গোলরক্ষকের ভুল, ব্যর্থ ডিফেন্স, বিশ্বকাপ থেকে বিদায় উরুগুয়ের
কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়ে দিল ফ্রান্স।
আর্জেন্তিনার পর উরুগুয়ে, লাতিন আমেরিকার দলগুলির কাছে এখন আতঙ্কের নাম ফ্রান্স। কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়ে দিল ফ্রান্স।কাভানি-হীন উরুগুয়ে এদিন শুরু থেকেই এঁটে উঠতে পারল না ফ্রান্সের বিরুদ্ধে।
আর্জেন্তিনাকে হারানোর ফলে এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল ফ্রান্সের ফুটবলারদের। আর সেই আত্মবিশ্বাসের উপর ভর করে এবং দুরন্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে তারা শেষ করে দিল আরও এক লাতিন আমেরিকার দলকে।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবলের নমুনা রাখে ফ্রান্স। প্রথম দশ মিনিটের পর থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় ফ্রান্স। চালাতে থাকে একের পর এক আক্রমণ।
এরই সুবাদে ম্যাচের ১৬ মিনিটে এবং ২০ মিনিটে পর পর দু'টি চান্স পায় ফ্রান্স। কিন্তু এমবাপে এবং পোগবার ভুলে সেই সুযোগ হাত ছাড়া হয়।
এরই মাঝে একাধিকবার প্রতি-আক্রমণে উঠে এসে ফ্রান্সের রক্ষণদূর্গে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করে উরুগুয়েও। কিন্তু ফরোয়ার্ড লাইনের ব্যর্থতায় গোলের মুখে দেখতে পায়নি উরুগুয়ে। একটি ক্ষেত্রে গোল মুখ ওপেন হয়ে গেলেও বিষ মাখানো ক্রসকে স্রেফ পা ঠেকিয়ে জালে জড়াতে ব্যর্থ হয় উরুগুয়ের আক্রমণভাগের প্লেয়াররা।
তবে, উরুগুয়ে ব্যর্থ হলেও প্রথমার্ধেই কাজের কাজটা করে নেয় ফ্রান্স। টলিসোকে বেন্টাঙ্কুর ফাউল করলে বক্সের ৩০ গজ দূরে ফ্রি কিক পায় গ্রিজম্যানের দল। নিজেই ফ্রি কিক নেন গ্রিজু।
ম্যাচের ৪০ মিনিটে গ্রিজম্যানের ফ্রি কিক থেকে গোল করে যান ফ্রান্সে রক্ষণের মূলস্তম্ভ রাফায়েল ভারানে। এক গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধে মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আশা করা হয়েছিল ম্যাচে ফিরে আসাতে ফ্রান্সকে চেপে ধরবেন গডিন-সুয়ারেজরা। কিন্তু প্রত্যাশা মতো খেলতে ব্যর্থ হন উরুগুয়ের প্রতি খেলোয়াড়ই। বলা ভাল এডিনসন কাভানির না থাকাটাই এই ম্যাচে ফারাক গড়ে দিল দুই দলের। একবারের জন্যও লাতিন আমেরিকার দলটির আক্রমণভাগের ফুটবলাররা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারলেন না।
বলের জোগান না পেয়ে বারবার এই ম্যাচে নীচে নেমে আসছিলেন সুয়ারেজ। ফলে আক্রমণভাগে ফাঁকা জায়গা তৈরি হচ্ছিল প্রতিনিয়ত।
এরই মাঝে ম্যাচের ৬০ মিনিটে সম্পূর্ণভাবে উরুগুয়ের গোলরক্ষক মুসলেরার ভুল থেকে গোল করে যান ফ্রান্সে অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যান। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া গ্রিজম্যানের জোড়ালো শট বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হন তিনি। বলের লাইনেই ছিলেন গোলরক্ষক। কিন্তু তার ভুল সিদ্ধান্তের কারণে তাঁর হাতে লেগে বল জড়িয়ে যায় জালে।
এমনিতেই এক গোলে পিছিয়ে থাকায় চাপ তৈরি হচ্ছিল উরুগুয়ের উপর, এরই মাঝে অপ্রত্যাশিত ভাবে দ্বিতীয় গোল হজম করার পর প্রায় ম্যাচের হাল ছেড়ে দেয় উরুগুয়ে। দ্বিতীয় গোল হজমের পর অস্কার তাবারেজ একাধিক পরিবর্তন করলেও, তা কাজে আসেনি। নির্ধারিত সময়ের শেষে ফ্রান্সের কাছে ২-০ গোলে হেরে মাঠ ছাড়তে হয় উরুগুয়েকে। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন গ্রিজম্যান।