প্রয়াত কিংবদন্তি পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতীয় ফুটবলে শোকের ছায়া
প্রয়াত কিংবদন্তি পিকি বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতীয় ফুটবলে শোকের ছায়া
দীর্গ রোগভোগের পর প্রয়াত হলেন ভারতের কিংবদন্তি ফুটবল ব্যক্তিত্ব প্রদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বা পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার লেজেন্ডারি ফুটবল তারকার পরিবারের তরফে এই দুঃসংবাদ দেওয়া হয়েছে। প্রয়াণকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩।
১৯৬২ সালের এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী ভারতীয় ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন কিংবদন্তি স্ট্রাইকার পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে ভারতীয় ফুটবলের স্বর্ণযুগের অন্যতম নির্মাতা বলেও গণ্য করা হয়। নিউমোনিয়ার কারণে দীর্ঘজদিন ধরেই শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছিলেন পিকে। একাধারে তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছিল পার্কিনসন, ডেমেনসিয়া। ছিল হৃদযন্ত্রের সমস্যাও।
নানা ধরনের শারীরিক কষ্ট নিয়ে প্রায় মাস দেড়েক আগে কিংবদন্তি পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বয়সজনিত কারণে তিনি চিকিৎসায় বিশেষ সাড়াও দিচ্ছিলেন না। ফলে চলতি মাসের শুরু থেকেই পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। তা সত্ত্বেও তাঁর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা কমেনি। উল্টে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। শেষে মাল্টি অর্গ্যান ফেল করেই কিংবদন্তি ফুটবলারের প্রয়াণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা।
১৯৩৬ সালের ২৩ জুন জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে জন্ম হওয়া পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় দলের জার্সিতে ৮৪টি ম্যাচ খেলেছেন। করেছেন ৬৫টি গোল। ১৯৬২ সালের জাকার্তা এশিয়ান গেমস থেকে ভারতকে সোনা এনে দেওয়ার পাশাপাশি ১৯৬০-র রোম অলিম্পিকে দেশের ফুটবল দলকে নেতৃত্বও দেন পিকে। সেবার দুর্ধর্ষ ফ্রান্স ফুটবল দলের বিরুদ্ধে ১-১ গোলে ম্যাচ ড্র করেছিল ভারত। গোল করেছিলেন পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৫৬-র মেলবোর্ন অলিম্পিকেও ভারতীয় ফুটবল দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন এই কিংবদন্তি। অস্ট্রেলিয়াকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারানোর ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন প্রদীপ কুমার।
দেশের জার্সি ছাড়া ক্লাব ফুটবলেও পিকে-র বুট থেকে আসে একাধিক গোল। প্রায় দুই দশক ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের হয়ে না খেললেও কলকাতার দুই বড় দলে কোচিং করান এই কিংবদন্তি। ২০০৪ সালে তাঁকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করে ফিফা। তাাঁকে দ্রোণাচার্য পুরস্কার দেয় ভারত সরকার। এহেন ফুটবল লেজেন্ডের মৃত্যুতে কলকাতা তো বটেই ভারতীয় ফুটবল মহলেও শোকের ছায়া নেমেছে।