বিশ্বকাপে কি ফের মেসি-রোনাল্ডো দ্বৈরথ, সম্ভাবনা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না
এই বিশ্বকাপেই মুখোমুখি হতে পারেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো এবং লিওনেল মেসি। সেই সম্ভবনাই তৈরি হয়েছে।
বরাবরই টিম গেম হিসেবে পরিচিত ফুটবল। এগারো বনাম এগারোর খেলায় কিছু কিছু মুহূর্তে একক দক্ষতায় ম্যাচের রং বদলে গেলেও খেলাটা নির্ভর করে মূলত দলের এগারো জন ফুটবলারের উপরই।
আধুনিক ফুটবলে এরা ভাষাটা একটু বদলেছে, বিশেষ করে দুই প্রতিপক্ষে যখন থাকে বর্তামান ফুটবল সার্কিটের সব থেকে বড় দুই নক্ষত্র লিওনেল মেসি এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো তখন খেলাটা এগারো বনাম এগারোর পরিবর্তে তৈরি হয় এই দুই জনকে কেন্দ্র করেই। কারণ এই দুই জনের মধ্যে কে সেরা, এই তর্ক চলে এসেছে দীর্ঘ দিন ধরে, এমন চলবেও যতদিন ফুটবলের অস্তিত্ব থাকবে।
যেমন পেলে-মারাদোনার তুলনা এখনও চালান ফুটবলপ্রেমীরা, তেমনই মেসি-রোনাল্ডোর তুলনাও বন্ধ হবে না কখনওই।
এই দু'নক্ষত্র মুখোমুখি হলে দলের অন্যান্য দশ জন ফুটবলারকে সেই সময় সাপোটিং ভূমিকায় ধরে ফুটবলপ্রেমীরা ম্যাচটিকে আক্ষা দেন মেসি বনাম রোনাল্ডোর ম্যাচ হিসেবে। লা লিগায় যা পেয়ে থাকে অন্যমাত্রা।
কিন্তু এই লড়াইটাই যদি হয় বিশ্বকাপে, তা হলে কেমন হয় বিষয়টা! বিশ্বকাপের মঞ্চে ব্রাজিল বনাম আর্জেন্তিনার ম্যাচের প্রত্যাশা করে যেমন প্রহর গোনন সমর্থকেরা, তেমনই বিশ্বকাপের মঞ্চে স্বপ্নের লড়াই মেসি বনাম রোনাল্ডো দ্বৈরথ। আর এই স্বপ্নই বাস্তবের রূপ পেতে পারে যদি শেষ ষোলোর ম্যাচ জিতে দুই দল কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছতে পারে।
শেষ ষোলোর লড়াইয়ে আর্জেন্তিনার প্রতিপক্ষ ফ্রান্স এবং পর্তুগালের প্রতিপক্ষ উরুগুয়ে। দু'টি ম্যাচই কঠিন। তবে, এই দুই ম্যাচ যদি আর্জেন্তিনা এবং পর্তুগাল জিতে নিতে পারে তাহলে কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। বিশ্বকাপের মঞ্চে এটাই হবে এই ফুটবল নক্ষত্রের প্রথম সাক্ষাত।
বিশ্বকাপে শুরু থেকেই ছন্দে রয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। স্পেনের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে তাঁর হ্যাটট্রিকের উপরই ভর করে হার বাঁচিয়েছি পর্তুগাল। ইরানের বিরুদ্ধে পেনাল্টি মিস করলেও মরক্কোর বিরুদ্ধে গোল পেয়েছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত চলতি বিশ্বকাপে মোট চারটি গোল করেছেন তিনি।
তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্তিনার লিওনেল মেসি কিন্তু শেষ ম্যাচ বাদ দিলে এখনও পর্যন্ত নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই পেনাল্টি মিস করেন মেসি। তিনি যদি পেনাল্টি মিস না করতেন, তাহলে গ্রুপের শেষ ম্যাচে এসে এতটা চাপ বাড়ত না মেসির দলের উপর। প্রথম ম্যাচ আইসল্যান্ডের কাছে ১-১ গোলে ড্র করার পর ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে হেরে যায় আর্জেন্তিনা।
অবশেষে মাস্ট উইন ম্যাচে নিজের পরিচিত ছন্দে ধরা দেন মেসি। গোটা ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ রাখা থেকে দলকে মাঠে নেতৃত্ব দেওয়া সবই ভাল মতোন করেন ফুটবল রাজপুত্র। নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বমানের গোলও করেন এলএম ১০।
এখন দেখার শেষ পর্যন্ত কোয়ার্টার ফাইনালে যদি এই দুই দলের দেখা হয়, তাহলে ফের স্বমেজাজে ধরা দেন কি না দুই দলের দুই নক্ষত্র।
ভবিষ্যত যাই হোক ফুটবলপ্রেমীরা কিন্তু আশা করছেন বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবারের জন্য একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে সিআর ৭ এবং এলএম ১০। যদি বাস্তবেই এমনটা হয় তাহলে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ বর্তমান ফুটবলের এক চরম দ্বৈরথের সাক্ষী থাকতে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।