আইএসএল ২০১৮-১৯, এই মরসুমে কেমন দল হল মুম্বই সিটি এফসির, জেনে নিন তাদের শক্তি-দুর্বলতা
জেনে নিন আইএসএল ২০১৮-১৯ মরসুমে, মুম্বই সিটি এফসির কোচ, নতুন সাইনিং, উল্লেখযোগ্য সাইনিং এবং শক্তি ও দুর্বলতা সঙ্গে সম্পূর্ণ স্কোয়াড সম্পর্কে।
মুম্বই সিটি এফসি ২০১৭-১৮ আইএসএল মরসুমটা মোটেই ভাল যায়নি। ১০ দলের টুর্নামেন্টে তারা শেষ করেছিল ৭ নম্বরে। সেই স্মৃতি ঝেড়ে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এইবার তারা বেশ কিছু আকর্ষণীয় ফুটবলারকে সই করিয়েছে।
মুম্বই সিটি এফসি কী এই মরসুমে তাদের ট্রফি খরা কাটিয়ে উঠতে পারবে? প্রাক মরসুমের ম্য়াচগুলির ফলাফল বলছে তারা অবশ্যই কাপ জেতার অন্যতম শক্তিশালী দাবিদার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে মুম্বই ফুটবল এরিনায় নামার আগে দেখে নেওয়া যাক এই মরসুমে তাদের দলের শক্তি ও দুর্বলতা।
রণবিজয় সিং
সেনার ছাত্র ছিলেন। চিরকালই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের প্রতি ভালবাসা ছিল। রোডিজ-এর প্রথম সিজনেই অংশ নেন এবং চ্যাম্পিয়ন হন। এর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা, এমটিভি ভিজে। সম্প্রতি বলিউডেও ভাগ্যটা যাচাই করে দেখছেন। অ্যাকশন রিপ্লে, লন্ডন ড্রিমস-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
|
কোচ
পরপর দুই মরসুম মুম্বই ভরসা রেখেছিল কোস্টা রিকান কোচ আলেকজান্ডার গিমারেসের উপর। কিন্তু দুবারই কাজের কাজ করে দেখাতে পারেননি তিনি। তাই এইবার তাঁকে বিদায় জানিয়ে মুম্বই সিটি দলের দায়িত্ব তুলে দিয়েছে পর্তুগীজ কোচ হর্হে কোস্তার হাতে। একসময় পর্তুগালের এক নম্বর ক্লাব এফসি পোর্টোয় খেলতেন হর্হে। পর্তুগিজ ক্লাব ব্রাগা এবং গ্যাবনের জাতীয় দলকে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।
ইন্ডিয়ান সুপার লিগে ক্রমবর্ধমান স্প্যানিশ কোচদের ভিড়ে, তিনি খেলার শৈলীতে বৈচিত্র আনবেন আশা করা হচ্ছে। তিনি কিন্তু ঘোর বাস্তববাদী। ভাল খেলা টেলা নয়, তাঁর কাছে ফলাফলই গুরুত্বপূর্ণ। যে করেই হোক জিততে চান তিনি। থাইল্যান্ডে প্রাকমরসুম অনুশীলন ম্যাচে ৪টি খেলে তিনটি জিতেছে তাঁর দল। গোল করেছে ১৪টি!
কপিল শর্মা
কপিল শর্মা এই নামটা এখন অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি নাম। তাঁর কমেডি নাইট উইথ কপিল শো টি ভারতীয় টেলিভিশনে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। এই কপিল কিন্তু আসলে ২০০৭-এ গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ-এ চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। তারপর নিজেকে গ্রুম করে একেবারে ভোলবদল।
|
নতুন সাইনিং
ভারতীয়: রবি কুমার, কুনাল সাওয়ান্ত, সুভাশিষ বসু, শৌভিক ঘোষ, শৌভিক চক্রবর্তী, আনোয়ার আলি, বিক্রমজিৎ সিং, মহম্মদ রফিক, মিলন সিং, বিপিন সিং, রেনিয়ের ফার্নান্দেজ, অ্যালেন ডেওরি, ভিগনেশ দক্ষিণামূর্তি।
বিদেশী: মার্কো ক্লিসুরা, মাতিয়াস মিরাবাহে, পাওলো মাশাদো, রাফায়েল বাস্তোস, মোদৌ সোগৌ, আর্নল্ড ইসোকো।
দিব্যাঙ্কা ত্রিপাঠী
হিন্দি টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী দিব্যাঙ্কা ত্রিপাঠী প্রথম চোখে পড়েন জি টিভির অভিনয় সংক্রান্ত রিয়্যালিটি অনুষ্ঠান জিনে স্টার কী খোঁজ থেকে। এর পর থেকেই একের পর এক ধারাবাহিকে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করে সবার মন জয় করে নিয়েছেন তিন।
|
উল্লেখযোগ্য সাইনিং
একমাত্র লুচিয়ান গোইয়ান ছাড়া বাকি সব বিদেশীদের এবার বদলে ফেলেছে মুম্বই সিটি। এবার যেসব বিদেশীদের তারা সই করিয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলেন পর্তুগিজ মিডফিল্ডার পাওলো মাশাদো। এফসি পোর্তো এবং অলিম্পিয়াকোসের মতো বড় ক্লাবে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। এছাড়া ফরোয়ার্ডে মোদৌ সোগৌ এবং রাফায়েল বাস্তোসও বাড়তি শক্তি য়োগ করবেন বলে আশা করা যায়।
মুম্বই সিটি এফসির দলে কিন্তু এই মরসুমে বেশ কয়েকটি বড় ভারতীয় নামও যুক্ত হয়েছে। সাফ কাপে ভারতীয় অনুর্ধ-২৩ দলের অধিনায়ক শুভাশিষ বসু এসেছেন দলে। এছাড়া গত মরসুমে ভাল খেলা - শৌভিক চক্রবর্তী, শৌভিক ঘোষ, রেনিয়ের ফার্নান্ডেজ, ভিগনেশ দক্ষিণামূর্তির মতো খেলোয়াড়ও রয়েছেন এবার মুম্বইয়ের ফ্র্যাঞ্চাইজিতে।
বিশাল কারওয়াল
বাণিজ্যিক বিমানে পাইলটের জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন বিশাল। এরই মাঝে এমটিভি রোডিজ ৪-এ আসা। এরপর এমটিভির স্প্লিটসভিলা-র চ্যাম্পিয়ন হন বিশাল। তারপর থেকেই এমটিভিতে ভিজে হিসাবে কাজ। এবং এখন তো বিশাল ছোটপর্দার জনপ্রিয় মুখ। শ্রী কৃষ্ণ থেকে খলনায়ক অভিনয়ের বহুমুখী প্রতিভা ইতিমধ্যে দেখিয়েছেন তিনি।
|
শক্তি এবং দুর্বলতা
এবারের মুম্বই দলের মিডফিল্ড অত্যন্ত শক্তিশালী। মাশাদো, মিরাবাহে-এর মতো বিদেশীরা যেমন রয়েছেন, আছেন সেহনাজ সিং, মহম্মদ রফিক, রেনিয়ের ফার্নান্ডেজ, ভিগনেশ দক্ষিণামূর্তিদের মতো প্রতিভাবান ভারতীয়রাও।
দুর্বলতা রয়েছে তাদের ডিফেন্সে। লুচিয়ান গোইয়ানের পাশে খেলার জন্য তারা সার্বিয়ান ডিফেন্ডার মার্কো ক্লিসুরাকে এনেছে। কিন্তু তাদের পাশে ভারতীয় খেলোয়াড় বিক্রমজিৎ সিং ও আনোয়াড় আলি মোটেই মানানসই নন।
আয়ুষ্মান খুরানা
বলিউডের নাম করা স্টার ভিকি ডোনার খ্যাত আয়ুষ্মান খুরানারও পথ চলা শুরু রোডিজ-এর হাত ধরে। রোডিজ ২ -এর চ্যাম্পিয়ন আয়ুষ্মান। কোকো ভি পপ স্টারেও গায়ক হিসাবে অংশ গ্রহণ করেছিলেন তিনি। এরপর ছোট পর্দায় অভিনয়। জীবনের মোড় ঘুরল সুজিত সরকারের ভিকি ডোনার ছবিতে অভিনয় করে।
|
সম্পূর্ণ স্কোয়াড
গোলরক্ষক: অমরিন্দর সিং, কুনাল সাওয়ান্ত, রবি কুমার
