আইএসএল ২০১৮: জ্বলে উঠলেন সুনীল! ঘরের মাঠে পুনেকে হারিয়ে একনম্বরে উঠে গেল বেঙ্গালুরু এফসি
আইএসএল ২০১৮-এর এফসি পুনে সিটি বনাম বেঙ্গালুরু এফসি ম্য়াচের প্রতিবেদন।
সোমবার আইএসএল ২০১৮র ম্যাচে, পুনের বালেওয়ারি স্টেডিয়ামে এফসি পুনে সিটির মুখোমুখি হয়েছিল বেঙ্গালুরু এফসি। প্রথমার্ধে ৩ মিনিটের ব্যবধানে সুনাল ছেত্রীর জোড়া গোল (৪১' ও ৪৬') ও দ্বিতীয়ার্ধে মিকু (৬৪')-র করা আরও একটি গোলে পুনে সিটিকে তাদের ঘরের মাঠে ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে চলে গেল বেঙ্গালুরুর দলটি।
এদিন আইএসএল-এ পুনের পক্ষে এই মরসুমের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন মার্সেলিনহো। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে হারের পর পুনে দলে আরো একটি পরিবর্তন করেন মিগেল এঞ্জেল পর্তুগাল। লেফট ব্যাকে এদিন ফানাইয়ের বদলে নামান সাহিল পানওয়ারকে।
অপরদিকে বেঙঅগালুরুর হয়ে এই মরসুমে প্রথমবার মাঠে নামেন ও বেঙ্গালুরুর হয়ে দিমাস দেলগাদোও। এদিন তাঁর ৫০তম আইএসএল ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন হরমোনজোৎ খাবরা। তাঁকে এদিন একেবারে একক স্ট্রাইকার হিসেবে খেলা মিকুর পিছনে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলান কুয়াগ্রাত।
ম্যাচে কিন্তু প্রথম ইতিবাচক গোলের সুযোগ এসেছিল পুনে সিটির সামনেই। ম্যাচের ১৯ মিনিটের মাথায় বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রিকিক পেয়েছিল তারা। প্রথম ম্যাচে নেমেই ফ্রিকিক থেকে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন মার্সেলিনহো। কিন্তু বেঙ্গালুরু গোলকিপার গুরপ্রীত ঝাঁপিয়ে পড়ে দলের পতন রোধ করেন।
বেঙ্গালুরু হাই লাইনে খেললেও পুলনে সিটির বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। বস্তুত খেলার প্রথম ৪০ মিনিটে দুপক্ষের কোনও গোলকিপারই সেভাবে পরীক্ষার মুখে পড়েননি।
কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ পাঁচ মিনিটেই হঠাত করে জ্বলে ওঠেন বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। ডানপ্রান্ত থেকে বক্সের ম্ধ্যে তাঁর জন্য ক্রস তুলেছইলেন উদান্ত সিং। কিন্তু সে যাত্রায় একের বিরুদ্ধে এক অবস্থায় বিশাল কাইথকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন ৩৪ বছরের সুনীল।
কিন্তু সেই ব্যর্থতা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মুছে ফেলেন তিনি। দেলগাদোর তোলা লঙ বল ধরে তিনি তাঁর মার্কার সার্থক গলুইকে পেরিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন। এইবারে আর গোল করতে ভুল করেননি ভারতের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
এর ঠিক দু মিনিট বাদেই আরও একটি গোল করে যান সুনীল। পুনের দুই ফুটবলারে নিজের দিকে টেনে সুনীলের জন্য বল সাজিয়ে দিয়েছিলেন মিকু। সুনীল গতিতে ফের গলুইকে পরাস্ত করে গোলোর ফাঁক খুঁজে বল জালে জড়িয়ে দেন।
প্রথমার্ধে শেষে বেঙ্গালুরুর যে খেলা দেখা গিয়েছিল দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কিন্তু তারা সেই ছন্দটা হারিয়ে ফেলেছিল। ফের একবার দুই দের খেলা আটরকে গিয়েছিল মাঝমাঠেই। দুই গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় দলে পুনের দলে পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন কোচ পর্তুগাল। দিয়েগো কার্লোস ও শঙ্কর শাম্পিঙ্গিরাজকে নামান তিনি। কিন্তু মার্টিন দিয়াজকে তুলে নেোয়ায় পুনে সিটির রক্ষণ দুর্বল হয়ে পড়ে।
পুনের রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগে গোল করে যান মিকু। পিছন থেকে অ্যালবার্ট সেরান লম্বা করে একটি বস তুপলেছিলেন। সেই বল ধরে মিকু শক্তিতে পানওয়ারকে পরাস্ত করেন। আগেই একটি কার্ড দেখায় সম্ভবত পানওয়ার কড়া ট্যাকল করতে সাহস পাননি। বক্সের ঠিক মাথা থেকে গোলের ডানদিকের কোনায় বল রেখেছিলেন মিকু। কাইথের ধরাছোঁয়ার মধ্যে ছিল না।
৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে স্বাভাবিকভাবেই ঝিমিয়ে পড়েছিল পুনে দল। কিন্তু মার্সেলিনহো একক দক্ষতায় শেষের দিকে কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু এদিন বেঙ্গালুরুর তিনকাঠির নিচে অনবদ্য খেলেন ভারতের জাতীয় দলের গোলকিপার গুরপ্রীত।
সুনীলও ফ্রিকিক থেকে তাঁর হ্যাট্রিক করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর শট বারে লেগে ফিরে এলে তা তালুবন্দি করতে ভুল করেননি কাইথ।
৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে তারা লিগ টেবিলে সবার উপরে চলে গেল। পয়েন্ট একই হলেও গোলপার্থকে দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেল নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি। বেঙ্গালুরু এরপর আসবে কলকাতায় এটিকের পরীক্ষা নিতে। এফসি পুনে সিটি তাদের প্রথম ম্যাচ ড্র করলেও পরের দুটিতেই হারল। এরপর তাদের খেলা শক্তিশালী এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে।