১২ বছরের সম্পর্কে ছেদ - আন্তর্জাতিক হকি থেকে সরে দাঁড়ালেন সর্দার সিং
বৃহস্পতিবার ভারতের জাতীয় হকি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সর্দার সিং আন্তর্জাতিক হকি থেকে অবসরের ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, গত ১২ বছরে তিনি চুটিয়ে খেলেছেন। এখন নতুনদের দায়িত্ব নেওয়ার সময়।
আন্তর্জাতিক হকি থেকে অবসর নিলেন ভারতের পকি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সর্দার সিং। তিনি জানিয়েছেন ১২ বছর ধরে তিনি যথেষ্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন, এবার সময় এসেছে নতুনদের দায়িত্ব নেওয়ার। তিনি আরও জানান এশিয়া কাপে ভারত তাদের স্বর্ণপদক ধরে রাখতে না পারার পরই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বয়স এবং গতি তাঁর পক্ষে আর নেই বলেই মনে করছেন ভারতের এই হকি তারকা। তিনি জানিয়েছেন চন্ডিগড়ে তাঁর পরিবার, হকি ইন্ডিয়া ও তাঁর বন্ধু-বান্ধব - সবার সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে তাঁর এই সিদ্ধান্ত অনেককেই বিস্মিত করেছে। কারণ এশিয়ান গেমস চলাকালীন সর্দার দাবি করেছিলেন তাঁর মধ্যে এখনও অনেকটা হবি অবশিষ্ট আছে। ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে ভারতের হয়ে আরও একবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। কিন্তু বুধবার হকি ইন্ডিয়ার তরফে, জাতীয় শিবিরের জন্য যে ২৫ জনের খেলোয়াড়ের কোর গ্রুপ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে সর্দারের নাম নেই।
ঠিক তার পরদিনই সর্দার অবসরের কথা জানানোয়, হকি ইন্ডিয়া থেকে তাঁকে অবসর গ্রহণে বাধ্য করা হল কিনা, তাই নিয়ে হকি-মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। সর্দার অবশ্য এই বিতর্কিত প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর অবসরের কথা ঘোষণা করবেন।
২০০৬ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক হকিতে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। তারপর থেকে ১২ বছর ধরে ভারতের জাতীয় দলের মিডফিল্ডের অবিচ্ছিন্ন অংশ ছিলেন তিনি। ৩২ বছর বয়সী এই তারকা দাতীয় দলের হয়ে ৩৫০-র বেশি ম্যাচ খেলেছেন। ২০০৮ থেকে ২০১৬ এই দীর্ঘ সময় তিনি ভারতের অধিনায়কত্বও করেছেন।
২০০৮ সালে পাকিস্তানে সুলতান আজলান শাহ ট্রফি থেকে তিনি ভারতের অধিনায়কের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনিই হন ভারতের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক। ভারতের হয়ে ২টি অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন সর্দার সিং। ২০১২ সালে তিনি অর্জুন পুরষ্কার পেয়েছিলেন আর ২০১৫-য় পান পদ্মশ্রী সম্মান।
বরবরই লড়াকু হিসেবে পরিচিত ছিলেন সর্দার। হাল ছেড়ে দেওয়া তাঁর মজ্জায় ছিল না। চলতি বছরের শুরুতে গোল্ড কোস্ট কমনওয়েল্থ গেম্সের ভারতীয় দল থেকে বাদ দেওা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তারপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই আবার জাতীয় দলে ফিরে এসেছিলেন তিনি। ভারত সেখান থেকে রুপো জিতেছিল।
বয়স সর্দারের গতিতে থাবা বসিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু এখনও তিনি ফিটনেসে ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। তিনি সেকথা নিজেও জানেন। অবসরের সিদ্ধান্ত জানানোর সময়ে তিনি জানিয়েছেন ফিটনেস নিয়ে তাঁর এখনও কোনও সমস্যা নেই। তিনি দিব্যি আরও বেশ কয়েক বছর খেলতে পারবেন। কিন্তু সবকিছুরই একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে। তাঁর মতে, 'হকির বাইরের জীবনে প্রবেশ করার জন্য এটাই সঠিক সময়'।