'পদ্মভূষণ' বাচেন্দ্রী পাল - অ্যাডভেঞ্চারই তাঁর জীবন, সর্বোচ্চ শৃঙ্গকেও নামিয়েছিলেন পায়ের নিচে
এই বছর পদ্মভূষণ পেলেন বাচেন্দ্রী পাল। ১০৮৪ সালে তিনি প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছিলেন।
এই বছর ভারত সরকার পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করল বাচেন্দ্রি পালকে। ১৯৮৪ সালে প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে তিনি পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেষ্ট জয় করেছিলেন। বয়স বর্তমানে ৬০ পেরিয়ে গেলেও এখনও অ্যাডভেঞ্চার তাঁকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। ২০১৮ সালেও উত্তরাখণ্ডে তিনি গঙ্গাবক্ষে একমাস ব্যপি একটি রিভার রাফ্টিং কর্মসূচী পরিচালনা করেছেন।
উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল জেলায় তাঁর জন্ম। তাঁর জন্মের ঠিক ৫ দিন পরেই প্রথমবার এভারেস্টের মাথায় পা রেখেছিলেন তেনজিং নোরগে ও এডমন্ড হিলারি। মাত্র ১২ বছর বয়স থেকেই বাচেন্দ্রি পর্বতারোহন শুরু করেছিলেন। জাতীয় পর্বতারোহন ইনস্টিটিউটের হয়ে তিনি ১৯৮২ সালেই গঙ্গোত্রী, রুদ্রগিরির মতো অপেক্ষাকৃত কম উচ্চতার শৃঙ্গ জয় করেছিলেন।
এরপর ১৯৮৪ সালে ভারতের প্রথম পুরুষ-মহিলা সম্মিলিত দলের মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে সুযোগ পান। সেই দলে বাচেন্দ্রিকে নিয়ে ছিলেন ৬ জন মহিলা ও ১১ জন পুরুষ। কাঠমান্ডু থেকে তাঁরা আরোহন করেছিলেন। তবে সেই অভিযামনে চরম বিপদের সম্মুখিনও হতে হয়েছিল তাঁদের।
বরফ ধসে তাঁদের ক্যাম্প চাপা পড়ে গিয়েছিল। দলের অর্ধেকের বেশি অভিযাত্রী আহত হয়ে নেমে যেতে বাধ্য হন। ১৯৮৪-এর ২২মে শেরপা আং দোরজে-র সঙ্গে সাউথ কল দিয়ে বাচেন্দ্রীরা শৃঙ্গ জয় করেছিলেন। সেই মুহূর্তের বর্ণতা দিতে গিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন যে কোনও পাহাড়ি মানুষের মতোই পাহাড় তাঁর কাছে দেবতার মতো। আর এভারেস্টে পা রেখে তাঁর অনুভূতিটাও ছিল স্বর্গীয়।
এরপরে ১৯৯৩ সালের ইন্দো-নেপালি মহিলাদের মাউন্ড এভারেস্ট অভিযানেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন। তার পরের বছর দ্য গ্রেট অন্জডিয়ান উইমেন রাফ্টিং ভয়েজ-এও তিনি অংশ নেন। ৩৯ দিনে তাঁরা গঙ্গা বেয়ে হরিদ্বার থেকে কলকাতা এসেছিলেন। পরবর্তীকালে যেখানেই অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধ পেয়েছেন ছুটে গিয়েছেন তিনি।
জীবনে পুরস্কার ও সম্মানও কম পাননি তিনি। ভারত সরকার তাঁকে ১৯৮ সালে অর্জুন পুরস্কার দিয়েছিল। ১৯৮৪-তে তিনি পদ্মশ্রী পেয়েছিলেন। এইবার পেলেন দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানও।