দ্বিতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, এক নয়া ইতিহাস রচিত হল রাশিয়ায়
দুর্দান্ত খেলে বড় দল হিসাবে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেল ফ্রান্স। ৩২টি দেশের মধ্যে সেরা সেরা হলেন গ্রিজম্যানরা।
মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামের নীল রঙের স্রোত যেন শুরু থেকেই অ্যাডভান্টেজে ছিল। ২০১৬ সালে ইউরো কাপের ভুল আর করবে না লেস ব্রুস-রা। তা ফাইনালের অনেক আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন পল পোগবা, গ্রিজম্যানরা। আর সেই কথাও রাখলেন। দুর্দান্ত খেলে বড় দল হিসাবে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেল ফ্রান্স। ৩২টি দেশের মধ্যে সেরা সেরা হলেন গ্রিজম্যানরা।
এদিন খেলার শুরু থেকেই ক্রোয়েশিয়া একের পর এক আক্রমণ তুলে আনতে থাকে। তবে ফ্রান্স ধীরে ধীরে খেলা ধরার চেষ্টা করে। লুকা মডরিচ, ইভান রাকিটিচরা সংঘবদ্ধ আক্রমণ করে ফ্রান্স আক্রমণে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিলেন। তবে ১৮ মিনিটের মাথায় এক নির্বিষ কর্ণারে ভুলবশত মাথা ছুঁইয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার স্ট্রাইকার মারিও মান্ডজুকিচ। আর সেই আত্মঘাতী হেডে গোল হয়ে যায়। এগিয়ে যায় ফ্রান্স।
তারপরও ক্রোটরা আক্রমণ থেকে সরে আসেননি। বিশ্বকাপের ফাইনালে হারানোর কিছু নেই। এই মনোভাব থেকেই ক্রোয়েশিয়া আক্রমণ, আক্রমণ ও আক্রমণকেই মূলমন্ত্র করে নেয়। আর এভাবেই ২৮ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত শটে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে সমতা ফেরান পেরিসিচ। এখান থেকে মনে হচ্ছিল খেলায় বোধহয় ফিরে এল ক্রোয়েশিয়া। কারণ বল পজেশন থেকে আক্রমণ সবেতেই মডরিচরা বারবার ফ্রান্সকে ছাপিয়ে যাচ্ছিলেন।
তবে বোধহয় ভাগ্য এদিন সহায় ছিল না ক্রোয়েশিয়ার। ৩৮ মিনিটে বক্সে বল হাতে লাগিয়ে ফাউল করে বসে ক্রোয়েশিয়া। পেনাল্টি থেকে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন অধিনায়ক আন্তোইন গ্রিজম্যান। প্রথমার্ধেই তিনটি গোল হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধে পিছিয়ে থেকে নেমেও ক্রোয়েশিয়া বারবার গোল শোধ করার চেষ্টা করছিল। তবে গোটা টুর্নামেন্টে যেভাবে ওপেন ফুটবল খেলে ক্রোয়েশিয়া ফাইনালে উঠেছিল, ফাইনালে সেই রণকৌশলের কিছুটা বোধহয় পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। একেবারে ওপেন ফুটবল খেলতে গিয়েই বোধহয় ডুবল ক্রোয়েশিয়া।
ফ্রান্স দ্বিতীয়ার্ধে একেবারে অভিজ্ঞ দলের মতোই খেলল। ঠিক যেভাবে বেলজিয়াম ম্যাচে প্রতি আক্রমণে জয় ছিনিয়ে এনেছিল ফ্রান্স, ঠিক সেভাবেই এদিন দ্বিতীয়ার্ধে ৫৯ মিনিটে পল পোগবা ও ৬৬ মিনিটে এমবাপে দুটি দুরন্ত গোল করে ফ্রান্সের জয় নিশ্চিত করেন।
শেষ ২৫ মিনিটে ক্রোয়েশিয়া বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও তা যথেষ্ট ছিল না। ৬৯ মিনিটে ফ্রান্স গোলকিপার উগো লোরিসের ভুলে ক্রোয়েশিয়া দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায়। মারিও মান্ডজুকিচ গোল করে ব্যবধান কমান। তবে এরপরে ডিফেন্সে লোক বাড়িয়ে ফেলে ফ্রান্স। যার ফলে ক্রোটরা আর গোল পাননি। এভাবেই সংঘবদ্ধ আক্রমণ ও রক্ষণের উপর ভর করে ফ্রান্স দ্বিতীয়বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হল। ১৯৯৮ সালের পর ফের একবার লে ব্রুসদের দেশে বিশ্বকাপ গেল।