যান্ট ওয়াল থেকে মার্কিন মহিলা ফুটবলার লিন্ডে হোরান, ব্রিটিশ টেনিস তারকা অ্যান্ডি মারে - প্রত্যেকেই এই নক্কারজন ঘটনা নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আরও একধাপ এগিয়ে ফুটবল ভক্তদের কেউ কেউ হেগারবার্গের হাতে ব্যালন ডি'ওর ট্রফির জায়গা সলভেইগ-এর কাটা মাথা সুপার ইম্পোজ করেছেন। এমনকী উইকিপিডিয়ায় সলভেইগ-এর পেজ কেউ এডিট করে তাঁকে চরম লিঙ্গবিদ্বেষী হিসেবে উল্লেখ করেছে।