সন্ত্রাসের ছায়া আই লিগে! রক্তাক্ত ভূস্বর্গে খেলতে নারাজ ইস্টবেঙ্গল-মিনার্ভা, কোনদিকে গড়াচ্ছে জল
পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হামলার পর, রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে তাদের ম্যাচ অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার জন্য এআইএফএফকে অনুরোধ করল ইস্টবেঙ্গল ও মিনার্ভা পাঞ্জাব।
ভ্যালেন্টাইন্স ডেৃর দিন ৫-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে শিলং লাজং-কে হারিয়ে দারুণ খুশি ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলার থেকে কোচ, কর্তা, সমর্থক - প্রত্যেকেই। কিন্তু সেই আনন্দ বিস্বাদ করে দিয়েছে জম্মু কাশ্মীরের পুলওয়ামা নক্কারজনক সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা।আইইডি বিস্ফোরণে অন্তত ৪০ জন জওয়ান শহীদ হওয়ার পর ফুটবল খেলা, জয়-পরাজয় সবই পিছনে পড়ে গিয়েছে।
এই ভয়ানক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে প্রত্যেকের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। যে লাল-হলুদ একদিন আগেও কাশ্মীরের মাঠ থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়ে এসে আইলিগে বাজিমাত করার স্বপ্ন দেখছিল, তারাই এখন ভূস্বর্গে পা রাখার কথা ভাবতেই পারছে না। তাদের সঙ্গে সঙ্গে কাশ্মীরে খেলার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন মিনার্ভা পাঞ্জাবও।
বিকল্প প্রস্তাব ইস্টবেঙ্গলের
রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের আই লিগের খেলাটি হওয়ার কথা ছিল গত ১০ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু, অতিরিুক্ত তুষাড়পাতের কারণে সেই ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে। কিন্তু পুলওয়ামার ভয়ানক ঘটনার পর শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি)-ই লাল-হলুদ ক্লাবের পক্ষ থেকে এআইএফএফকে নিরাপত্তার কারণে ম্যাচটি শ্রীনগর থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মশাল বাহিনী বিকল্প মাঠ হিসেবে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের নাম প্রস্থাব করেছে। ইস্টবেঙ্গল ও রিয়াল কাশ্মীর দুই দলই খেতাবের দৌড়ে রয়েছে।
এরেবারেই নারাজ মিনার্ভা পাঞ্জাব
ভারতীয় সেনা বাহিনীর সঙ্গে মিনার্ভা পাঞ্জাবের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। মিনার্ভা অ্যাকাডেমিতে এসএসবি ক্যাডেটদের ট্রেনিং হয়। তাঁদের ম্যাচের জার্সিতে লেখা থাকে 'ভারতীয় সেনা বাহিনীকে আমরা স্যালুট করি'। ফলে শুধু নিরাপত্তাগত দিক থেকে নয়, নীতি ও আবেগের দিক থেকেও তারা কাশ্মীরে ম্যাচ খেলতে যেতে নারাজ তারা। ১৮ ফেব্রুয়ারিই শ্রীনগরে তাদের খেলার কথা। ইস্টবেঙ্গলের মতো তারাও এআইএফএফকে ম্যাচ সরানোর জন্য চিঠি দিয়েছে। এমনকী না সরলে সেই ম্যাচে স্বেচ্ছায় ছেড়ে ৩ পয়েন্ট বিসর্জন দিতেও তৈরি তারা বলে জানিয়েছে আই লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
নীরব রিয়াল
কাশ্মীরি কিশোরদের সন্ত্রাসবাদের কবল থেকে দূরে রাখতেই তাদের পা.য়ে ফুটবল তুলে দিয়েছিলেন রিয়াল কাশ্মীর কর্তারা। কিন্তু সেই সন্ত্রাসবাদের জন্যই যখন কাশ্মীর থেকে ফুটবল বাদ হওয়ার মুখে, সেই সময় এখনও অবধি এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি রিয়াল কাশ্মীর।
ফেডারেশনের বক্তব্য
ফেডারেশনও এখন পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল বা মিনার্ভা কারোর আবেদনে সাড়া দিয়েই কোনও সরকারি বিবৃতি প্রকাশ করেনি। তবে আই লিগের সিইও সুনন্দ ধর জানিয়েছেন, তাঁরা শ্রীনগরের স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে পরিস্থিতি সম্পর্কে খবরাখবর নেবেন। যদি তাঁরা ইতিবাচক পরিস্থিতির কথা জানান, তাহলে কাশ্মীরেই ম্যাচ হবে। তিনি আরও জানান, এখনও অবধি ম্য়াচ অন্যত্র সরানোর কথা ভাবনার বাইরে রয়েছে।