আর্থিক সমস্যা না থাকলেও,ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল ভাগ্যকে ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন জটিলতা
২৮ জুলাইয়ের পরই ঠিক হয়ে যাবে ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল ভাগ্য। আর্থিক সমস্যা না থাকলেও বিভিন্ন সমস্যা ঘিরে রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল ভাগ্যকে ঘিরে।
২৮ জুলাই বেঙ্গালুরুর বৈঠকের পরই ঠিক হয়ে যাবে ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল ভাগ্য। এই প্রথম মুম্বইয়ের বাইরে বৈঠক হচ্ছে আইএসএলের।
নতুন ইনভেস্টারের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পরেই আইএসএল খেলতে উদ্দ্যোগী হয় লাল-হলুদ। তবে, পুরোটাই নয়া ইনভেস্টারের চাপে। আসন্ন আইএসএলে খেলার ব্যক্তিগত ভাবে কোনও ইচ্ছাই নেই ইস্টবেঙ্গলের। ইনভেস্টারের চাপেই উদ্দ্যোগ নিতে হচ্ছে লাল-হলুদ কর্তাদের।
যা খবর, তাতে আইএসএল-এ ইস্টবেঙ্গলের খেলা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেলেও বেশি কয়েকটি কারণে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বেঙ্গালুরুর বৈঠকে।
প্রথমত যে বিষয় ইস্টবেঙ্গলের আইএসএলে খেলা নিয়ে সমস্যা হতে পারে তা হল, এক শহর এক দল নিয়ম। ২০১৪ সালে যখন আইএসএল শুরু হয়েছিল তখন এই চুক্তিতেই শুরু হয়েছিল খেলা। এটাই এক শহর এক দল চুক্তির শেষ মরসুম। এই বছর যদি ইস্টবেঙ্গলকে খেলতে হয় এবং এটিকে আপত্তি করে, তাহলে কলকাতা থেকে খেলতে পারবে না ইস্টবেঙ্গল। সেক্ষেত্রে হয়তো শিলিগুড়ি থেকে খেলতে হবে লাল-হলুদকে।
কিন্তু সেখানেও রয়েছে জট। শিলিগুড়ির পরিকাঠামো দেখে সন্তুষ্ট নন আইএসএল আধিকারীকেরা। ফলে সেখানেও তৈরি হয়েছে এক সমস্যা।
অন্য দিকে, এটিকের অন্যতম কর্ণধার উৎসব পারেখ জানিয়ে দিয়েছেন, কলকাতা থেকে একটা দলই খেলবে এবং সেটা এটিকে। এই রকমই কথা রয়েছে তাদের আইএমজিআর-এর সঙ্গে।
কলকাতার বাইরে খেলতে চায় না ইস্টবেঙ্গলও। কারণ যে শহরে এত বছর তারা খেলছে সেই শহর থেকে খেলতে না পারলে, তাতে অসন্তুষ্ট হতে পারেন বহু সমর্থক।
এক শহর এক দল, এই নিয়মের পাশাপাশি লাল-হলুদের সমস্যা বাড়াচ্ছে দল গঠনও। আইএসএলের জন্য যে মানের ভারতীয় ফুটবলার বা বিদেশি প্রয়োজন, তা এখনও নেই লাল-হলুদের কাছে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা কোস্টারিকার অ্যাকোস্টাকে সই করালেও বাকি যে তিন বিদেশির সঙ্গে চুক্তি করেছে লাল-হলুদ, তাঁরা সকলেই আই লিগে খেলেছেন। একমাত্র কাতসুমি ইউসা খেলেছেন আইএসএলে।
মাহমুদ আল আমনা, কাসিম আইদারা আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হলেও আইএসএলে পরীক্ষিত নন। যদিও আমনার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে একাধিকবার ভাবেন বহু ফুটবল বিশেষজ্ঞই।
গত বার আইএসএলে খেলার সুযোগ পায় জামশেদপুর এফসি এবং বেঙ্গালুরু এফসি। এই দুই ক্লাবের নাম গত বছর জুলাইয়ের ১২ তারিখ জানিয়ে দিয়েছিল আইএসএল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই বছর টুর্নামেন্ট আগে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও চূড়ান্ত নয় ইস্টবেঙ্গল খেলবে কিনা। এই পরিস্থিতিতে যদি ২৮ তারিখ সবুজ সংকেত পায় লাল-হলুদ, তাহলে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া টুর্নামেন্টের আগে তারা আদৌ ভাল দল গুছিয়ে তুলতে পারবে কি না সেটাও বড় প্রশ্ন। কারণ ভাল দল করার জন্য হাতে পর্যাপ্ত সময় না পেলে ঐতিহ্যশালী লাল-হলুদ স্রেফ প্রতিযোগীতায় অংশ নেওয়ার জন্য দল নামাবে না, এটাই প্রত্যাশিত। কারণ ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতো দল চ্যাম্পিয়ন হতেই যে কোনও টুর্নামেন্টে খেলে, চ্যাম্পিয়নশিপই থাকে তাদের মূল লক্ষ্য।
অন্য দিকে, ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য শুধু ইস্টবেঙ্গলকেই নয়, মোহনবাগানকেও প্রয়োজন আইএসএলের। এই দু'টি দল এক সঙ্গে খেললেই আরও বেশি মুনাফার মুখ দেখতে পাবে আইএসএল। কারণ মোহন-ইস্টের চিরকালীন লড়াই, ডার্বির উন্মাদনা তখন অন্য মাত্রায় নিয়ে যাবে আইএসএলকে। যেমন ফ্যাকাসে আই লিগকে এই একটা ম্যাচই ভরিয়ে দেয় সমস্ত রঙে। সে উন্মাদনা হোক বা আর্থিক সংক্রান্ত।
ডার্বি যে কোনও টুর্নামেন্টকেই অন্য মাত্রা দিয়ে এসেছে বরাবর। আর এই ম্যাচটাকেই পেতে চায় আইএসএল। সেখানে মোহনবাগানের আর্থিক অবস্থা যা, তাতে এই মরসুমে আইএসএল খেলা তাদের পক্ষে অসম্ভব। ফলে শুধু ইস্টবেঙ্গলকে পেতে কতটা আগ্রহী হবে আইএমজিআর সেটাও একটা বিষয়। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত ২৮ তারিখ কী সিদ্ধান্ত নেয় আইএমজিআর।