মহম্মদ শামি থেকে শুভমান গিল - একদিনের সিরিজ থেকে ভারতের হাতে জবাব এল পাঁচ প্রশ্নের
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সদ্য-সমাপ্ত ওয়ানডে সিরিজ থেকে ভারতের ৫ প্রাপ্তি।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম তিন ম্যাচেই একপেশেভাবে সিরিজ জিতে নিয়েছিল ভারত। তারপর অবশ্য হ্যামিল্টনে খেতে হয়েছিল হাতুড়ির ঘা। বোল্টের ৫৬ বিদ্যুত ঝলকে ঝলসে গিয়েছিল ভারতীয় ব্য়াটিং লাইনআপ। মাত্র ৯২ রানেই অলআউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু পঞ্চম ম্যাচেই ভারত প্রমাণ করে দিয়েছে, ওই ম্যাচটি ছিল নেহাতই ব্যতিক্রম।
এই সিরিজ জয়ের পর ভারত আইসিসির একদিনের ক্রমতালিকা ২ নম্বরে উঠে এসেছে। বিশ্বরকাপের মাসতিনেক আগের একদিনের সিরিজে, সিরিজ জেতা বা ক্রমতালিকায় এগনোর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। বস্তুত অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর কিউইর দেশেও ভারত এসেছিল বেশ কয়েকটি বিশ্বকাপ সংক্রান্ত প্রশ্ন নিয়ে। জবাব মিলেছে সবগুলিরই।
তৃতীয় জোরে বোলার
একদিনের দলে গত এক বছর ধরে যেভাবে ধারাবাহিক ভাল পারফর্ম করে গিয়েছেন ভুবি-বুমরা জুটি। তাদতে দলে প্রথম দুই জোরে বোলারের জায়গাটা পাকা তাঁদের। প্রশ্ন ছিল তৃতীয় জোরে বোলার নিয়ে। এই জায়গায় গত এক বছরে ভারত খলিল আহমেদ, মহম্মদ সিরাজ, সিদ্ধার্থ কল, দীপক চাহারদের খেলিয়ে দেখেছে। কেউই এই স্থানটি নিতে পারেননি পাকাপাকি ভাবে। অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ডে (৪ ম্য়াচে ৯ উইকেট) দুর্দান্ত বোলিং করে এই জায়গাটায় নিজের দাবি জোরালো করেছেন অভিজ্ঞ পেসার মহম্মদ শামি।
স্পিনার জুটি
সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের ছিলেন কুম্বলে-হরভজন, ধোনির ছিলেন জাদেজা-অশ্বিন। তেমনই বিরাট কোহলির দলে স্পিনার জুটি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছেন দুই রিস্ট স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহাল। এশিয়া কাপ থেকে রবীন্দ্র জাদেজা নিয়মিত ভাল বল করায় কোন দুই স্পিনার প্রথম দলে খেলবেন তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। কিন্তু নিউজিল্যান্ডে কুল-চা প্রমাণ করে দিয়েছেন, দুজনে জুটিতে যে চাপ তৈরি করতে পারেন তার তুলনা এখন অন্তত ভারতীয় দলে নেই।
অলরাউন্ডার স্লট
যে কোনও সফল ওয়ানডে দলে ভারসাম্য আনেন অলরাউন্ডাররা। হার্দিক পাণ্ডিয়া ও কেদার যাদব দুজনেই এই সিরিজে যথেষ্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন এবং তার মধ্যে নিজেদের মূল্য বুঝিয়ে দিয়েছেন। ব্যাটে বলে ঠিক যে খেলাটা দলের ৬ ও ৭ নম্বরের কাছ থেকে আশা করা হয়, তাঁরা ঠিক সেটাই করে দেখিয়েছেন।
মিডল অর্ডার
অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে ভারতের সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ ছিল মিডল অর্ডার। অজিদের বিরুদ্ধে ফর্মে ফিরে ভারতকে কিছুটা নিশ্চিন্ত করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। নিউজিল্যান্ডে কিন্তু রায়ডু ও কার্তিক দেখিয়ে দিয়েছেন, তাঁরাও এই পর্যায়ে একেবারে মানানসই। বিশেষ করে রায়ডুকে নিয়ে এবার অন্তত প্রশ্ন ওঠা বন্ধ হওয়া উচিত।
অপেক্ষা বাড়ল তিনজনের
এই সিরিজের পর আপাতত বিশ্বকাপের আগে আর মহম্মদ সিরাজ, খলিল আহমেদ ও শুভমান গিলের জন্য ভারতীয় দলের দরজা বন্ধ হওয়ার কথা। তিনজনেই নিঃসন্দেহে প্রতিভাবান। ভবিষ্যতে হয়ত তিনজনেই দীর্ঘদিন ভারতীয় দলের হয়ে খেলবেন। কিন্তু ২০১৯ বিশ্বকাপটা তিনজনের জন্যই তাড়াহুড়ো করা হবে।