অত্যাধিক চাপেই কি জীবনের শেষ দৌড়ে ট্র্যাকে ছিটকে পড়লেন বোল্ট, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স টুর্নামেন্টের শেষ রেসে মাঝপথেই চোটের কারণে রেস শেষ করতে পারলেন না কিন্তু কারণ কী? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
নিজের 'শেষ রেস' শেষ করতে পারলেন না বিশ্বের দ্রুততম মানুষ। দেশের হয়ে ৪x১০০ মিটার রিলেতে মাঝপথেই ট্র্যাকে পড়ে গেলেন স্প্রিন্ট কিংবদন্তী। কিন্তু কেন এমন হল? কী কারণ ছিল এই ধরণের অঘটনের পিছনে? সেই কারণ জানতেই বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছে ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা।
নিশীথ রঞ্জন চৌধুরী (স্পোর্টস মেডিসিন বিশেষজ্ঞ)
ওয়ান
ইন্ডিয়া
বাংলা-
নিজের
শেষ
রেস
শেষ
করতে
পারলেন
না
উসেন
বোল্ট
,
কারণ
কী
বলে
মনে
হয়?
নিশীথরঞ্জন
চৌধুরী-
বয়স
বাড়ার
সঙ্গে
সঙ্গে
শারীরিক
ক্ষমতা
নিয়ন্ত্রিত
হয়ে
যায়।
বোল্টের
বয়স
বাড়ছে
এটা
একটা
ফ্যাক্ট।
সাইকোলজিক্যালি
একটু
স্ট্রেসফুল
হয়
বিষয়টা
যখন
মাথায়
থাকে
এটা
আমার
শেষ
রেস,
আমাকে
গৌরব
নিয়ে
ফিরতে
হবে।
এই
ওভার
স্ট্রেস
থেকে
অ্যাড্রিনালিন
সিক্রিয়েশন
জোরালো
হয়ে
যায়।
পালস
রেট
বেড়ে
যায়।
অলটারনেটিভ
মাসল
আন-ব্যালান্স
হয়ে
যায়।
পায়ের
মুভমেন্টের
সময়
সামনের
মাসল
ও
পিছনের
মাসলে
ব্যালেন্স
থাকা
জরুরি।
এই
বিষয়টা
নষ্ট
হয়ে
গেলে
অ্যাথলিটরা
দৌড়নোর
সময়
পড়ে
যেতেই
পারে।
ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা-- উসেন বোল্ট কী বুঝতে পারছিলেন তিনি আর সেরা ফর্মে নেই তাই নেন অবসরের সিদ্ধান্ত?
নিশীথরঞ্জন চৌধুরী-- প্লেয়ারদের কাছে প্রত্যেক দিনের রেকর্ড থাকে। কোথায় যাচ্ছে সেখানে তারা বুঝতে পারে কোথায় অসুবিধা হচ্ছে। একজন নিজে সবচেয়ে ভাল বুঝতে পারে সে ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে।
মালতী ঘোষ (সাইক্রিয়াটিস্ট)
ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা-- নিজের শেষ রেস শেষ করতে পারলেন না উসেন বোল্ট , কারণ কী বলে মনে হয়?
মালতী ঘোষ-- মনে হয় মানসিক ভারসাম্যে ওপর প্রভাব পড়েছিল। শেষ চেষ্টা পারফরমেন্স দিতেই হবে। উদ্বেগ কাজ করছিল। চাপটা অনেক বেশি হয়ে গিয়েছিল। প্রথম যখন খেলতে আসে কেউ। তখন একরকমের চাপ থাকে। কিন্তু, এই চাপটা তার চেয়ে অনেক বেশি। এটাই আমার শেষ সুযোগ সকলের সামনে নিজেকে মেলে ধরার। আমাক নিজের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতেই হবে। এই সবকিছু চলতে থাকে মনের মধ্যে। এটারই প্রভাব পড়েছিল উসেন বোল্টের ওপরও।
কুন্তল রায় (কোচ)
ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা-- নিজের শেষ রেস শেষ করতে পারলেন না উসেন বোল্ট , কারণ কী বলে মনে হয়?
কুন্তল রায়-- মানসিক চাপের প্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়। মেন্টাল সেট-ব্যাকটা আগেই হয়েছে। হিটের দৌড়েই দেখা গেছে নড়বড়ে পারফরমেন্স। সবসময়েই উসেন বোল্টের মাথাতেও কাজ করে , যখন দৌড়েছি তখন সোনাই জিতব। কিন্তু হিটেই বোঝা গিয়েছিল নট ইন এ ভেরি গুড শেপ। এটাই প্রথম রেসে প্রভাব ফেলেছে। তারপর আবার ব্যক্তিগত রেসে ব্রোঞ্জ জেতাটা ওঁর মাথায় খুব চাপ সৃষ্টি করেছিল। যতই দুনিয়াকে হাসিমুখ দেখান, কিন্তু মন থেকে তো কোনওভাবেই তা মেনে নিতে পারছিলেন না। এটাই নিজের ফাইনাল রেসেও কাজ করছিল। এই মানসিক সেট-ব্যাক সহ্য করা সম্ভব হচ্ছিল না। রেসের আগে যদি আধঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাহলে তা অ্যাথলিটের ওপর প্রভাব ফেলতেই পারে। কিন্তু যদি তাঁর সঙ্গে মানসিক চাপও কাজ করে তাহলে রিঅ্যাকশনটা আরও বেশি মারাত্মক হতে পারে। বোল্টেরও তাই হয়েছে।
ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা-- উসেন বোল্ট কী বুঝতে পারছিলেন তিনি আর সেরা ফর্মে নেই। তাই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন?
কুন্তল রায়--- বোল্টের এখনও যা শারীরিক অবস্থা তাতে ও আরও কিছুদিন নিশ্চিন্তে শীর্ষে থেকে খেলা চালিয়ে যেতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে এখনও তাঁকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য এখনও কেউ নেই। তবে হ্যাঁ যদি এই মানের তারকা অনুশীলন মিস করেন তাহলে সেটা বড় ক্ষতি হতে পারে। বন্ধুর মৃত্যুর জন্য বেশ কয়েকদিন অনুশীলন মিস করেছিলেন বোল্ট। পাওয়েল নিজের বিয়ের জন্য একদিনের অনুশীলন মিস করেছিলেন। তারপর ৯ মিটার লাফাতে না পেরে বলেছিলেন ওই একদিনের অনুশীলন মিসের জন্যই ৯ মিটার লাফাতে পারেননি তিনি। তাহলেই বুঝতে পারছেন , এই মানের অ্যাথলিটদের কাছে অনুশীলন করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।