ইন্ডিয়ান সুপার লিগ, প্রথম ম্যাচেই কলকাতার মাঠে প্রথম জয় তুলে নিল কেরল ব্লাস্টার্স
ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ২০১৮-১৯ মরসুমের প্রথম ম্যাচে, কেরল ব্লাস্টার্সের কাছে এটির ২-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হল এটিকে।
গত মরসুমের দুঃস্বপ্নের রেশ রয়ে গেল এই মরসুমেও। প্রথম ম্যাচেই পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বী কেরল ব্লাস্টার্সের কাছে ২-০ গোলে হেরে গেল অ্যাথলেটিকো দে কলকাতা। প্রথমার্থ গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৭৭ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল করেন কেরলের মাতেজ পপ্লাতনিক। ম্যাচের একেবারে শেষে ৮৬ মিনিটে আরও একটি গোল করে যান স্লাভিসা স্টোজানভিচ।
এদিন এটিকের কোচ স্টিভ কপেল দল নামিয়েছিলেন ৪-২-৩-১ ছকে। দুই সাইডব্যাক ছিলেন আইবরল্যাঙ ও সেনা রালতে। সেন্ট্রাল ডিফেন্সে ছিলেন জন জনসন ও গার্সন ভিয়েরা। তাদের সামনে ডাবল পিভটে খেলানো হয় মাইমৌনি ও প্রণয় হালদারকে। গোলে ছিলেন অরিন্দম। মিডফিল্ডে দুই প্রান্তে ছিলেন রানে ও বলবন্ত সিং ও মাঝে প্লেমেকারের ভূমিকায় ছিলেন অদিনায়ক লাঞ্জারোতে। আর একমাত্র স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেন এভার্টন স্যান্টোস।
অপরদিকে, কেরলের কোচ ডেভিড জেমস ভরসা রেখেছিলেন ৪-৪-২ ছকেই। তাদের প্রথম এগারোয় বিদেশী ছিলেন মাত্র ৪ জন। এদিন আইএসএল-এ অভিষেক হয় ফিফা অনুর্ধ ১৭ বিশ্বকাপে সাড়া ফেলা ভারতীয় গোলরক্ষক ধীরাজের। ডিফেন্সে ছিলেন লেকিচ, সন্দেশ, লালরুয়াত্থারা ও রাকিপ। ডঞ্জেল ও হোলিচরণ ছিলেন উইং-এ। সামাদ ও ক্রামারেভিচ খেলেন মাঝে। সামনে ছিল জোড়া ফলা স্টোজানোভিচ ও পপ্লাতনিক।
খেলায় প্রথম থেকেই প্রাধান্য ছিল কেরলের। তাদের প্রথম সুয়োগ এসেছিল ম্যাচের একেবারে ৪ মিনিটের মাথাতেই। কিন্তু পপ্লাতনিকের হেড একটুর জন্য লক্ষ্যে পৌঁছায়নি। আবার ১০ মিনিটের মাথাতেও পপ্লাতনিকের হেড থেকে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন লেকিচ। সেনা রালতে গোললাইন সেভ করেন। আবার ম্যাচের ১৯ মিনিটেও লেন একটি সহজ গোলের সুযোগ মিস করেন।
এটিকে ফিল্ড প্লেতে কেরল ডিপেন্সকে বিশেষ বিব্রত না করলেও যখনই সেট পিস পেয়েছে তাদের ভয়ঙ্কর দেখিয়েছে। একটি কর্ণার থেকে লাঞ্জারোতে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন। তাঁর বাঁক খাওয়া বল ক্রসবারে লেগে বেরিয়ে যায়। তবে কলকাতার দলটির সামনে সবচেয়ে বড় সুযোগ এসেছিল ২৬ মিনিটে। লাঞ্জারোতের ভাসানো বল রানে দুর্দান্ত জায়গায় নামিয়ে দিয়েছিলেন স্যান্টোসের জন্য। ব্রাজিলিয় ফুটবলারটির জোরালো শট ক্রসবার ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়।
প্রথমার্ধে খেলার ফল ০-০ ছিল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এটিকে কিছুটা হলেও ম্যাচে ফিরে এসেছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে ফের ম্যাচে জাঁকিয়ে বসে ব্লাস্টার্স। ৭৫ মিনিটের মাথায় কপেল নাইজেরিয় কালু উচে ও ইউজেনসন লিংডোকে নামিয়েছিলেন। কিন্তু ঠিক এর দু মিনিট বাদেই প্রথম গোল হজম করে অ্যাথলেটিকো।
কেরলের বদলি খেলোয়াড় পেকুসন বক্সের ঠিক মাথায় বল দিয়েছিলেন স্টোজানোভিচকে। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই গোল লক্ষ্য করে জোরালো শট নেন। কিন্তু তা ভিয়েরার গায়ে প্রতিহত হয়ে এসে পড়ে পপ্লাতনিকের পায়ে। এবারের আইএসএল-এ স্কোরশিটে প্রথম নাম তুলতে ভুল করেননি তিনি।
তবে স্টোজানোভিচেরও গোল না পাওয়ার হতাশা কেটে যায় ম্যাচের নিয়মিত সময় শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগে। সার্বিয়ান ফুটবলারটির উদ্দেশ্যে একটি লঙবল বাড়িয়েছিলেন হোলিচরণ নার্জারি। বক্সের বাইরে থেকেই দুর্দান্ত শটে গোল করে যান স্টোজানোভিচ।
এটিকের এর পরের ম্যাচ ৪ অক্টোবর নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে। এই হতাশাজনক শুরুর স্মৃতি দ্রুত ভুলতে না পারলে প্রাক্তন চ্যাম্পিয়নদের কপালে দুঃখ আছে।