আইএসএল ২০১৮-১৯: শেষ ৯ মিনিটে ৩ গোল! ম্যাচ অমীমাংসিত থাকল কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে
ইন্ডিয়ান সুপার লিগ ২০১৮-১৯-এ বেঙ্গালুরু এফসি বনাম জামশেদপুর এফসি ম্যাচের রিপোর্ট।
রবিবার সন্ধ্যায় বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে একেবারে শেষ মুহূর্তে সের্গিও সিডোনচার গোলে গতবারের রানার্স আপ বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে হার বাঁচাল জামশেদপুর এফসি। ৪৫ মিনিটে বেঙ্গালুরুকে ১-০ গোলে এগিয়ে দিয়েছিলেন নিশু কুমার। কিন্তু ৮১ মিনিটে তা শোধ করে দেন গৌরব মুখি। ৮৮ মিনিটে সুনীল ছেত্রীর গোলে বেঙ্গালুরুর জয় যখন নিশ্চিত তখনই সিডোনচা (৯০+৪ মিনিটে) ২-২ করে যান।
প্রথম ম্যাচে ঘরের মাঠে চেন্নাইকে হারিয়ে গতবারের ফাইনালের প্রতিশোধ নিয়েছিল বেঙ্গালুরু। এদিন সেই জয়ী দলই অপরিবর্তিত রাখা হয়। হরমোনজোৎ খাবরাকে ডাবল পিভট পজিশনেও রাখা হয়। দিমাস দেলগাদোর চেট সেরে গেলেো এদিন তাঁকে প্রথম একাদশে রাখা হয়নি।
অন্যদিনে এদিনের ম্যাচে জামশেদপুরের হয়ে আইএসএল-এ তাঁর অভিষেক ঘটিয়ে ফেললেন টিম কাহিল। তাঁকে একা সামনে রেখে ৪-২-৩-১ ছকে খেলতে নেমেছিল ইস্পাত মানবরা। আইলিগে গ মরসুমে হইচই ফেলা সুসাইরাজকে কাহিলের পিছনে অ্যআটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলানো হয়।
প্রথমার্ধে দুই দলই বেশিরভাগ সময়ে মাঝমাঠেই বল দেওয়া নেওয়া করেছে। সেই অর্থে ভাল কোনও গোলের সুযোগ তৈরি হয়নি। প্রথম সুযোগ অবশ্য পেয়েছিল বেঙ্গালুরুই। ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় উদান্ত সিং তাঁর মার্কারকে পেরিয়ে অনেকটা ফাঁকা জায়গা পেয়ে গিয়েছিলেন। তাঁকে বল বাড়িয়েছিলেন খাবরা। কিন্তু উদান্ত মিস পাস করে সেই সুযোগ জলাঞ্জলী দেন।
অন্য দিকে জামশেদপুরের যাবতীয় আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য ছিল কাহিল। কিন্তু অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলা সুসাইরাজ এতটাই নিচে খেলছিলেন, যে উপরে কাহিল বারবার একা পড়ে গিয়েছেন। উইং দিয়ে বল বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন জেরি। কিন্তু তাঁর ক্রস বেশিরভাগ আটকে দিয়েছেন নিশু কুমার।
দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম বলার মতো ঘটনা ঘটে ৫৭ মিনিটে। এবারেও ঘটনায় জড়িত ছিলেন নিশু কুমার। বক্সের একেবারে মাথায় তিনি জেরিকে টেনে ফেলে দেন। জামশেদপুর এফসির পেনাল্টির দাবিতে কর্ণপাত করেননি রেফারি।
এরপর জামশেদ পুর খেলোয়াড় বদল করে মোবাশির রহমানকে নামালে তাদের আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ে। ধীরে ধীরে বেঙ্গালুরু বক্সে সমস্যা সৃষ্টি করতে থাকেন জামশেদপুরের খেলোয়াড়রা। তবে তাদের হয়ে এদিন সুপার সাব হয়ে ওঠেন ১৬ বছরের তরুণ ফুটবলার গৌরব মুখি।
তবে তাঁর গোলের কথা বলতে গেলে বলতে হবে জামশেদপুরের মিডফিল্ডার স্প্যানিস মারিও আর্কেসের কথা। এদিন তিনিই পরিচালনা করলেন জামশেদপুরের পুরো মাঝমাঠ। তাঁর পাশ ধরেই অ্যালবার্ট সেরানের মতো ডিফেন্ডারকে টপকে দুর্দান্ত ফিনিশে গোল করে যান এই তরুণ।
গোল শোধের পরই নড়েচড়ে বসেছিল বেঙ্গালুরু। তাদের একের পর এক আক্রমণের ঝড় আছড়ে পড়তে শুরু করে ইস্পাত মানবদের রক্ষণে। এই ধারাবাহিক আক্রমণেরই ফসল ৮৮ মিনিটে সুনীল ছেত্রীর গোল। খাবরার একটি লব থেকে হেডে গোল করে যান ভারতের জাতীয় দলের অধিনায়ক।
কিন্তু আবারও ঝলসে ওঠেন সেই মারিও আর্কেস। তিনিই ইনজুরি টাইমেরর একেবারে শেষে বক্সের মধ্যে সিডোনচার জন্য গোলের বল সাজিয়ে দিয়েছিলেন। শেষ কাজটা সারতে ভুল করেননি তিনি।
এই ম্যাচ ড্র হওয়ার ফলে বর্তমানে আইএসএল-এর শীর্ষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রইল মোট ৫টি দল।