ডার্বিতে জাত চেনালেন মেনেন্দেজ! ইস্টবেঙ্গল কোচের মস্তিষ্কের কাছেই ৫ গোল খেল খালিদের বাগান
রবিবার (২৭ জানুয়ারি) কলকাতা ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেহান্ড্রো মেনেন্দেজ তাঁর জাত চেনালেন।
রবিবার (২৭ জানুয়ারি) যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ৯০ মিনিটই কলকাতার দুই প্রধানের মধ্যে সেরা ছিল ইস্টবেঙ্গল। খালিদ জামিলের মোহনবাগানকে দেখে কখনই মনে হয়নি তারা জিততে পারে। খালিদ লাল-হলুদ ছাড়ার পর গত একবছরে অনেক কিছুই পাল্টে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। নয়া স্পন্সসর কোয়েস বা বিশ্বকাপার জনি অ্যাকোস্টার কথা মাথায় রেখেও বলতেই হয়, সেরা বদল স্প্যানিশ কোচ আলেহান্দ্রো মেনেন্দেজ।
আইলিগের শুরুতে প্রথম দুই ম্যাচে জয় পাওয়ার পর ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে যখন দারুণ প্রত্যাশায় বুক বাঁধছিলেন সমর্খকরা, তখন মেনেন্দেজ জানিয়েছিলেন দল তার ক্ষমতার মাত্র ৪০ শতাংশ খেলছে। দুমাস পর আরো ভাল খেলার কথা বলেছিলেন। একা গত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের কথা। তিন মাস পর বড় ডার্বিতেই নিজের কথা সত্যি প্রমাণ করলেন স্প্যানিশ কোচ। তাঁর কৌশলের কাছেই হার মানলেন খালিদ।
পরিকল্পনা ও প্রয়োগ
বড় ম্যাচে ৯০ মিনিট ইস্টবেঙ্গলকে দেখে মনে হয়েছে একটি দুটি নয়, বেশ কিছু পরিকল্পনা করে দলকে মাঠে নামিয়েছেন মেনেন্দেজ। শুদু পরিকল্পনাই নয়, দীর্ঘ অনুশীলনের মাধ্যমে প্রতিটি পরিকল্পনার মাঠে নিখুঁত প্রয়োগের বিষয়টিও তিনি নিশ্চিত করেছেন। গত অগাস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মাত্র এই কয়েক মাসে এই অগ্রগতি ঘটলে দীর্ঘ মেয়াদে কিন্তু আরও ভাল ফল মিলতে পারে।
বোতল বন্দী সোনি
বড় ম্যাচে সোনি নর্ডের প্রভাব নিয়ে ম্যাচের আগে প্রশ্ন শুনে লাল-হলুদ কোচ মৃদু হেসে বলেছিলেন, রবিবার ৯০ মিনিটে দেখা যাবে। ম্যাচ দেখে বোঝা গেল নর্ডেকে বোতলবন্দীর পরিকল্পনা তাঁর আগেই করা ছিল আর তা নিখুঁতভাবে সাধন করলেন আইদারা ও চুলোভা। সোনি বল ধরে এগোবার চেষ্টা করলেই এই দুই লাল-হলুদ ফুটবলার ট্যাকলে এসেছেন।
বাকি কাজ
সোনিকে আটকেই অর্ধেক কাজ সেরে ফেলেছিলেন মেনেন্দেজ। বাগানের আক্রমণ ভোঁতা হয়ে গিয়েছিল। ডিকা ও কিসেকা এই মুহূর্তে তাঁদের সেরা ফর্মে নেই। এই দুজনকে নির্বিষ করার দায়িত্বে ছিলেন অ্যাকোস্টা ও বোরহা। তাঁদের ভোঁতা আক্রমণ রুখতে কোনও অসুবিধায় পড়েননি।
জাস্টিন-হাইমের চোর-পুলিশ
অপর দিকে নিজেদের আক্রমণে জাস্টিনের একটু পিছনে হাইমেকে রেখে ছক সাজিয়েছিলেন স্প্যানিশ কোচ। মোহনবাানের ম্যাড়েমেড়ে রক্ষণভাগের সঙ্গে গোটা ম্যাচে জায়গা অদলবদল করে প্রায় চোর-পুলিশ খেলে গেলেন জাস্টিন ও হাইমে। সবুজ-মেরুন রক্ষণ জাস্টিনকে ধরতে গেলে তিনি নেমে এসেছেন, সেই সঙ্গে হাইমে উঠে গিয়েছেন। আবার উল্টোটাও হয়েছে। প্রথম গোলটাও এই দুইজনের বল দেওয়া নেওয়ার ফসল।
ধারালো সেট পিস
ডার্বির আগে ক্লোজ ডোর অনুশীলনে রিয়াল মাদ্রিদ ক্যাসিয়ার প্রাক্তন কোচ সেট পিস অনুশীলনের উপর জোর দিয়েছিলেন। ম্যাচে তাসোনা ফলিয়েছে। দ্বিতীয় গোলটির সময় কর্নার থেকে একেবারে মাপা জায়গায় বল রেখেছিলেন রালতে। ক্রমশ তাঁর সেট পিস-এর ধার বাড়ছে। জবি জাস্টিন সোমবারের আগেই আরও দুই বার হেড থেকে গোল করেছিলেন। এইবারেও কোনও ভুল করেননি।