শুক্রবার সন্ধ্যায় কেরলের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে কেরল ব্লাস্টার্স ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মধ্যে ম্যাচের একেবারে শেষ পর্যন্ত মনে হয়েছিল সহজেই জয় পেতে চলেছে ব্লাস্টার্সরা। কিন্তু তা হতে দিলেন না তরুণ প্রাঞ্জল ভূমিজ। ইনজুরি টাইমের একেবারে শেষ মুহূর্তে তিনি বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে গোল লক্ষ্য করে একটি দূরপাল্লার শট নেন। তা বাঁক খেয়ে একেবারে তিন কাঠইর কোনা দিয়ে ঢুকে যায়। সেই দুর্ধর্ষ গোলেই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফল হল ১-১।
গোটা ম্যাচে কিন্তু অনেক বেশি ভাল খেলেছে কেরলই। মুম্বই সিটি এফসি দলের খেলা দেখে মনে হয়নি কখনও তারা গোল করতে পারে। তাদের মিডফিল্ডে ছিলেন রেনিয়ের ফার্ণান্ডেজ, পাওলো মাশাদো ও শেহনাজ সিং। কেরলের সামাদ ও ক্রামারেভিচরা প্রাণবন্ত ফুটবল খেলে বারেবারেই তাদের টপকে গিয়েছে।
খেলায় দীর্ঘক্ষণ তো শেহনাজকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। মাশাদোও এমন খেলেন যে তাদের কোচ হর্হে কোস্তা তাঁর এই বিশ্বস্ত সেনাপতিকে তুলে নিয়ে মিরাবাহেকে নামাতে বাধ্য হন। রেনিয়ের তিনজনের মধ্যে তুলনায় ভাল খেললেও তা যথেষ্ট ছিল না। মুম্বই মিডফিল্ডারদের দেখে মনে হয়েছে তাদের ফিটনেসের ঘাটতি রয়েছে।
ফলে শুক্রবার সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের বেশিরভাগ আক্রমণই এসেছে উইং দিয়ে। বিশএষ করে ডান প্রান্তে ইসোকো বেশ ভাল সচল ছিলেন। কিন্তু পরিকল্পনার অভাবে সব আক্রমণই অ্যাটাকিং থার্ডে এসে মুখ থুবড়ে পড়েছে।
.@KeralaBlasters took an early lead, but a late goal helped @MumbaiCityFC rescue a point tonight.
— Indian Super League (@IndSuperLeague) October 5, 2018
More videos: https://t.co/mrtZlxvu6i #ISLRecap #LetsFootball #FanBannaPadega #KERMUM pic.twitter.com/OBNmt66ZRX
এদিন মুম্বই সিটি এফসির আক্রমণভাগও ব্যর্থ হয়। রাফায়েল বাস্তোসকে এই ম্যাচে হাতে গোনা বল পায়ে ছুঁইয়েছেন। অপর স্ট্রাইকার সেনেগালি সোগৌ আবার একর পর এক সুযোগ নষ্ট করেছেন। এমনকী কেরল গোলরক্ষক ধীরাজ সিংয়ের হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়া একটি বল অবধি বক্সের ভেতর থেকে গোলে পাঠাতে তিনি ব্যর্থ হন। এদিনের খেলা কিন্তু দেখিয়ে দিল কোস্তাকে এখনও প্রচুর খাটতে হবে। বিশেষ করে দলের ফিটনেসের উপর জোর দিতে হবে।
অপরদিকে কেরল ব্লাস্টার্স ভাল খেলেও লিড ধরে না রাখতে পারার খেসারত দিল। প্রথমার্ধেই ম্যাচের ২৪ মিনিটে হোলিচরণ নার্জারির গোলে এগিয়ে গিয়েছিল তারা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে কিন্তু ব্যবধান বাড়ানোর বেশ কয়েকটি ভাল সুযোগ পেয়েছিল তারা। কিন্তু তা কাজে লাগাতে না পারায় মরসুমেই প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পাওয়া হল না তাদের।
তাদের গতিশীল দুই উইঙ্গার সেইমিনলেন ডঞ্জেল ও হোলিচরণ নার্জারি দুজনেই মুম্বই ডিফেন্সকে ব্যতিব্য়স্ত করে রেখেছিলেন। তাদের গোলটিও আসে এই দুজনের কারণেই। ক্রামারেভিচ পাস দিয়েছিলেন ডঞ্জেলকে। আগে থেকেই বক্সের উদ্দেশ্যে দৌড় শুরু করেছিলেন নার্জারি। ডঞ্জেল বল বাড়ান তাঁর উদ্দেশ্যে। গোল করতে ভুল করেননি তিনি।
.@SandeshJhingan was a rock at the back for @KeralaBlasters tonight! He's the Hero of the Match.#LetsFootball #KERMUM #FanBannaPadega pic.twitter.com/6dUteI9jaU
— Indian Super League (@IndSuperLeague) October 5, 2018
কেরলের দুই স্ট্রাইকার পপ্লাতনিক ও স্টোজানোভিচের মধ্যেও ভাল বোজাপড়া দেখা গিয়েছে। তবে গোলে তরুণ ধীরাজজ সিং কতটা যথাযথ তা নিয়ে ভাবতে হবে ডেভিড জেমসকে। গত বছর অনুর্ধ ১৭ বিশ্বকাপে ভারতের গোলকিপার ছিলেন ধীরাজ। আইএসএল খেলার অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও উন্নত করবে এনি কোনও সংশয় নেই। কিন্তু তিনি কী এখনই এই পর্যায়ে খেলার জন্য তৈরি?
বল সেভ করার ক্ষেত্রে তাঁর দক্ষতার অভাব নেই। কিন্তু একজন অসরাউন্ড গোলকিপার তিনি এখনও নন। এদিনের ম্য়াচে অনেক সময়ই বক্সে ভেসে আসা বল ধরতে গিয়ে তিনি প্রায় মুম্বই দলকে গোল উপহার দিয়ে দিয়েছিলেন। আবার এগিয়ে এসে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে বলের দখল হারিয়েও দলকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। তবে এই ড্র সত্ত্বেও আপাতত কেরল লিগ তালিকায় সবার উপরে রয়েছে।