বলিউডের সঙ্গে আড়ি আইএসএল'য়ের, এবার বিনোদনের ফোকাসে শুধুই ফুটবল
আইএসএল ২০১৮-১৯ 'এ কোন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থাকবে না। আয়োজকরা এখন থেকে সিরিয়াস ফুটবলের উপর ফোকাস রাখতে চান।
আর কয়েকদিন বাদেই শুরু হতে চলেছে পঞ্চম আইএসএল। তার আগে জানিয়ে দেওয়া হল এবার আর থাকবে না কোনও জাঁকজমকওয়ালা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। উদ্য়োক্তারা মনে করছেন পাঁচ বছরে আইএসএল অনেকটাই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠেছে। এখন ফোকাসটা হইহুল্লোরের থেকে বেশি রাখা উচিত ভাল ফুটবল খেলার উপরে।
শুরুর কয়েক বছর বাজার ধরার জন্য আইএসএল-এর টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বলিউড তারকাদের এনে ফিল্মি পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানের মতো নাচ-গানের আসর বসানো হত। প্রথম বছর এই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন প্রিয়াঙ্কা চোপরা। এর পরের বছরগুলোয় এসেছেন সালমান খান, আলিয়া ভাট, ক্যাটরিনা কাইফ।
এই তারকাদের নাচ-গান দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে, কিন্তু তাদের মাঠে খেলা দেখতে আসতে দেখা যায় না। তাই পুটবলের সঙ্গে দূরদূরান্ত অবধি ডোগ না থাকা বলিউড তারকাদের এনে লাভের লাভটা কী হচ্ছে, প্রথম থেকেই এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একদিকে এই মঞ্চকে ফিল্মি তারকারা তাদের নতুন ফিল্মের প্রচারে ব্যবহার করেন, আবার অন্যদিকে এই অনুষ্ঠান সত্যিকারের ফুটবল ভক্ত, ফুটবলার, সাপোর্ট স্টাফদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। গুরুত্ব হারায় টুর্নামেন্ট।
এতদিন উদ্য়োক্তাদের যুক্তি ছিল বলিউড তারকাদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে নতুন জন্ম নেওয়া টুর্নামেন্টটিকে আরও বেশি লোকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই ওই অনুষ্ঠান করা হত। কিন্তু এখন ৪ পেরিয়ে ৫-এ পা রাখার আগে তাঁরা মনে করছেন, এবার সময় হয়েছে ভাল ফুটবলকেই টুর্নামেন্টের মূল আকর্ষণ করে তোলার।
এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গত বছর থেকেই। আইএসএল-এর গতবারের সংস্করণ থেকেই দুমাস থেকে বাড়িয়ে টুর্নামেন্টটিকে ৫ মাসের করা হয়েছে। প্রথম তিন বছরে দুমাসের স্বল্প সময়ে ফুটবল বিশ্বের অনেক বড় তারকা এসেছিলেন। তাঁদের কাছে এই টুর্নামেন্ট ছিল অনেকটা ছুটি কাটানোর মতো। সেই বড় নামের আকর্ষণে অনেক দর্শক মাঠে ভিড় জমাতেন ঠিকই, কিন্তু তাতে ভারতীয় ফুটবলের বিশেষ উন্নতি হয়নি।
গত বছর থেকে ৫ মাসের টুর্নামেন্ট হওয়ায় প্রতি দলে বড় নামের প্রাক্তন তারকার বদলে সিরিয়াস ফুটবলারের সংখ্যা বেড়েছে। দলের সংখ্য়াও বেড়ে ১০ দলের টুর্নামেন্ট হয়েছে। সারা বছর ধরেই দলগুলির উপস্থিতি অনুভব করা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বলিউডি নাচগানে সম্বৃদ্ধ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্তকে সমর্থনই করছেন প্রাক্তন ফুটবলার, ফুটবল বিশেষজ্ঞ থেকে ফুটবলভক্ত - সব মহলই।