প্রহর গুনছেন শুভমান, এবার মজুত-শক্তি যাচাইয়ের পালা! হ্যামিল্টনে কারা থাকবেন ভারতীয় দলে - পূর্বাভাস
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪র্থ ওডিআই-তে ভারতীয় দলে শুভমান গিলের মতো রিজার্ভ বেঞ্চের কয়েকজন খেলোয়াড় সুযোগ পেতে পারেন।
ভারত সম্ভবত আশাও করেনি। কিন্তু দুই ম্য়াচ বাকি থাকতেই নিউজিল্যান্ডে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য সম্পূর্ণ হয়েছে। প্রথম তিন ম্যাচে শুধু জয় নয় একেবারে একপেশে ভাবে খেলে মেন ইন ব্লুজ একেবারে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে ব্ল্যাক-ক্যাপস'দের। ডেপুটি রোহিতের হাতে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বাকি নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য বিশ্রামে গিয়েছেন বিরাট কোহলি। ফলে ভারতের সামনে হঠাৎ করেই উদ্ভূত হয়েছে এক দারুণ সুযোগ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) হামিল্টনে সিরিজের চতুর্থ একদিনের ম্যাচ খেলতে নামছে নিউজিল্যান্ড ও ভারত। এই ম্যাচ ভারতের অস্থায়ী অধিনায়ক রোহিত শর্মার ২০০তম ওডিআই। তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় দলের লক্ষ্য বিশ্বকাপের আগে রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি যাচাই করে নেওয়া। শুভমান গিলের অভিষেক হওয়াটা একরকম নিশ্চিত। শিকে ছিঁড়তে দলে নিয়মিত সুযোগ না পাওয়া আরও অনেক ক্রিকেটারকেই।
দেখে নেওয়া যাক বৃহস্পতিবার, হামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টতুর্থ একদিনের ম্যাচে ভারতীয় দলের সম্ভাব্য প্রথম একাদশ -
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক)
কাকতালীয়ভাবে তাঁর ২০০তম ম্যাচে দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব পেয়েছেন রোহিত। অতীতে দেখা গিয়েছে অধিনায়কের টুপিটা মাথায় উঠলে তাঁর খেলার ধার আরও বেড়ে যায়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় একদিনের ম্যাচে তিনি পর পর দুটি অর্ধশতরান করেছেন। তবে এই সিরিজে এখনও তাঁর হাত থেকে একটি শতরান আসেনি। ব্যাটসম্য়ান হিসেবে সেই লক্ষ্যপূরণের পাশাপাশি তিনি শেষ দুই ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবে ভারতের জয়ের ধারা বজায় রাখতে চাইবেন।
শিখর ধাওয়ান
প্রথম দুই ম্যাচে অর্ধশতানের পর তৃতীয় ম্যাচে ফের একবার দারুণভাবে শুরু করেও বড় রান পাননি গব্বর। তৃতীয় ম্যাচে তিনি নিশ্চিতভাবে ফের রানে ফিরতে চাইবেন। অনেকদিন তাঁর হাত থেকে শতরানের ইনিংস দেখা যায়নি। হামিল্টনে আসে কিনা সেটাই দেখার।
শুভমান গিল
বিরাট কোহলি যখন স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার সঙ্গে ছুটি কাটাতে ব্যস্ত থাকবেন, তখন তাঁর জায়গায় অভিষেক হওয়া প্রায় নিশ্চিত আরও এক উত্তেজক তরুণ ভারতীয় প্রতিভা শুভমান গিলের। তাঁর সম্পর্কে ভারতীয় শিবির ছাড়ার আগে কোহলি জানিয়েছেন, শুভমানের বয়সে নাকি কোহলি তাঁর ১০ শতাংশও খেলতে পারেন না। কোহলির মতোই শুভমানও অনুর্ধ্ব১৯ বিশ্বকাপ জিতেছেন। ৯টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে তাঁর ১০৮৯ রান রয়েছে। এছাড়া ৩৬টি লিস্ট এ ম্যাচ খেলে তিনি ১৫২৯ রান করেছেন। শুভমান এই ফয়সালা হয়ে যাওয়া সিরিজের বাকি দুই ম্যাচের প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারেন।
আম্বাতি রায়ডু
