ফিরলেন সোনার মেয়ে স্বপ্না বর্মন, আনন্দ-উচ্ছাসে মাতল কলকাতা
কলকাতায় ফিরলেন স্বর্ণপদক বিজয়ী স্বপ্না বর্মণ। বিমানবন্দরে তাঁকে বরণ করে নেন রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
কলকাতায় ফিরলেন সোনার মেয়ে স্বপ্না বর্মন। বিমানবন্দরেই তাঁকে পুস্পস্তবক দিয়ে বরণ করে নেন রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তারপর এশিয়াডে ইতিহাস সৃষ্টি করা অ্যাথলিট যান সল্টলেকের স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ায়। সেখানে তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বাসে মাতেন তাঁর সতীর্থ, কোচরা।
জলপাইগুড়ির মেয়ে স্বপ্নাকে তাঁর গ্রামের বাড়িতে আবিষ্কার করেছিলেন সাইয়ের কোচ সুভাষ সরকার। সেখান থেকে স্বপ্নাকে তুলে এনে প্রথমে তিনি জলপাইগুড়ি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে তারপর ২০১১ সালে নিয়ে আসেন কলকাতার স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (সাই)-র কমপ্লেক্সে। এতদিন এই সাইতেই স্বপ্না প্রস্তুতি নিয়েছিলেন সোনা জয়ের।
শহরে ফিরেই তিনি এদিন তিনি যান তাঁর সেই প্রিয় সাধনক্ষেত্রে। সেখানে তাঁর জন্য অপেক্ষায় ছিলেন তাঁর অনুশীলনের সঙ্গীরা। ছিলেন সাইয়ের বিভিন্ন কোচরাও। একের পর এক ফুলের মালায় পরিয়ে স্বপ্নাকে কাছে টেনে নেন তাঁরা। চেনা পরিচিতদের ভিড়ে আনন্দে মেতে ওঠেন স্বপ্নাও। বহু মানুষ সেখানে সেলফি তোলেন স্বপ্নার সঙ্গে।
কিন্তু পদকজয়, সংবর্ধনার ধূম বদলায়নি স্বপ্নাকে। স্বপ্না জানিয়েছেন তিনি একেবারে আগের মতোই 'রাগী' স্বপ্নাই আছেন। হ্যাঁ স্বপ্না নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন, তিনি বেশ রাগী। এই রাগটা কমানো দরকার বলেও তিনি মনে করেন।
তিনি জানিয়েছেন হেপ্টাথলনে ৬০০০ পয়েন্ট তুলতে পারবেন, এমন একটা আশা জাকার্তা রওনা হওয়ার আগে থেকেই তাঁর মনে থিল। কারণ সেই লক্ষ্য়েই তিনি দিনের পর দিন অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছিলেন। বে হাফ অ্যাপ্রোচে ছোঁড়েন বলে জ্যাভলিনে ৫০ মিটার ছুঁড়তে পারবেন তা কখনই ভাবেননি।
কিন্তু সেই কীর্তি স্থাপনের পরও কিন্তু তিনি সোনা জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না। কারণ তারপরেও বাকি ছিল ৮০০ মিটারের গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট। স্বপ্না জানিয়েছেন, তাঁর কোচ সুভাষ সরকার ৮০০ মিটারের ইভেন্ট শুরুর আগে বলেছিলেন সেই দৌড়ে চিনের প্রতিদ্বন্দ্বীর সমানে সমানে দৌড়তে পারলেই হবে। সেই দৌড়ের শেষ ১০০ মিটারে চিনের প্রতিযোগীর থেকে এগিয়ে যেতেই তিনি প্রথম সোনার গন্ধ পেয়েছিলেন।
সামনের লক্ষ্য ২০২০ টোকিও অলিম্পিক। তার জন্য প্র্যাকটিস শুরু করবেন শীঘ্রই। সোনা জয়ের পর তিনি শপথ নিয়েছেন কোচের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলবেন। তবে সবার আগে তাঁর যেসব চোট রয়েছে তা সারানোটাই তাঁর লক্ষ্য। তাঁর আশা সেসব ২-৩ মাসেই সেরে যাবে। আর তারপরই আবার হেপ্টাথলনের প্রস্তুতি। আর আগামীর স্বপ্নাদের জন্য তাঁর পরামর্শ, কোচ আর নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে।
আপাতত ঘরে ফেরার অপেক্ষা। জলপাইগুড়ির গ্রামের বাড়িতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন মা। বাড়ি গিয়ে মায়ের হাতে ডাল-ভাত খাওয়ার জন্য তাঁর আর তর সইছে না।