সাফ কাপ ২০১৮, হেলায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে ফাইনালে ভারত
বুধবার সন্ধ্যায় ভারত সাফ কাপের সেমিফাইনাল ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠল।
জমজমাট সান্ধ্য ফুটবলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে সাফ কাপের ফাইনালে উঠল ভারত। প্রথম থেকেই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে জমে উঠেছিল লড়াই। প্রথমার্ধে দুই দলই সমান সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেনি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আর চাপ ধরে রাখতে পারেনি পাকিস্তান। দাপটে তিন গোল দেয় ভারত।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক খেলা শুরু করেছিল দুই দল। ২ মিনিটের মাথাতেই প্রথম কর্নারটটি আদায় করে নিয়েছিল ভারত। সেই আক্রমণ সামলে পাকিস্তানও পাল্টা আক্রমণে আসে।
কিন্তু এরপরই খেলাটা ধরে নিয়েছিলেন ভারতীয় খেলোয়াড়রা। একের পর এক আক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়ে পাকিস্তান বক্সে। কিন্তু সজাগ ছিলেন পাক গোলকিপার ও ডিফেন্ডাররা। কখনও নিখিল পুজারির ক্রস প্রতিহত হয়েছে পাক ডিফেন্সে, কখনও পাকিস্তান কিপারের বিশ্বস্ত গ্লাভসে আটকে গিয়েছেন আশিক।
এরমধ্যে ভারত ভাল জায়গায় ফ্রিকিকও পেয়েছিল। কিন্তু কুরুনিয়ান সঠিক জায়গায় বল রাখতে পারেননি। এরপরই মারাত্মক ভুল করে বসেন ভারতীয় গোলকিপার কাইথ। বক্সের মধ্যে তিনি একটি ব্যাকপাস হাতে তুলে নেন। ফলে পাকিস্তান ইনডিরেক্ট ফ্রিকিক পায়। কিন্তু কাইথ ব বিপদ মুক্ত করেন।
এরপর পরই আবার বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রিকিক পেয়েছিল পাকিস্তান। তা থেকে প্রায় গোল করে ফেলেছিল পাকিস্তান। সাদ্দাম হোসেনের ভাসানো বল থেকে হেড করেছিলেন বশির। অল্পের জন্য গোলপোস্টের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়।
হাফ টাইম অবধি ফলাফল ছিল ০-০। কিন্তু এরপর খেলা শুরু হতেই অন্য ভারতকে দেখা যায়। ম্যাচের ৪৯ মিনিটে গোল করে ভারতকে ১-০ ফলে এগিয়ে দেন মানবীর সিং। বল নিয়ে অনেকটা উঠে এসে বক্সের মধ্যে বল ভাসান কুরুনিয়ান। মানবীর চলতি বলেই গোলে শট নেন।
গোলের পরই ভারত, পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়াতে থাকে। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে নিখিল পুজারিকে তুলে ছাঙতে'কে নামান কোচ কনস্টানটাইন। এর তিনমিনিট পরেই প্রচন্ড গতিতে তিনি পাক ডিফেন্ডারদের পিছনে ফেলে বিনিতকে উদ্দেশ করে বল বাড়ান, বিনিত বক্সের মধ্যে ঠিকানা লেখা বল বাড়িয়েছিলেন। সময় মতো পৌঁছে জোরালো শটে আরও একটি গোল করে যান মানবীর।
ম্যাচের ৮২ মিনিটে পায়ে টান ধরায় উঠে যান মানবীর। তাঁর বদলে মাঠে আসেন বার্থ ডে বয় সুমিত পাসি। আর জন্মদিনের উপহারটাও তিনি আদায় করে নেন ১ মিনিটের মধ্যেই কুরুনিয়ানের বাঁক খাওয়া ক্রস বক্সের মধ্যে খুঁজে পায় সুমিতকে। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে হেডে গোল করে যান সুমিত।
এরপরই ভারত-পাক ম্যাচের উত্তেজনা টের পাওয়া যায়। পাকিস্তানের মহসিন আলির সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ছাঙতে। দুজনকেই লাল কার্ড দেখান রেফারি।
ম্যাচের একেবারে শেষে এসে বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে পাকিস্তানের ১০ নম্বর জার্সিধারী হাসান বশিরের একটি দূরপাল্লার অসাধারণ শট পাকিস্তানের আরেক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে গোলে ঢুকে যায়। ভারতের গোলরক্ষক নড়ারও সুযোগ পাননি।
৩-১ ফলেই এই টানটান উত্তেজনার ম্যাচ শেষ হয়। অপর খেলায় এতদিন পর্যন্ত অসাধারণ ফুটবল খেলা নেপাল বিস্ময়করভাবে মালদ্বীপের কাছে ৩-০ গোলে পরাজিত হয়েছে। ফলে আগামী শনিবার ফাইনালে খেলা হবে ভারত বনাম মালদ্বীপ। গ্রুপের খেলায় মালদ্বীপকে ভারত ২-০ গোলে পরাজিত করেছিল।