ডিফেন্ডার: আনোয়ার আলি, বিক্রমজিৎ সিং, দাভিন্দর সিং, লুচিয়ান গোইয়ান, মার্কো ক্লিসুরা, শৌভিক চক্রবর্তী, শৌভিক ঘোষ, শুভাশিষ বোস
মিডফিল্ডার: রেনিয়ের ফার্নান্ডেজ, মাতিয়াস মিরাবাহে, মিলন সিং, আর্নল্ড ইসোকো, সেহনাজ সিং, ভিগনেশ দক্ষিনামুর্তি, পাওলো মাশাদো, মহম্মদ রফিক, বিপিন সিং, সঞ্জু প্রধান
ফরোয়ার্ড: মোদৌ সোগৌ, অ্যালেন ডেওরি, প্রাঞ্জল ভূমিজ এবং রাফায়েল বাস্তোস
ভিজে বানি
বানিরও শুরুটা রোডিজ ৪-এর হাত ধরে। বানি ফাইনালিস্ট ছিলেন তবে রানার আপ হয়েছিলেন। সে অর্থে বড়পর্দায় নাম না করলেও সঞ্চালক হিসাবে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছেন বানি।
ভারতী সিং
২০০৮ সালে গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জে সেকেন্ড রানার আপ হয়েছিলেন ভারতী। এর পর থেকেই বিভিন্ন কমেডি শোতে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। ঝলক দিখলা যা ৬-এও প্রতিযোগী ছিলেন তিনি। অক্ষয় কুমারের খিলাড়ি ৭৮৬ ছবিতে অভিনয়ও করেছেন।
বিন্নি শর্মা
ডান ইন্ডিয়া ডান্স-এ গীতা কাপুরের ঘরানার প্রতিযোগী ছিলেন বিনি। ফাইনালেও পৌঁছেছিলেন। এরপর থেকে ছোটপর্দায় একের পর এক কাজ করছেন তিনি। সম্প্রতি জি টিভিতে হ্যালো প্রতিভা ধারাবাহিকের প্রতিভার চরিত্রে অভিনয় করছেন বিনি।
ময়াঙ্ক চ্যাং
ইন্ডিয়ান আইডল সিজন ৩-এ কলকাতা অডিশন থেকে সিলেক্ট হয়েছিলেন ময়াঙ্ক। টপ ৫ পর্যন্ত গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর নডরকাড়া ব্যাক্তিত্বের ফলে পরের বছরই ইন্ডিয়ান আইডল সঞ্চালনার সুযোগ পান তিনি। বদমাশ কোম্পানি, ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।
রাঘব জুয়েল
রাঘব 'কিং অফ স্লোমোশন' বলেই অধিক পরিচিত। এই নামটা এসেছে ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স সিজন ২ থেকেই। এরপরে ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স লিটল মাস্টার-এ খুদে নাচিয়েদের মেন্টরিং করেছেন। সোনালি কেবল ছবিতে একটি ছোট এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। এছাড়াও এবিসিডি ২ ছবিতেও অভিনয় করছেন।
সুমেধ মুদগলকার
ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স থেকেই এই তারকার আত্মপ্রকাশ। এর পর চ্যানেল ভি দিল দোস্তি ডান্স ধারাবাহিকে অভিনয় করা। বর্তমানে চক্রবর্তী অশোক সম্রাট ধারাবাহিকে তরুণ খলনায়ক রাজকুমার সুসীমের ভূমিকায় অভিনয় করছেন তিনি।
ফায়সল খান
ফায়সল খান ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স লিটল মাস্টার-এর চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। মহারানা প্রতাপের ছোটবেলায় অভিনয় করে তিনি সবাইকে মন্ত্রমুগ্ধ করে দিয়েছেন।
ঋত্বিক ধনজানি
ঋত্বিককে ছোটপর্দায় অনেকেই দেখেছেন, তার অভিনয়ে অনেকেই মুগ্ধ হয়েছেন তবে অনেকেই জানেন না ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স ১-এর প্রতিযোগী ছিলেন ঋত্বিক।
অরিজিৎ সিং
ফেম গুরুকুল-এ প্রথম আত্মপ্রকাশ এক শান্ত তরুণ গায়কের। সবার প্রশংসা পাওয়া সত্ত্বেও অনুষ্ঠানে জিততে পারেননি অরিজিৎ। তারপর বহু বছরের অন্তরাল। পরেরটা ইতিহাস।
শ্রেয়া ঘোষাল
সারেগামা ১৯৯৯ অনুষ্ঠানে ছোট্ট শ্রেয়ার গান শুনে মুগ্ধ হয়েছেন বহু পণ্ডিত ও সঙ্গীত বিশেষজ্ঞরা। মুগ্ধ হয়েছিলেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সোনু নিগম। তারপর থেকে ফিরে তাকাতে হয়নি শ্রেয়াকে।