কলকাতায় ফিরলেন সোনাজয়ী তাসারু জুটি - আলোয় পোস্টারে ফুলের মালায় বর্ণাঢ্য বরণ
১৮তম এশিয়ান গেমসের ব্রিজ প্রতিযোগিতায় পুরুষের পেয়ার ইভেন্টে সোনাজয়ী প্রণব বর্ধন এবং শিবনাথ সরকার বাড়ি ফিরলেন।
এশিয়া জয় করে দেশে ফিরলেন দুই তাস পিটানো বুড়ো। রবিবার গভীর রাতে কলকাতা বিমান বন্দরে পৌঁছান হাওড়ারসালকিয়ার শিবনাথ সরকার ও কলকাতার সন্তোষপুরের বাসিন্দা প্রণব বর্ধন। গভীর রাত হলেও এই দুজনকে নিয়ে পাড়া-প্রতিবেশী-পরিজনদের উন্মাদনার অভাব ছিল না।, যার রেশ রয়ে গিয়েছে সোমবারেও।
শিবনাথের সালকিয়ার বাড়িতে এদিন দলে দলে ভিড় করেন পাড়া প্রতিবেশীরা। স্থানীয় বিভিন্ন ক্লাবের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করা হয়। তাঁর বাড়িতে আয়োজন ছিল প্রচুর মিস্টির। যাঁরাই এসেছেন তাঁদেরকেই মিস্টিমুখ করানো হয়েছে।
একই ছবি দেখা গিয়েছে প্রণব বর্ধনের বাড়িতেও। রাতেই সন্তোষপুরে তাঁর পাড়া সাজানো হয়েছিল আলো দিয়ে। এলাকায় 'প্রণবদা'-র ছবি দিয়ে পোস্টারও পড়েছে। এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন ব্রিজ-অন্তঃপ্রাণ প্রণবদার জন্য তাঁদের গর্বের শেষ নেই।
বাড়ি ফেরার পর শিবনাথ সরকার জানিয়েছেন ব্রিজের সুপার মিক্সে ব্যর্থতাই পেয়ার্স ইভেন্টের জন্য তাঁদের তাতিয়ে দিয়েছিল। তাঁরা জানতেন, এটাই তাঁদের এতমাত্র সুযোগ। তাঁদের সাফল্য ভারতে ব্রিজকে আরও জনপ্রিয় করবে আশা করেন তিনি। ব্রিজ মস্তিষ্কের খেলা। স্কুলে স্কুলে ব্রিজ খেলা চালু করলে ছাত্র-ছাত্রীদেরও সুবিধা হবে বলে মনে করেন তিনি।
এবারের এশিয়ান গেমসে সবচেয়ে বেশি বয়সে পদক জিতেছেন ৬০ বছরের প্রণব বর্ধন। সেই কথা উল্লেখ করে শিবনাথ জানিয়েছেন এই খেলায় বয়সটা কোনও বিষয় নয়। তবে এই খেলায় সাফল্য পেতে চাই অসম্ভব মনোসংযোগ। প্রণব বাবু জানিয়েছেন তিনি মনোসংযোগ বাড়াতে যোগাভ্য়াস করেন।
এমনিতে আর পাঁচজন বাহালীর মতোই মাছ খেতে খুব ভালবাসেন প্রণব। তাঁর স্ত্রী রুমা এদিন তাঁর জন্য বিশেষ মাছের পদ রান্না করেছেন। স্বামীকে নিয়ে খুব গর্বিত তিনি। অবশ্য ব্রিজ নিয়ে প্রণবের অতি আগ্রহে তাঁকে মাঝে মাঝেই সমস্যায় পড়তেও হয় বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। মাঝে মাঝেই নাকি বাজার করতে গিয়ে সব ভুলে ব্রিজ খেলতে বসে যান তিনি।
সেই তাস পেটানোর নেশাতেই এশিয়া জয় করে ফিরলেন দুই বাঙালী। রবিবার রাতে তাঁদের সঙ্গেই দেশে ফেরেন আরও দুই বাঙালী ব্রিজ খেলোয়ার সুমিত মুখার্জি এবং দেবব্রত মজুমদারও। এশিয়ান গেমসে তাঁরা একই ইভেন্টে নবম স্থান পান।