হকি বিশ্বকাপ ২০১৮: ২৮ বছর পর ফিরেই দারুণ লড়াই, শেষ পর্যন্ত হারতে হল ফরাসীদের
নিউজিল্যান্ড বনাম ফ্রান্স হকি বিশ্বকাপ ২০১৮-এর পুল এ ম্যাচের প্রতিবেদন।
২৮ বছর পর ফের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে ফ্রান্সের হকি দল। প্রথম ম্যাচে বৃহস্পতিবার তাদের মোকাবিলা ছিল চলতি বছরে কমনওয়েলথ গেমসে রুপোজয়ী নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে হারতে হলেও প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত হার না মানা লড়াই-এর নিদর্শন রাখল তারা।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে গোল করলেন কেন রাসেল (১৭') ও স্টিফেন জেনেস (৫৬')। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে ফরাসী দলের পক্ষে একটি গোল শোধ দেন ভিক্টর শার্লেট (৫৯)।
বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনা বনাম স্পেনের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচটি ততটাও জমল না। ধারে ভারে হকি বিশ্বে কিউইদের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ফ্রান্স। বস্তুত অই বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দেশগুলির মধ্যে ক্রমতালিকায় সবচেয়ে নিচে থাকা (২০তম) দলটি হল ফ্রান্স। আর মিফজিল্যান্ড আছে ৮ নম্বরে।
ম্যাচে কিন্তু এই ফারাকটা সেভাবে প্রতিফলিত হল না। কিউইদের স্চটিক থেকেই ম্যাচের প্রথম আক্রমণ এলেও প্রথম কোয়ার্টারে কিন্তু প্রাধান্য ছিল ফরাসী দলেরই। তবে তাদের খেলায় সৃষ্টিশীলতার অভাব চোখে পড়ছিল। এর মধ্যেই ফ্রাঙ্কোয়েস গোয়েতের ক্রস থেকে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন ফরাসী খেলোয়াড় টিমোথি ক্লেমেন্ট।
এরপরই নড়ে চড়ে বসে নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় কোয়ার্টারের শুরুতেই ম্যাচের ১৭তম মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে চমৎকার ড্রিবলিংয়ে ফরাসী রক্ষণ ভেদ করে ঢুকে গোল করে যান কেন রাসেল। এর পাঁচ মিনিট পরেই আক্রমণে গিয়েছিলেন ক্লেমেন্ট। কিন্তু তাঁণর রিভার্স শট তিনকাঠির মধ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
এই কোয়ার্টারের শেষে গ্রিন কার্ড দেখতে হয় গোলদাতা রাসেলকে। ফলে তৃতীয় কোয়ার্টারের প্রথম পাঁচ মিনিট তিনি খেলতে পারেননি। বিরতিতে নিউজিল্যান্ড ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল।
বিরতির পর দারুণভাবে শুরু করেছিল ফ্রান্স। তবে ধারে ভারে এগিয়ে থাকা কিউইরা সেই চাপ সামলে তাদের পেনাল্টি বক্সের বাইরেই আটকে রাখছিলেন। তবে এর মধ্যে ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে নিউজিল্যান্ডের ডিফেন্স চেরা ক্রসে স্টিক ছোঁয়ালেও অল্পের জন্য বল গোলে রাখতে পারেননি ফরাসী আক্রমণভাগের খেলোয়াড় তাইনেভেজ। ম্যাচের ৩৮ তম মিনিটে খেলার প্রথম পেনাল্টি কর্নারটিও আদায় করে ফরাসীরাই। তবে গোল করতে পারেনি অধিনায়ক শার্লেট।
তৃতীয় কোয়ার্টারে কোনও গোল না আসলেও তিন তিনটি গোল হয় চতুপর্থ কোয়ার্টারের একেবারে শেষ দিকে। এই অর্ধেও ফরাসীরা যথেষ্টই দাপট দেখায়। ৫৪ মিনিটে পর পর দুটি পেনাল্টি কর্ণার পেয়েও গোল করতে পারেননি শার্লেট। বা বলা ভাল তাকে রুখে দিয়েছেন নিউজিল্যান্ড গোলরক্ষক রিচার্ড জয়েস।
ম্যাচের গতির বিরুদ্ধে ৫৬ মিনিটের মাথায় দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন কিউই ফরোয়ার্ড জেনেস। মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বল ঠান্ডা মাথায় ধরে জোরালো ব্যাকহ্যান্ড শটে ফরাসী গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।
ম্যাচের একেবারে শেষে ৫৯ মিনিটে আরও একটি পেনাল্টি কর্নার থেকে অবশেষে গোল পান ফরাসী অধিনায়ক শার্লেট। নিউজিল্যান্ড রিভিউ নিলেও গোলটি বৈধ বলেই স্বীকৃতি পায়।