খেলো ইন্ডিয়ার শুটিং রেঞ্জে 'অভিনব' ইতিহাস! শোরগোল ফেলে দিল বাংলার ক্ষুদে
১০ বছরের অভিনব সাউ, খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমসে সর্বকনিষ্ঠ স্বর্ণ পদক বিজয়ী হলেন।
পুনেতে খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমসে ইতিহাস গড়লেন বাংলার অভিনব সাউ। রবিবার মেহুলি ঘোষের সঙ্গে জুটি বেঁধে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের মিক্সড টিম ইভেন্ট থেকে বাংলাকে আরও একটি সোনা এনে দিল এই ক্ষুদে শুটার। ফলে ১০ বছরের অভিনবই হলএই গেমসের সর্বকনিষ্ঠ চ্য়াম্পিয়ন। এর আগে তিরুঅনন্তপুরমে জাতীয় শুটিং-এর আসর থেকেও সে মেহুলি ঘোষের সঙ্গে জুটিতে সোনা জিতেছিল।
এই গেমসের জুনিয়র (অনুর্ধ্ব-২১) বা ইয়ুথ (অনুর্ধ্ব-১৭) কোনও ক্যাটেগরিতেই ব্য়াক্তিগত বিভাগে বাছাই করা ষোল জন শুটারের মধ্য়ে জায়গা করে নিতে পারেনি অভিনব। এতে তিনি দমে যায়নি। যোগ্যতা অর্জনের বাধা টপকে ফাইনালে দারুণ পারফর্ম করে মেহুলির সঙ্গে মিক্সড ইভেন্টে সোনা জিতে গেমসের আসরে হুলুস্থুলু ফেলে দিয়েছে।
ফাইনালে প্রতিটি সিরিজে সময় বাধাধরা ছিল। মেহুলি এই ক্ষেত্রে প্রথম গুলি ছোঁড়ার জন্য তাঁর ক্ষুদে পার্টনারকেই এগিয়ে দেন। পরে তিনি জানান, তাঁর নিশানা ঠিক করতে কিছুটা সময় লাগে কিন্তু অভিনব খুব তাড়াতাড়ি নিশানা ঠিক করে গুলি চালাতে পারে বলেই, তাঁকে প্রথমে দিয়েছিলেন। ফাইনালে তারা মোট ৫০১.৭ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে।
২০০৮ সালে আসানসোলে জন্ম অভিনবের। ভারতীয় খেলাধূলার ইতিহাসে যে বছরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বছরই বেজিং অলিম্পিকে প্রথম ব্যক্তিগত সোনা জিতেছিলেন অভিনব বিন্দ্রা। খেলা-পাগল বাবা-মা ছেলের নাম রাখেন অলিম্পিক চ্য়াম্পিয়নের নামেই। আর্থিক সচ্ছলতার অভাবে বাবা রূপেশ সাউ-এর খেলোয়াড় হওয়ার সাধ পূরণ হয়নি। তাই ছেলে অন্তত খেলোয়াড় হোক এমনটাই চেয়েছিলেন তিনি।
আর ছেলেও যেন খেলোয়াড় হওয়ার জন্যই পৃথিবীতে এসেছে। আট বছর বয়স না হওয়া অবধি রাইফেল চালানোর অনুমতি দেওয়া হয় না। তাই বাড়ির কাছে আসানসোল শুটিং ক্লাব থাকলেও সেখানে অভিনবকে ভর্তি করাতে পারেননি রূপেশ। ক্য়ারাটেতে ভর্তি করেছিলেন ছেলেকে। জাতীয় ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় দু'বার সোনা জেতে অভিনব।
যাঁর নাম রাখা হয়েছে এক শুটারের নামে, সে বেশিদিন শুটিং রেঞ্জের বাইরে থাকে কী করে! তাই বয়স হতেই ছেলেকে শুটিংয়ে ভর্তি করেন রূপেশ। আর এখানেই সে চোখে পড়ে গিয়েছিল অল্পের জন্য লন্ডন অলিম্পিকে পদক হারানো বাংলার শুটার জয়দীপ কর্মকারের। সেই থেকে উল্কার গতিতে এগিয়ে চলেছে অভিনব।