ঈশ্বরের পতন! তাই আর বাঁচতে চাইলেন না মেসি-ভক্ত কেরালার এই যুবক
আর্জেন্টিনার হারের পর থেকে নিখোঁজ কেরালার অন্ধ মেসি-ভক্ত যুবকের লাশ উদ্ধার হওয়ার হল কোট্টায়মে একটি সেতুর নিচে
লিওনেল মেসি চিনতেন না দিনু অ্যালেক্সকে। চেনা সম্ভবও নয়, সেই কোন সুদূর নক্ষত্রে তাঁর বাস! আর দিনু থাকতেন কেরালার কোনও এক আরুমানুর গ্রামে। কিন্তু, মেসির অজান্তে দিনুর মতো বিশ্ব জুড়ে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁরা মেসির আনন্দে লাফিয়ে ওঠেন, মেসির দুঃখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মেসির সঙ্গেই শ্বাস নেন। তাই বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ০-৩ গোলে পর্যুদস্ত হওয়ার পর পৃথিবীটাকে দেখার ইচ্ছেই চলে গিয়েছিল দিনুর। শুক্রবার ভোর থেকেই তাঁর খোঁজ মিলছিল না। রবিবার উদ্ধার হল তাঁর নিথর দেহ।
৩০ বছরের যুবকটি ছিলেন মেসি অন্তঃপ্রাণ। তাঁর মোবাইলের ওয়ালপেপারটিও সাজিয়ে নিয়েছিলেন নায়কের ছবিতে। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের কাছে আটকে গেলেও আশা ছাড়েননি অ্যালেক্স। পরের ম্যাচেই নায়ক জ্বলে উঠে ঝলসে দেবেন লুকা মড্রিচদের - এই আশাতেই আর্জেন্টিনার দশ নম্বর একটা জার্সি কিনে সেটা গায়ে গিয়েই রাতে বসেছিলেন মেসির জয় দেখতে।
ওই তাঁকে শেষ দেখেছিলেন পরিবারের লোকেরা। তারপর শুক্রবার সকালে তাঁর মা রান্না করতে গিয়ে রান্নাঘরের পেছনের দরজা খোলা দেকএন। দিনুর ঘরে গিয়ে তাঁর দেখা না মেলায় ডেকে তোলেন তাঁর বাবাকে। দুজনে মিলে খোঁজাখুঁজি করে পান দিনুর লেখা একটি সুইসাইড নোট। তাতে লেখা ছিল, 'আমার আর কিছু দেখার বাকি নেই। আমি মৃত্যুর গভীরে চললাম।'
এরপরই তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ, তদন্ত করে কোন সূত্র না পেয়ে কাজে লাগায় ডগ স্কোয়াডকে। পুলিশ কুকুর দিনুর বাড়ি থেকে গন্ধ শুঁকে শুঁকে মীনাচল নদীর কাছে যায়। এই নদীটি দিনু অ্যালেক্সদের বাড়ি থেকে বেশি দূরে নয়। নদার ধার দিয়েই তল্লাশি শুরু হয়। এদিন ভোরে কোট্টায়ম নর্থ থানার কাছে একটি ব্রিজের নিচে দিনুর মৃতদেহ মেলে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ একে আত্মহত্যার ঘটনাই বলছে। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শোচনীয় হার ছাড়া, মেসি-ভক্ত দিনু অ্যালেক্সের এই সিদ্ধান্তের আর কোনও কারণও পাওয়া যাচ্ছে না। দিনু প্রমাণ করে দিয়ে গেলেন ভারতের মতো ক্রিকেটের দেশেও কারো কারো ধর্মের নাম ফুটবল, আর তার ঈশ্বর লিওনেল মেসি। ঈশ্বর কি সব দেখছেন? সব শুনছেন?