যিনি মেসির পেনাল্টি বাঁচান, তিনি ফিল্মও বানান!
মেসির পেনাল্টি বাঁচিয়ে নায়ক হওয়া আইসল্যান্ডের গোলকিপার ফিল্ম পরিচালনাও করেন।
মেসির পেনাল্টি বাঁচিয়ে এখন সারা বিশ্বের চর্চায় আইসল্যান্ডের গোলকিপার হ্যানস থর হল্ডোরসন। মজার ব্যাপার হল ২০০৪ সালে প্রায় ফুটবল ছেড়ে দেবেন বলেই ভেবেছিলেন তিনি,। ভেবেছিলেন পুরোপুরি মন দেবেন তাঁর আরেক পেশায়, ফিল্ম পরিচালনায়। হ্যাঁ, হল্ডোরসন স্কুল জীবন থেকেই জড়িত ফিল্ম পরিচালনার সঙ্গে।
২০০৪ সালে যখন তাঁর মাত্র ২০ বছর বয়স তখন তাঁকে দেখলে কেউ ভাবতেই পারতেন না একদিন তিনি বিশ্বমঞ্চে মেসিকে রুখে দেবেন। হাইস্কুল পার্টি, ফিল্ম কেরিয়ার এই নিয়েই মত্ত ছিলেন। লেইকনির নামে এক স্থানীয় ক্লাবে খেলতে খেলতেই আইসল্যান্ডের একটি তৃতীয় ডিভিশনের ক্লাবে ট্রায়াল দেন তিনি। কিন্তু ব্যর্থ হন।
লেইকনির-এ ফিরে মরসুমের শেষ ম্যাচেই করে বসেন মারাত্মক ভুল। যার জেরে অবনমন হয় ক্লাবের। বলা যায় একেবারে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল হল্ডোসনের। তখনই ভাবেন খেলা টেলা ছেড়ে ফিল্ম নিয়েই থাকবেন। ততদিনে গার্ল ব্যান্ড 'নাইলন'-এর জন্য একটি মিউজিক ভিডিও বানিয়ে তাঁর সেই জগতে বেশ নাম হয়েছে।
কিন্তু তাঁর বাবা পুত্রের এই পালিয়ে যাওয়া মানতে পারেননি। তিনি তাঁর মধ্যে জেদের আগুন জ্বেলে দেন। হল্ডোরসনকে স্বপ্ন দেখান, একদিন তাঁর আইডন জিয়ানলুইডি বুঁফোর বিরুদ্ধে খেলার। সেই থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। বুঁফোর বিরুদ্ধে না হলেও ইউরো ২০১৬-র কোয়ার্টার ফাইনালে হুগো লরিসের বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে।
২০১১-য় আইসল্যান্ডের লিগে কেআর ক্লাবের হয়ে জিতে সেরা খেলোয়ার নির্বাচিত হন তিনি। ওই বছরই জাতীয় দলের এক গোলকিপার সাসপেন্ড, আরেকজনের চোট থাকায় তাঁর সুযোগ আসে খেলার। সেই ইউরো ২০১২-র যোগ্যতা অর্জনের সেই ম্যাচে তিনি ক্লিনশিট রাখেন। তারপর থেকে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি। জাতীয় দলের প্রধান ভরসা হয়ে ওঠেন তিনি। শেষ প্রহরীর ঝায়গা থেকেই চিতকার করে গোটা দলকে তাতান এই গোলরক্ষক।
তবে নিজের ফিল্মের কেরিয়ারও কিন্তু সমানতালে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। মিউজিক ভিডিও-র সঙ্গে বেশ কয়েকটি টেলি সিরিজও পরিচালনা করেছেন এই বহুমুখী প্রতিভা। তার মধ্যে আইসল্যান্ডের ফুটবল সংক্রান্ত অনুষ্ঠানও আছে। তাঁর সঙ্গে আইসল্যান্ডের ফিল্ম জগতের এই ওঠাবসায় বেশ লাভ হয়েছে আইসল্যান্ডের খেলোয়ারদের। মাঝে মাঝেই হল্ডোরসন ম্যাচের এক-দুদিন আগে বিভিন্ন ফিল্ম দেখান। তারমধ্যে এরকমও হয়, যে সিনেমা এখনও হলে বের হয়নি তাঁর কল্যানে আইসল্যান্ডের ফুটবলাররা আগেই তা দেখে ফেলেন।