আইএসএল ২০১৮-১৯, এই মরসুমে কেমন দল হল জামশেদপুর এফসির, জেনে নিন তাদের শক্তি-দুর্বলতা
জেনে নিন আইএসএল ২০১৮-১৯ মরসুমে, জামশেদপুর এফসির কোচ, নতুন সাইনিং, উল্লেখযোগ্য সাইনিং এবং শক্তি ও দুর্বলতা সঙ্গে সম্পূর্ণ স্কোয়াড সম্পর্কে।
গত মরসুমেই প্রথমবার ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল)-এ অংশ নিয়েছিল জামশেদপুর এফসি। প্রথমবারেই তারা প্রায় প্লেঅফে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি পাঁচেই আটকে যায় তারা। টুর্নামেন্ট জুড়ে অসাধারণ খেলেছিলেন গোলরক্ষক সুব্রত পাল। যাক জন্য তারা ১৮ ম্য়াচে মাত্র ১৬ গোল করেও অনেকটা উঠে গিয়েছিল।
পঞ্চম মরসুমে তারা হইচই ফেলে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি টিম কাহিলকে দলে নিয়ে। কাহিলের পা থেকেই গোলের অভাব মিটিয়ে তাদের দ্বিতীয় মরসুমে প্লেঅফের সরণীতে পৌঁছতে চাইছে তারা। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে অভিযান শুরু করছে তারা। তার আগে দেখে নেওয়া যাক এবার তারা কীরকম দল গড়ল। কোথায় তাদের শক্তি, কোথায়ই বা দুর্বলতা।
|
কোচ
অভিষেক মরসুমে জামশেদপুর খেলেছিল আইএসএল-এর অভিজ্ঞ কোচ স্টিভ কপেলের অধীনে। শুরুর মরসুমটা খারাপ না গেলেও এবার ফিনিশিং লাইন পার করার লক্ষ্যে তারা এই মরসুমে কোচ হিসেবে নিয়োগ করেছে স্প্যানিশ সেজার ফেরান্দোকে। প্রাক্তন অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ কোচের ঝুলি কিন্তু অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। ভারতের ফুটবল সম্পর্কে আগে তেমন একটা ধারণা না থাকলেও ফেরান্দো এর আগে মালয়েশিয়া সুপার লিগে জোহর দারুল তাজিম ক্লাবে কোচিং করানোর সুবাদে এশিয় ফুটবল নিয়ে তাঁর ধারণা রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা আইএসএল-এ কাজে আসতে পারে।
|
নতুন সাইনিং
ভারতীয়: শুভাষিশ রায়চৌধুরী, সঞ্জয় বালমুচু, রাজু গায়কোয়াড়, প্রতীক চৌধুরী, ধনচন্দ্র সিং, মাইকেল সুসাইরাজ
বিদেশী: টিম কাহিল, কার্লোস কালভো, সের্গিও সিদোনচা, মারিও আর্কেস, পাবলো মোরগাদো।
|
উল্লেখযোগ্য সাইনিং
গত মরসুমের ৫জন বিদেশীকে বদলেছে জামশেদপুর। নতুন বিদেশীদের মধ্যে অবশ্যই সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলেন অস্ট্রেলিয়ান টিম কাহিল। বয়স ৩৮ হলেও এই বছরও তিনি বিশ্বকাপ খেলেছেন। একসময় ইপিএল-এর ক্লাব এভার্টনেও খেলতেন এই স্ট্রাইকার। আইএসএল-এর এই সিজনের সবচেয়ে হাই প্রোফাইলিং সাইনিং তিনিই। কাহিলের পাশাপাশি তবে জামশেদপুরের দলে আছেন স্প্যানিশ ক্লাব ভিয়ারিয়াল অ্যাকাডেমি থেকে ফুটবলের পাঠ নেওয়া মারিও আর্কেস-ও।
ভারতীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে জেএফসি, রাজু গায়কোয়াড়, প্রতীক চৌধুরী এবং ধনচন্দ্র সিং-এর মতো ডিফেন্ডারদের সই করিয়েছে। পাশাপাশি চেন্নাই সিটি এফসি থেকে আসা মাইকেল সুসাইরাজও গত মরসুমে আই-লিগে খুবই ভাল খেলেছিলেন।
|
শক্তি এবং দুর্বলতা
জেরি মাওয়াইমিংথাঙ্গা, বিকাশ জাইরু, মাইকেল সোসাইরাজের মতো ভারতীয় সঙ্গে কার্লোস কালভো ও সের্গিও সিদোনচার মতো বিদেশী - নিঃসন্দেহে উইংপ্লেই এইবার জামশেদপুর এফসির শক্তি হতে চলেছে। ফাঁকা জায়গা ব্যবহার করে দ্রুত আক্রমণে উঠে এসে তারা বিপক্ষের বক্সে ত্রাস সৃষ্টি করতে পারেন।
দুই উইং দারুণ সচল হলেও মাঝমাঠে কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে খএলার লোকের অভাব রয়েছে। শুধুমাত্র মারিও আর্কেস এবং মেমো ছাড়া একজনও প্রতিষ্ঠিত খেলোয়াড় নেই এই জায়গায়। একজন অভিজ্ঞ ভারতীয় মিডফিল্ডারের অভাব তাদের ভোগাতে পারে।
গত বছর ডিফেন্সই জামশেদপুরের শক্তি ছিল। কিন্তু এই বছর সেন্ট্রাল ডিফেন্স থেকে আনাস এদাথোড়িকা এবং আন্দ্রে বাইকির মতো দুই বড় খেলোয়াড়কে হারানোয় তাদের ডিফেন্স কিন্তু এইবার বেশ নড়বড়ে। বদলি হিসেবে দলে আসা রাজু গায়কোয়াড় ও সঞ্জয় বালমুচু কিন্তু গত মরসুমে নিজ নিজ ক্লাবের প্রথম একাদশে নিয়মিত ছিলেন না। ইস্পাত-মানবদের ডিফেন্সে তিরি-কেই একমাত্র ইস্পাত-কঠিন মনে হচ্ছে।
|
সম্পূর্ণ স্কোয়াড
গোলরক্ষক: সুব্রত পাল, রফিক আলি সর্দার, সুভাশিষ রায় চৌধুরী
ডিফেন্ডার: সঞ্জয় বালমুচু, রাজু গায়কোয়াড়, তিরি, প্রতীক চৌধুরী, রবিন গুরুং, ধনচন্দ্র সিং, ইয়ুমনাম রাজু, করণ আমিন
মিডফিল্ডার: মারিও আর্কেস, পাবলো মোর্গাদো, বিশাল দাস, জেরি মাওয়াইমিংথাঙ্গা, মেমো, মোবাশির রহমান, কার্লোস কালভো, বিকাশ জাইরু
স্ট্রাইকার: টিম কাহিল, গৌরব মুখি, সের্গিও কিডোনচা, সুমিত পাসি, ফারুখ চৌধুরী