প্রেম দিবসে লাল-হলুদের 'ফাইভস্টার' উপহার! দানমাউইয়ার হ্যাটট্রিক, মেনেন্দেজ পেলেন সবচেয়ে বড় জয়
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) কলকাতায় শিলং লাজং-কে ৫-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে আই-লিগ ২০১৮-১৯'এর লিগ টেবিলে তৃতীয় স্থানে উঠে গেল ইস্টবেঙ্গল।
ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে সমর্থকদের জন্য এর থেকে আর কী ভাল উপহার দিতে পারত ইস্টবেঙ্গল? যুবভারতীর মাঠে লালহলুদের 'ফাইভস্টার পারফরম্যান্স'-এ মেনেন্দেজ জমানায় এল সবচেয়ে বড় জয়। শিলং লাজং-কে ৫-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে আইলিগ ২০১৮-১৯'এর লিগ টেবিলে তৃতীয় স্থানে উঠে এল মশালবাহিনী।
পাহাড়ি দলের বিরুদ্ধে দুরন্ত হ্যাটট্রিক করলেন লাল-হলুদের পাহাড়ি ফুটবলার দানমাউইয়া (৮', ২৭', ৬১')। একটি করে গোল করলেন জবি জাস্টিন (২৮') ও এনরিকে এস্কেদা (৪৫+১')-ও। ফলে ১ ম্য়াচ কম খেলে চেন্নাইয়ের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্টের ব্যবধান রইল মাত্র ৩।
সবচেয়ে বড় কথা দানমাউইয়া হ্য়াটট্রিক করলেও এদিন গোটা দলই দুর্দান্ত ফুটবল খেলল, সম্ভবত যে ব্র্যান্ডের ফুটবলের কথা মেনেন্দেজ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বারবার বলে এসেছেন।
শুরুর থেকেই দখল
এদিন শিলং লাজং এককথায় পায়ের তলায় জমিই দেয়নি মেনেন্দেজের দল। একবারে শুরু থেকে টপ গিয়ারে খেলা শুরু করেছিল। দিন কয়েক আগে লাল-হলুদ কোচ দাবি করেছিলেন সেট পিসে তাঁদের দলের জু়ড়ি নেই। এদিন ৮ মিনিটের মাথাতেই প্রথম সেট পিস থেকে গোল পায় তাঁর দল। রালতের একেবারে মাপা কর্নার কিকে মাথা ছুঁইয়ে দলের ও নিজের প্রথম গোল করে যান দানমাউইয়া।
পিঠোপিঠি জোড়া গোল
ইস্টবেঙ্গল এতটাই ঝাঁঝালো খেলছিল যে প্রথম ২০ মিনিট লাজং বল নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের অর্ধেই পৌঁছতে পারেনি। আর ২৭ মিনিটের মাথায় দানমাউইয়া তাঁর ও দলের দ্বিতীয় গোলটি করে যান। বোরহা গোমেজের লম্বা বাড়ানো বল ঠিক লাজং বক্সের মাথায় পেয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল উইঙ্গার। হাল্কা লবে এগিয়ে আসা লাজং গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে গোলে পাঠান তিনি। এর ১ মিনিট পরেই তৃতীয় গোলটি আসে জবির মাথা থেকে। এস্কেদা এমন জায়গায় লবটি রেখেছিলেন যে জবিকে মাথা ছোঁয়ানো ছাড়া আর কিছু করতে হয়নি।
এস্কেদার কাঁচি
এদিন প্রথম একাদশে ২টি পরিবর্তন করেছিলেন মেনেন্দেজ। হাইমের হদলে শুরুর থেকে খেলান এস্কেদাকে। আর লেফট ব্যাকে কমলপ্রিতের জায়গায় খেলান মনোজ মহম্মদকে। এস্কেদা জবিকে গোলের বলটি সাজিয়ে দেওয়া ছাড়াও বিরতির ঠিক আগে একটি দর্শনীয় গোল করলেন। কলকাতার মাঠে দেখা গেল 'সিজার কিক'। রালতের লম্বা বাড়ানো বল বক্সের মধ্যে গোলের দিকে পাশ করে বুকে দুর্দান্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, দুটো পা কাঁচির মতো ভঙ্গিতে নিয়ে বল গোলে পাঠালেন এই মেক্সিকান। চোট সারিয়ে ফিরে ৩ ম্য়াচে ৩ গোল হয়ে গেল তাঁর।
শেষ পেরেক
দ্বিতীয়ার্ধেও ইস্টবেঙ্গলের খেলার মান এতটুকু পড়েনি। ৫৯ মিনিটের মাথায় এস্কেদাকে তুলে হাইমেকে নামিয়েছিলেন মেনেন্দেজ। প্রথম মিনিট থেকেই দলের খেলার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিলেন তিনি। ডানপ্রান্তে তাঁকে লক্ষ্য করে একটি থ্রু বল বাড়িয়েছিলেন আইদারা। এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তিনি সেই বল আড়াআড়ি বাড়ান হক্সের মধ্যে। এরপর যে মুভটি হল, সেটি দেখেই বোঝা গেল দীর্ঘ অনুশীলনের ফল। জবির 'ডামি রান'-এ জায়গা পরিষ্কার হয়ে গেল পিছনে অপেক্ষা করা দানমাউইয়ার। নিশ্চিন্তে সেই বল জালে জড়িয়ে, নিজের প্রথম আইলিগ হ্যাটট্রিকটি করে লাজং-এর কফিনে শেষ পেরেকটি পুতে দেন তিনি।
ইস্টবেঙ্গলের পরের প্রতিপক্ষ খেতাবি দৌড়ে থাকা চার্চিল ব্রাদার্স।