'মস্তক মুণ্ডন' বিতর্কে বিদ্ধ বাংলার হকি! তুখলকি ফতোয়া ঘিরে উত্তেজনা রাজ্যের ক্রীড়ামহলে
হয় ম্যাচ জেতো নাহলে মাথার চুল কামাও - জুনিয়র দলের কোচের আপত্তিকর ফতোয়ায় বাংলার হকিতে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
একসঙ্গে মাথার চুল উড়িয়ে দিলেন দলের ১৬ জন সদস্য। জবলপুরে জাতীয় জুনিয়র হকির কোয়ার্টার ফাইনালে পরাজিত হয়ে কলকাতায় ফিরে এমন অদ্ভূত কাণ্ডই ঘটিয়েছে বাংলার জুনিয়র হকি দল। না পরাজয়ের গ্লানি থেকে নয়, এই কাজ করতে তারা বাধ্য হয়েছেন কোচের নির্দেশে। কোচ পঙ্কজ আনন্দের তুখলকি ফতোয়া -হয় ম্যাচ জেতো নইলে মাথা কামাও।
চলতি মাসে জবলপুরে জাতীয় জুনিয়র হকি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল বাংলার দল। খেলোয়াড়দের অভিযোগ টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই পঙ্কজ জানিয়ে দিয়েছিলেন ম্যাচ জিততে না পারলেই মাথার চুল উড়িয়ে দিতে হবে। প্রথম দুই ম্যাচে গুজরাত ও অন্ধ্রপ্রদেশের বিরুদ্ধে জেতায় সেই প্রসঙ্গ আসেনি। কিন্তু, কোয়ার্টার ফাইনালে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে হারের পরই ফের নাকি কোচ মস্তক-মুণ্ডনের দাওয়াইতে ফিরে যান।
দলের অধিনায়ক রাহুল কুমার-সহ বাকিরা তাতে রাজি হয়ে গেলেও ধর্মীয় কারণ দেখিয়ে বেঁকে বসেন গৌতম শর্মা নামে এক খেলোয়াড়। অভিযোগ এরপরই দলের বাকিদের কলকাতায় ফিরে মাথা মুড়িয়ে সেই ছবি কোচের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ১৮ জানুয়ারি কলকাতায় ফেরার পর প্রত্যেকেই সেই নির্দেশ পালন করেন।
এরপরই এই ঘটনা জানাজানি হয় এবং আপাতত এই নিয়ে সরগরম রাজ্য ক্রীড়া মহল। যদিও পরিস্থিতি আঁচ করে কোচ ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছেন। তাঁর বক্তব্য দলকে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই নাকি ম্যাচের আগে মাথা কামানোর টোটকা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, তাঁর দাবি ম্যাচের পর এই নিয়ে আর কিছু কথা হয়নি। তাঁর মতে, খেলোয়াড়রা হারের অনুশোচনায় নিজেরাই চুল কেটে ফেলেছেন।
কিন্তু তাতে ভবি ভুলছে না। নয়ের দশকে নইমুদ্দিনের ফুটবলারদের চুল ছোট করে কাটতে বলার বিতর্কিত নির্দেশের স্মৃতি উস্কে দিয়েছে এই ঘটনা। দলের সঙ্গে জবলপুরে যাওয়া ম্যানেজার আলাউদ্দিন এই নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি। এমনকী তিনি ফোনও বন্ধ রেখেছেন। রাজ্য হকি সংস্থার সচিব অবশ্য গোটা ঘটনা নিয়ে যারপরনাই ক্ষুব্ধ। তিনি জানিয়েছেন কোচের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।