জঘন্য রেফারিং, খেতাবি দৌড়ে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন প্লাজা! রালতের সৌজন্যে ভেসে রইল ইস্টবেঙ্গল
ইস্টবেঙ্গল বনাম চার্চিল ব্রাদার্স, আইলিগ ২০১৮-১৯ ম্যাচের প্রতিবেদন।
আরও একটি দুর্দান্ত ফ্রিকিক নিলেন লালরিনডিকা রালতে। যাতে আল্তো করে মাথা ছুঁইয়ে গোল করলেন কাশিম আইদারা। আর তার সৌজন্যেই লাল-হলুদের ঘরে এল ১ পয়েন্ট। নাহলে জঘন্য় রেফারিং ও পুরনো সৈনিক উইলিস প্লাজার গোলে এই ম্যাচে ৩ পয়েন্টই খোয়াতে হত মেনেন্দেজের দলকে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফল দঁড়াল ১-১।
রবিবাসরীয় (১৭ ফেব্রুয়ারি) যুবভারতীতে চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে জিততে পারলেই লিগ শীর্ষে থাকা চেন্নাই সিটির মতোই ১৬ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট দাঁড়াতো ইস্টবেঙ্গলের। সেই আশাতেই এদিন যুবভারতীতে ভিড় করেছিলেন ৪৪ হাজারের মতো লাল-হলুদ জনতা। কিন্তু তাদের হতাশই হতে হল। ১৬ ম্যাচে রিয়াল কাশ্মীরের মতোই তারা রইল ৩২ পয়েন্টে। গোল পার্থক্য ও মুখোমুখি লড়াইতে এগিয়ে থাকার জন্য ইস্টবেঙ্গল উঠে এল ২ নম্বরে।
ঘর সামলে আক্রমণে
চার্চিল ব্রাদার্স আর যাই হোক শিলং লাজং নয়। আগের ম্যাচে যেভাবে তীব্রতায় শুরু করেছিল ইস্টবেঙ্গল এদিন তা দেখা যায়নি। বরং পেশি শক্তিতে মাঝমাঠের দখল নিয়েছিল চার্চিলই। মেনেন্দেজ প্রথমার্ধে দলকে খেলান ঘর সামলে আক্রমণে যাওয়ার কৌশলে। মূলত প্রতিআক্রমণ নির্ভর ফুটবলই খেলছিল লাল-হলুদ। এরমধ্যে চার্চিলের চেস্টারপল লিংডো বক্সের মধ্যে একটি বাল বল পেয়ে তাকে গোলপোস্টের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন।
ভাল গেল না ডোভালের
অল্প সময়ের মধ্যেই লাল-হলুদের বাঁ-প্রান্তে ভাল মানিয়ে নিয়েছেন টোনি ডোভাল। কিন্তু এই ম্যাচে সময়টা তাঁর একেবারেই ভাল গেল না। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তাঁকে তুলে নিতে বাধ্য় হন মেনেন্দেজ। যতক্ষণ মাঠে থাকলেন বেশ কিছু ভুল করলেন। তারমধ্যে বিরতির ঠিক আগেই দিনের সহজতম গোলের সুয়োগ হারানোও রয়েছে। চার্চিল বক্সে এস্কেদা একটি নিচু ক্রস বাড়িয়েছিলেন। ডোভালের সামনে ছিলেন শুধু মাত্র চার্চিল গোলরক্ষক ভাস্করন। কিন্তু তাঁকে টপকাতে পারেননি ডোভাল। অবশ্য এই ক্ষেত্রে ভাস্করনকে কৃতিত্ব দিতে হবে।
জমাট পাঁচিল দাগার
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচের ৫০তম মিনিটে একটি সুবর্ণ সুযোগ হারায় চার্তচিল ব্রাদার্স। অবশ্য এক্ষেত্রেও ভাস্করনের মতো তাঁর উল্টো দিকের দোলে দাঁড়ানো রক্ষিত দাগারের কৃতিত্বই বেশি। ফার্নান্ডেজের কর্নার থেকে হেড করেছিলেন নোভাকোভিচ। কিন্তু দুরন্ত রিফ্লেক্সে সেই বল গোল লাইন থেকে বঁচান দাগার।
গতির বিরুদ্ধে সেই প্লাজা
এরপরই ডোভাল ও দানমাওইয়াকে তুলে হাইমে ও ব্র্যান্ডনকে নামানোয় ইস্টবেঙ্গলের খেলায় ধার ফিরেছিল। কিন্তু খেলার গতির বিরুদ্ধে নিকোলাস ফার্নান্ডেজের থ্রু বল থেকে গোল করে যান সেই উইলিস প্লাজা। দৌড়ের সময় সামান্য দিক বদল করে বোরহা গোমেজকে ধোকা দেন তিনি। প্রথম লেগের ম্যাচেও তিনিই গোল করেছিলেন চার্চিলের হয়ে।
উদ্ধার ১ পয়েন্ট
এর ১০ মিনিট পরেই ফের একবার সেটপিসে হিরের দ্যুতি দেখান ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক রালতে। বক্সের কোনাকুনি ডান প্রান্ত থেকে ফ্রিকিক পেয়েছিল লল-হলুদ। একেবারে মাপা বিশ্মামনের ফ্রিকিক নিলেন ডিডিকা। আর আলতো মাথার ছোঁয়ায় বলের গতিপথ সামান্য পাল্টে দিলেন কাশিম আইদারা। এরপর বাকি সময়ও ইস্টবেঙ্গল গোলের সন্ধানে খোঁচা খাওয়া বাঘের মতো ঝাঁপাল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোল এল না।
সবশেষে রেফারি
এর আগের বহু ম্যাচের মতো এদিনও আই লিগে খুব খারাপ হল রেফারিং। ভুগতে হল মশাল বাহিনীকে। কখনও চার্চিলের দুই খেলোয়াড় নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি করে পড়ে যাওয়ায়, মাথায় আঘাত লাগা ছাড়াই খেলা থামিয়ে দিলেন রেফারি। কখনও চার্চিল গোলরক্ষক ব্যাকপাস হাতে ধরলেও হ্যান্ডবল বা পেনাল্টি কিছুই দিলেন না।