আই লিগ ২০১৮-১৯, কলকাতা ডার্বি মানে লড়াই দুই কোচের রণকৌশলেরও! জেনে নিন সেনাপতিদের
ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান, আই লিগ ২০১৮-১৯ এর ম্যাচ কোচ আলেহান্দ্রো মেনেন্দেজ এবং শঙ্করলাল চক্রবর্তীর রণ-কৌশলের লড়াই।
রবিবার (১৬ ডিসেম্বর), ফের কলকাতা ডার্বি। এমনিতেই এই ম্যাচে দুই দলের সামনেই জয় ছাড়া দ্বিতীয় কোনও ভাবনা থাকে না। এটা মর্যাদার লড়াই। তার উপরে এইবার আই লিগের নিরিখেও দুই দলের কাছে তিন পয়েন্ট অত্যন্ত মূল্যবান। আই লিগের ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান কলকাতার দুই দলই আপাতত ৬ ম্যাচে ৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে আছে। কাজেই সব দিক থেকেই রবিবারের কলকাতা ডার্বি দুই দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই নিয়ে ৩৪৮তম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। এই লড়াই যতটা মাঠের ভেতরের, ততটাই মাঠের বাইরেরও। মাঠের বাইরেও রণ-কৌশলে একে অপরকে টেক্কা দিতে চাইবেন আলোহান্দ্রে মেনেন্দেজ ও শঙ্করাল চক্রবর্তী। এক সময় রিয়াল মাদ্রিদ কাসিয়ার কোচ ছিলেন মেনেন্দেজ। অন্যদিকে শঙ্করলাল কলকাতা ময়দানটা চেনেন হাতের তালুর মতো।
ডার্বির আগে জেনে নেওয়া যাক দুই পক্ষের সেনাপতিদের সম্পর্কে।
আলেহান্দ্রো মেনেন্দেজ গার্সিয়া - ইস্টবেঙ্গল
রিয়াল মাদ্রিদের যুব দলের প্রধান কোচ ছিলেন তিনি। ভারতীয় ফুটবলে বেশ নতুন। গত আগাস্টেই তাঁকে ম্যানেজার হিসেবে সই করায় লাল-হলুদ। তবে এই কাজে গত ১৬ বছরের অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। বেশিরভাগটাই অবশা্য স্পেনে। তাই তাঁর ফুটবল স্টাইলে স্প্যানিশ ছাপই দেখা যায়।
শঙ্করলাল চক্রবর্তী - মোহনবাগান
ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে ধারণা খুব পরিষ্কার শঙ্করলালের। একেবারে নিচের স্তর থেকে কোচিং করে করে আজ মোহনবাগানের মতো ক্লাবের কোচ হয়েছেন তিনি। টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমীর ফসল, শঙ্করলালের ফুটবলার হিসেবে কলকাতা ময়দানে পা পড়েছিল মোহনবাগানের হয়ে ১৯৯৬ সালে। চোটের জন্য ২০০২ সালে অবসর নিতে বাধ্য হন। ২০১৪ সালে তিনি মোহনবাগানের সহকারি কোচ হয়েছিলেন। তারপর এই মরসুমেই প্রধান কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন। কলকাতা ডার্বি সম্পর্কে ধারণার দিক থেকে শঙ্করলাল কিন্তু মেনেন্দেজের থেকে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন।
মেনেন্দেজের রণ-কৌশল
মেনেন্দেজ কিন্তু বেশ সরল ছকেই খেলতে পছন্দ করেন। বেশিরভাগ ম্যাচেই তাঁকে ৪-৪-২'তে দল সাজাতে দেখা গিয়েছে। তবে এস্কেদা না তাকায় ডার্বিতে হয়তো ৪-১-৪-১ ছকে খেলবেন। বল দখলে রেখে খেলতে পছন্দ করে তাঁণর দল। অনেকগুলি গোল কিন্তু এসেছে প্রতি আক্রমণ ও ক্রস থেকে। আরেকটি জায়গা হল সেট পিস। লাল-হলুদের আইলিগে ১১টি গোলের ৪টিই কিন্তু সেট পিসের ফসল।
শঙ্করলালের রণ-কৌশল
শঙ্করলাল চক্রবর্তীও ৪-৪-২ ছকে খেলিয়েছেন সবুজ-মেরুনকে। এক স্ট্রাইকারে খেলিয়েও দেখএ নিয়েছেন দলকে। সামনে কিসেকা-ডিকার মধ্যে দারুণ বোঝাপড়া রয়েছে। এছাড়া বাঁপ্রান্ত থেকে প্রায়ই কাট করে ভিতরে ঢুকে আসেন নর্ডেও। সেটপিস কিন্তু মোহনবাগানেরও শক্তির জায়গা। তাদের ৭ গোলের ৩টি এসেছে সেটপিস থেকে। অল্পের জন্য গোল হয়নি অনেকগুলি। তবে শঙ্করলালের দলের অন্যতম সম্পদ তাঁর দুই ফুলব্য়াক অরিজিত বাগুই ও অভিষেক আম্বেদকর। দুজনেই উঠে গিয়ে আক্রমণে সহায়তা করে থাকেন।
ইস্টবেঙ্গলে মেনেন্দেজ
আগস্টের শেষের দিকে ইস্টহবেঙ্গল ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন মেনেন্দেজ। মালয়েশিয়ার প্রাক মরসুম প্রস্তুতি ম্য়াচগলিতে ইস্টবেঙ্গলের যা ফল ছিল তাতে ,মর্থকদের বিপুল প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, আইলিগের প্রথম ৬ ম্য়াচে দল ভাল খেললেও প্রত্যাশাপূরণের কাছাকাছি পৌঁছায়নি। অবশ্য মনে রাখতে হবে এই দলও তাঁর বাছা নয়, তাছাড়া ভারতীয় ফুটবলে তিনি একেবারেই নতুন। তবে ডার্বির গুরুত্ব তিনি যত দ্রুত বুঝতে পারবেন, ততই ক্লাবের জন্য মঙ্গল।
মোহনবাগানে শঙ্করলাল
গত পাঁচ বছর ধরে বাগান শিবিরে রয়েছএন শঙ্করলাল। এই বছর সহকারি কোচ থেকে প্রদান কোচ হয়েছেন তিনি। অভিষেক লিগে তিনি খারাপ পারফর্ম করেননি। ৮ বছর বর সবুজ-মেরুনকে কলকাতা লিগ দিয়েছেন তিনি। আইলিগে প্রথম দুই ম্য়াচে ড্র-এর পর পর পর দুই ম্যাচ জিতে দারুণ ভাবে ফিরেছিল মোনবাগান। তারপর চার্চিলের কাছে ৩ গোলে হারতে হলেও পরের ম্যাচেই লিগ শীর্ষে থাকা চেন্নাই সিচটির বিরুদ্ধে দরুণ খেলেছে।