কাটল না ৬৪ বছরের ফাড়া, বিশ্বকাপ থেকে বিদায় সুইৎজারল্যান্ডের
বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল সুইৎজারল্যান্ড। সুইডেনের কাছে হেরে গেল ১-০ গোলে।
স্বপ্নভঙ্গ সুইৎজারল্যান্ডের, দুরন্ত লড়াই করেও স্বপ্ন বাস্তবের রূপ পেল না শাকিরিদের। প্রি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে সুইডেনের কাছে ১-০ গোলে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদয় নিতে হল রোসোক্রোসিয়াটিদের।
হারতে হলেও এদিন গোটা ম্যাচেই দাপট ছিল সুইৎজারল্যান্ডের। ম্যাচের প্রথম থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেওয়ার চেষ্টা করেন শাকিরিরা। অদম্য লড়াইয়ে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি সুইৎজারল্যান্ডের ফুটবলারদের মাঝমাঠের দখল নিতে। এর পর একের পর এক আক্রমণ তুলে আনতে থাকেন তারা।
ম্যাচ শুরু দশ মিনিটের মধ্যেই একের পর এক আক্রমণ তুলে আনে সুইৎজারল্যান্ড। কিন্তু প্রায় গোলের সামনে দাঁড়িয়ে সুইস ফুটবলাররা যে মিস করেন, তা চোখে দেখা যায় না।
শুধু প্রথম দশ মিনিটই নয় গোটা প্রথমার্ধেই মাঝেমধ্যে সুইডেনের গোল দূর্গে ফাটল ধরানোর জায়গায় পৌঁছেও ফাকা হাতে ফিরে আসেন সুইৎজারল্যান্ডের ফুটবলাররা স্রেফ ভেদশক্তির অভাবে। নিজেদের পাওয়া সুযোগগুলি যদি তারা প্রথমার্ধে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারতেন বেহরামি-রডরিগেজরা তাহলে প্রথমার্ধেই দু'গোলে এগিয়ে যেতে পারত সুইৎজারল্যান্ড।
তবে সুইৎজারল্যান্ডের খেলার মধ্যে আধিপত্য থাকলেও মাঝে মাঝে ঝটিকা আক্রমণ তুলে এনে সুইস রক্ষণভাগে বিপদ ডেকে আনার চেষ্টাও চালায় সুইডেন। যদিও সুইস ডিফেন্ডারদের দক্ষতায় সুবিধা করতে ব্যর্থ হয় তারা। গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।
বলা মুশকিল হাফ টাইমে ফুটবলারদের কী বলেছিলেন সুইডেনের কোচ জেন অ্যান্ডারসন. কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ২০ মিনিট যে ফুটবলটা সুইডেন খেলল, তা দেখে মনে পড়ে যাচ্ছিল পিকে ব্যানার্জীর ভোকাল টনিকের কথা।
যে দলটা তার আগের ৪৫ মিনিট সেই ভাবে বলের দখলই নিতে ব্যর্থ হয়, সেই দলটাকেই পরের অর্ধে দেখায় একেবারেই অন্য মেজাজে। দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই বলের পজিশন বেশি রেখে আক্রমণে উঠতে থাকে সুইডেন। আর এই আক্রমণগুলি বেশির ভাগই তৈরি হচ্ছিল ফসবার্গকে কেন্দ্র করে। বার বার নজরে আসছিল তাঁর অদম্য লড়াই এবং গতি। আর এই ফসবার্গের কাছেই শেষ পর্যন্তল থমকে যায় সুইৎজারল্যান্ডের আশা। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে টোইভোনেনের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে বক্সের মধ্যে ঢুকে গোল লক্ষ্য করে শট নেন এই মিডফিল্ডার। ফসবার্গের গোলমুখী শট তরুণ ডিফেন্ডার আকাঞ্জির পায়ে লেগে ঢুকে যায় গোলে। যদিও আত্মঘাতী গোল দেননি রেফারি। গোলটি দেওয়া হয় ফসবার্গের পক্ষেই।
গোলটি পেয়ে যাওয়ার পরই খেলার ধরণ সম্পূর্ণ বদলে দেয় সুইডেন। যে দলটা একের পর এক আক্রমণ তুলে আনছিল, সেই দলটাই চলে যায় আল্ট্রা ডিফেন্সিভ স্ট্র্যাটেজিতে। শেষ ২০ মিনিট ডিফেন্স করেই ম্যাচ শেষ করে সুইডেন। যদিও ম্যাচ শেষের আগে তৈরি হয় এক নাটকীয় পরিস্থিতি। বক্সের ঠিক বাইরে ওলসনকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন মিচেল লাং। প্রথমে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিলেও ভিএআর এ নিজের সিদ্ধান্ত রিভিউ করে পেনাল্টি বাতিল করেন রেফারি। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় সুইডেন। যদিও এই ফ্রি কিক থেকে গোল তুলতে ব্যর্থ হয় তারা।
কোয়ার্টার ফাইনালে সুইডেন খেলবে ইংল্যান্ড বনাম কলোম্বিয়া ম্যাচের বিজয়ী দলের বিরুদ্ধে।