মেসির সঙ্গে টক্কর সারা ফুটবল মরশুম, এবার সালাহর লড়াই ‘নীল নদের দেশে’র জন্য
রূপকথার মতোই উত্থান সালাহর। রূপকথার মতোই বিশ্বকাপের আসরে প্রবেশ মিশরের। একেবারে শেষ মিনিটের থ্রিলার। জমজমাট লড়াই।
রূপকথার মতোই উত্থান সালাহর। রূপকথার মতোই বিশ্বকাপের আসরে প্রবেশ মিশরের। একেবারে শেষ মিনিটের থ্রিলার। জমজমাট লড়াই। শেষ মিনিটে পেনাল্টি গোলে রাশিয়ার দরজা খুলে গিয়েছিল মহম্মদ সালাহদের। এবার সেই উত্থানের ইতিহাসকে পাথেয় করেই সুরাজ-কাভানিদের উরুগুয়ের মুখোমুখ সালাহ।
৮ অক্টোবর ২০১৭। নীল নদের দেশ মিশরের কাছে ডু অর ডাই ম্যাচ। জিতলে রাশিয়ার টিকিট, ড্র করলে বা হারলেই আবারও একটা স্বপ্নভঙ্গ। এই পরিস্থিতিতে খেলতে নেমেছিল মিশর। কঙ্গোর বিরুদ্ধে মহাগুরুত্বপূর্ণ সেই ম্যাচে পিরামিডের দেশ এগিয়েই ছিল ৮৭ মিনিট পর্যন্ত। তখনই ঝটিকা আক্রমণের মুখে গোল খেয়ে বসে সালাহরা। আরও একটা স্বপ্ন ভঙ্গের আশঙ্কা তখল গ্রাস করেছে আলেকজান্দ্রিয়া ব্রুজ আল আরূ স্টেডিয়ামে।
তখনই ঝলছে উঠেছিলেন মহম্মদ সালাহ। মিশরের 'মেসি' হয়ে উঠে বিপক্ষের বক্স ফালাফালা করে দিয়েছিলেন একাই। শেষমেশ তাঁকে আটকাতে অবৈধ ট্যাকেল করে বসেন কঙ্গোর ডিফেন্ডার। আর সেই ট্যাকলেই ২৮ বছর বাদে ফের বিশ্বকাপে ফিরিয়ে নিয়ে আসে নীল নদের দেশকে। সালাহদের সোনালি প্রজন্মের হাত ধরে রাশিয়ার টিকিটও পেয়ে যায় মিশর।
এর আগে দুবার বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছিল মিশর। প্রথমবার ১৯৩৪-এ, দ্বিতীয়বার ১৯৯০-এ। আর এই নিয়ে তিনবার মিশর বিশ্বকাপের আসরে। আফ্রিয়ান কাপ অফ নেশন্সে টানা সাতবার জিতে চমকপ্রদ সাফল্য পেলেও বারবার তাঁদের বিশ্বকাপে প্রবেশ বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। এবার সালাহ-র হাত ধরে তাঁরা নতুন কোনও সাফল্যের ইতিহাস লিখতে পারেন কি না তা-ই দেখার। আর তার জন্য অপেক্ষা ছিল এই দিনটারই।
১৯৯০ সাল থেকে ২০১৪ মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তরণ ঘটেছে। মিশর একটা সময় বিশ্ব ক্রমতালিকায় ৯ নম্বরে উঠে আসে। বর্তমানে তাদের অবস্থান ৪৬-এ। এ গ্রুপে মিশর ও উরুগুয়ের সঙ্গে রয়েছে সৌদির আরব ও রাশিয়া। প্রথম ম্যাচে রাশিয়া সৌদি আরবকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে। এদিন গ্রুপের সবথেকে শক্তিধর দেস উরুগুয়ের মুখোমুখি মিশর। তারুণ্যের ভরা এই দলের প্রধান শক্তি সালাহ। সালাহ এবার মিশররে তুরুপের তাস। বাছাইপর্বে মিশরের হয়ে ৭০ শতাংশেরও বেশি গোল এসেছে তাঁর পা থেকে।
শুধু তাই নয়, এবার ব্যালন ডিওর লড়াইয়ে মেসিকে সমানে টক্কর দিয়ে গিয়েছে সালাহ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন তিনি। সাকুল্যে এ বছর গোলদাতা হিসেবে মেসির পরেই অবস্থান তাঁর। এক্ষেত্রে সালাহ পিছনে ফেলে দিয়েছেন রোনাল্ডোকেও। তিনি বিশ্ব ফুটবলে মিশরের 'মেসি' হিসেবেও ইতিমধ্যে পরিচিত হয়ে উঠেছে। মেসি-রোনাল্ডের সঙ্গেও তুলনায় চলে এসেছেন তিনি। সেই সালাহ-র হাত ধরে মিশর কোনও স্বপ্ন রচনা করতে পারেন কি না, সেদিকেই তাকিয়ে মিশরবাসী। তাকিয়ে বিশ্ব ফুটবলও।