সম্ভবত শেষ বিশ্বকাপ! ক্লাব ফুটবলের 'মসিহা' মেসি কি পারবেন মারাদোনাকে ছুঁতে
২০০৬, ২০১০, ২০১৪ সালের পর এবছর ২০১৮ বিশ্বকাপ মিলিয়ে মোট চারবার বিশ্বকাপে নামছেন মেসি।
ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। এই মুহূর্তে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো না লিওনেল মেসি কে এগিয়ে তা নিয়ে সবসময় তুলনা চলছে। তবে বা পাঁয়ের খেলোয়াড় হিসাবে দিয়েগো মারাদোনার পরে মেসিই সর্বকালের সেরা তা নিঃসন্দেহে বলাই যায়। এফসি বার্সেলোনার হয়ে ঘরোয়া লিগে খেলা মেসি বিশ্বকাপ বাদে ক্লাব স্তরের সমস্ত ট্রফি জিতে ফেলেছেন। বাকী রয়েছে শুধু এই ট্রফিটিই। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্তিনা। সকলে ভেবেছিলেন, এবার বুঝি মেসি ট্রফি জিতবেন। তবে ফাইনালে জার্মানির কাছে ০-১ গোলে হেরে যেতে হয়েছে।
আর্জেন্তিনার গোলমেশিন
আর্জেন্তিনার হয়ে ১২০টির বেশি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। গোল করেছেন ৬৪টি। বার্সেলোনার হয়ে ৩২টি ট্রফি জিতেছেন মেসি। তার মধ্যে নয়টি লা লিগা, ছয়টি স্প্যানিশ কাপ, চারটি ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ রয়েছে। এছাড়া ব্যক্তিগত স্তরে তিনি নিজে পাঁচবার বিশ্বের সেরা ফুটবলারের শিরোপা পেয়ে ব্যালন ডি অর জিতেছেন।
বার্সায় রেকর্ড
১৭ বছর বয়সে মেসি প্রথম খেলতে আসেন। সেটা ২০০৪ সাল। তারপর থেকে একেরপর এক রেকর্ড ভেঙেছেন মেসি। ক্লাবের হয়ে ৬০০টির বেশি গোল করেছেন। এবং লা লিগা ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৩৮৩টি গোল করেছেন যা রেকর্ড। এক ক্যালেন্ডার বছরে ৯১টি গোল করেছেন মেসি। তিনি একমাত্র খেলোয়াড় যিনি সবচেয়ে বেশিবার লা লিগা ও কোপা আমেরিকা জিতেছেন।
বার্সায় কেরিয়ার শুরু
মধ্য আর্জেন্তিনার রোসারিওতে মেসির জন্ম। কিশোর বয়সের আগেই তাঁর গ্রোথ হরমোনের সমস্যা দেখা দেয়। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি বার্সেলোনার জুনিয়র দলে সই করেন। তার মাত্র ৪ বছরের মাথায় তিনি সিনিয়র দলে খেলতে শুরু করেন। এবং প্রথম থেকেই সাড়া ফেলে দেন। ২০০৮-০৯ সালে প্রথমবার তিনি ব্যালন-ডি-অর জেতেন।
বিশ্বকাপে দেশের হয়ে রেকর্ড
দেশের হয়ে মেসি সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন। ২০০৮ সালে অলিম্পিকে সোনা জেতে আর্জেন্তিনা। ২০০৫ সালে জাতীয় দলে তাঁর পথ চলা শুরু হয়। ফিফা বিশ্বকাপে খেলা ও গোল করা সবচেয়ে কমবয়সী আর্জেন্তিনীয় হলেন মেসি। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে এই রেকর্ড গড়েন তিনি।
অধরা বিশ্বকাপ
২০১১ সালে মেসি আর্জেন্তিনার অধিনায়ক হন। তারপরে ২০১৪ বিশ্বকাপ, ২০১৫ কোপা আমেরিকা ও ২০১৬ কোপা আমেরিকা কাপে দলকে ফাইনালে তোলেন মেসি। তবে তিনটি ফাইনালই হারতে হয়েছে। এরপরে ২০১৬ সালে মেসি অবসর নিলেও পরে ফিরে এসে দেশকে বিশ্বকাপের মূলপর্বে তুলেছেন। শেষ ম্যাচে ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিকও রয়েছে মেসির।
সম্ভবত শেষ বিশ্বকাপ
২০০৬, ২০১০, ২০১৪ সালের পর এবছর ২০১৮ বিশ্বকাপ মিলিয়ে মোট চারবার বিশ্বকাপে নামছেন মেসি। সম্ভবত এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। এবার যদি কাপ জিততে না পারেন তাহলে মারাদোনার সঙ্গে তুলনা হলেও মেসি সবসময়ই পিছিয়ে থাকবেন। কারণ মারাদোনা দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন, যা মেসি এখনও পারেননি। আর্জেন্তিনা মোট দুবার ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জিতেছে। আর মেসি এবার বিশ্বকাপ হাতে তুলতে পারেন কিনা মেসি, সেটাই এখন দেখার।