আইএসএল ২০১৮: ঘরের মাঠে এফসি গোয়াকে উড়িয়ে তাদের সবচেয়ে বড় জয় তুলে নিল জামশেদপুর
আইএসএল ২০১৮-এর জামশেদপুর এফসি বনাম এফসি গোয়া ম্য়াচের প্রতিবেদন।
বৃহস্পতিবার নিজেদের ঘরের মাঠে আইএসএল-এর সবচেয়ে ধারকাবাহিক দল এফসি গোয়াকে ৪-১ গোলে হারিয়ে আইএসএল-এ তাদের সবচেয়ে বড় জয় তুলে নিল জামশেদপুর এফসি। মাইকেল সুসাইরাজের জোড়া গোল (১৭' ও ৫০') ও মেমো (৭৭') ও সুমিত পাসি(৭৯')-র গোলে জামশেদপুরের মাঠে একপ্রকার উড়ে গেল গোয়ার দলটি। তাদের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন মুর্দাতা (৩৩')।
কেহরল ব্লাস্টার্স-এর সঙ্গে আগের ম্যাচে ২-২ গোলে ড্র করেছিল জামশেদপুর। এদিন সেই দলের ৫ খেলোয়াড়কে বদলে দিয়েছিলেন জামশেদপুরের কোচ সিজার ফেরান্দো। টিন কাহিল, ফারুখ চৌধুরি, রাজু ইয়ুমনাম, ধনচন্দ্র ও সঞ্জয় বালমুচুর বদলে এদিন খেলেন গৌরব মুখি, মোর্গাদো, রবিন গুরুঙ বিকাশ জাইরু ও প্রতীক চৌধুরি।
অন্যদিকে কার্ড সমস্যায় এধিনের ম্যাচে ছিলেন না গোয়ার গোলমেশিন ফেরান কোরোমিনাস। তাঁর বদলে এদিন তাদের আক্রমণে খেলেন মিগেল পালাঙ্কা।
ম্যাচের একেবারে শুরু থেকেই প্রবল আক্রমণাত্মক ভঙ্গীতে শুরু করেছিল জামশেদপুর। চার মিনিটের মাথাতেই ঠিক পেনাল্টি বক্সের বাইরে সুসাইরাজকে ফাউল করেন মৌর্তাদা ফল। সের্গিও সিদোনচা ফ্রিকিক থেকে হবৃবল গোলে রাখলেও সেই যাত্রা দলের পতন রোধ করেন গোয়ার তরুণ গোলরক্ষক মহম্মদ নওয়াজ।
এরপর আবার ৯ মিনিটের মাথাতেই বাঁপ্রান্ত থেকে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন গৌরব মুখি। চমৎকার ড্রিবলে সেরিটন ফার্নান্দেজকে পেরিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাইরে মারেন।
জামশেদপুরের গোলের মুখ খোলে ১৭তম মিনিটে। সিদেনচার কর্ণনার কিক থেকে হেড করে বলটি নামিয়ে দেন প্রতীক চৌধুরির পায়ে। প্রতিক পাস দেন সুসাইরাজকে। সেখান থেকে গোল করতে ভুল করেননি সুসাইরাজ।
রক্ষণাত্মক ভঙ্গীতে শুরু করলেও ধীরে ধীরে খোলস ছাড়িয়ে আক্রমণে উঠতেশুরু করেছিল এফসি গোয়া। ২৬ মিনিটে তাদের সামনে প্রথম গোলেরস সুযোগ এসেছিল। আহমেদ জহৌহের লম্বা বল বাড়িয়েছিলেন পালঙ্কার উদ্দেশ্যে। তিনি বল বাড়ান বৌমৌস-কে। বক্সের বাইরে থেকে তিনি শট নেন। কিন্তু বল পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়।
তবে জামশেদপুরের প্রথম গোলটি গোয়া শোধ দেয় ৩২তম মিনিটে। বৌমৌসের ফ্রিকিক থেকে হেডে বল জামশেদপুরের জালে জড়িয়ে দেন মৌর্তাদা ফল। সমতা ফেরানোর পরই গোয়া তাদের স্বাভাবিক আক্রমণাত্মক খেলায় ফেরে। এই সময় তারা জামশেদপুরের রক্ষণে ভাল চাপ তৈরি করেছিল। বিরতিতে ম্যাচের ফল ছিল ১-১।
কিন্তু বিরতির পর খেলা শুরু হওয়ার পরই সুসাইরাজের প্রায় একক প্রচেষ্টায় করা অসাধারণ গোলের সুবাদে দ্রুতই ফের এগিয়ে যায় জামশেদপুর। নিজেদের অর্ধে সিদোনচার সঙ্গে ওয়ান-টু পাস খেলেন তিনি। এরপরই বাঁপ্রান্তে লম্বা থ্রু বল বাড়ান সিদোনচা। গতিতে ফার্নান্দেজকে টপকে যান সুসাইরাজ। বক্সে ঢুকে ঠান্ডা মাথায় এগিয়ে আসা নওয়াজের মাথার উপর দিয়ে হাল্কা চিপ করে গোল করে যান তামিলনাড়ুর ফুটবলারটি।
দ্বিতীার্ধে খেলা যত এগোয় গোয়ার আক্রমণে কোরোমিনাসের অভাবটা বড় হয়ে দেখা দেয়। আক্রমণেক ধার বাড়াতে লেনি রড্রিগেজকে তুলে ব্র্যান্ডন ফার্নান্দেজকে নামি.য়েছিলেন লোবেরা। কিন্তু তিনিও বিশেষ কিছু করতে পারেননি।
অপরদিকে ৭৭ মিনিটে জামশেদপুরের হয়ে ব্যবধান বাড়ান মেমো। কার্লোস কালভোর কর্নার কিক পা্রাথমিকভাবে গোয়ার রক্ষণ রপখে দিয়েছিল। কিন্তু ফিরতি বস বক্সের বাইরে মেমোর পায়ে গেল, তিনি সেখান থেকেই অনবদ্য শটে গোল করেন।
এর এক মিনিট পরেই গোয়ার কফিনে শেষ পেরেকটি পোঁতেন সুমিত পাসি। কালভোর তোলা নিচু ক্রস নওয়াজ মিস করলে বল যায় পাসির কাছে।ফার্সট টাচেই গোল করেন ভারতের জাতীয দলের এই তরুণ ফরোয়ার্ড। এরফলে ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে জামশেদপুর এফসি লিগ তালিকায় ২ নম্বরে উঠে গেল। গোয়া একধাপ নেমে তিনে থাকল।