কোহলির কথায় ইঙ্গিত মিলেছে, বিশ্বকাপে ভারতীয় ব্য়াটিং-এর চতুর্থ স্থানটি এখনও নিশ্চিত হয়নি। এই সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে রায়ডু এই স্থানে ব্য়াট করতে এসে খুব একটা চোখে পড়ার মতো না হলেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তবে বাকি থাকা ম্যাচে আরও বড় রান করে তিনি চতুর্থ স্থানে প্রথম পছন্দ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইবেন।
এমএস ধোনি অথবা দীনেশ কার্তিক
তৃতীয় ম্যাচে হ্যামস্ট্রিং-এ চোটের জন্য খেলতে পারেননি এমএস ধোনি। প্রাক্তন অধিনায়ক হামিল্টনে খেলতে পারবেন কিনা, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট করেনি ভারতীয় দল। বুধবার (৩০ জানুয়ারি) অবশ্য ধোনিকে দলের সঙ্গে নেট অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছে। তবে সিরিজ জেতা হয়ে গিয়েছএ, ধোনিও ফর্মে ফিরেছেন, তাই তাঁকে আরও একটা ম্যাচ বিশ্রাম দিতেই পারে দল। সেই ক্ষেত্রে আরও একবার উইকেটরক্ষক হিসেবে খেলবেন দীনেশ কার্তিক। তৃতীয় ম্যাচে প্রথম সুযোগে কিন্তু তিনি ম্য়াচ জিতিয়ে তবেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছিলেন।
কেদার যাদব
চলতি সিরিজে একটিমাত্র ম্যাচেই ব্যাট করা সুযোগ পেয়ে কেদার ১০ বলে ২২ রান করেছিলেন। তাঁর ঝোড়ো ব্য়াটিং-এই ভারতের রান ৩০০ অতিক্রম করেছিল। বল হাতেও বেশ কয়েকটি উইকেট নিয়েছেন তিনি। দলের ৬ নম্বর হিসেবে প্রত্যাশা পূরণ করেছেন তিনি।
হার্দিক পাণ্ডিয়া
প্রত্যাবর্তনেই প্রভাবিত করেছেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। দুটি উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি চাহালের বলে তাঁর নেওয়া কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনে দুর্দান্ত ক্যাচটি নিয়ে বহু চর্চা হয়েছে। বিরাট জানিয়েছিলেন বিতর্ক থেকে ফিরে আরও ভাল ক্রিকেটার হয়ে উঠতে পারেন পাণ্ডিয়া। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে কিন্তু তার ইঙ্গিত মিলেছে।
ভুবনেশ্বর কুমার
এখনও অবধি সিরিজে নতুন বল হাতে একেবারে নিখুঁত বল করেছেন ভুবি। শামির সঙ্গে জুটি বেঁধে একদিকে শুরুর ওভার গুলোয় রান আটকে রেখেছেন। আবার প্রথম পাওয়ার প্লের মধ্যে প্রতিপক্ষের অন্তত দুটি উইকেট তুলে নেওয়াটা অভ্যাসে পরিণত করেছেন।
কুলদীপ যাদব
প্রথম দুই ম্যাচ থেকে ৮ উইকেট সংগ্রহ করার পর তৃতীয় ম্যাচে চায়নাম্যান কুলদীপ ছিলেন উইকেটবিহীন। রস টেলর ও ল্যাথাম কিন্তু বেশ ভাল খেলে দিয়েছিলেন তাঁকে। তবে পর পর দুই ম্যাচে কুলদীপ উইকেটহীন - এমনটা কিন্তু সচরাচর ঘটে না।
যুজবেন্দ্র চাহাল
প্রতি ম্যাচেই ২টি করে উইকেট নিয়েছেন চাহাল। কুলদীপের মতো তাঁকেও তৃতীয় ম্যাচে খেলতে অসুবিধায় পড়েননি রস টেলর ও ল্যাথাম। তারপরেও কেন উইলিয়ামসেনর উইকেট নিয়ে তিনি কুলদীপের সঙ্গে জুটিতে ১০০ ওডিআই উইকেটের মাইলস্টোনে পৌঁছান। বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর উইকেট নেওয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাইবেন।
খলিল আহমেদ অথবা মহম্মদ সিরাজ
সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন বাংলার পেসার। সাধারণত এমন ছন্দে থাকলে বোলাররা বিশ্রাম নিতে চান না। কিন্তু গত ডিসেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট ম্যাচ থেকে একটানা মাঠে রয়েছেন শামি। কাজেই এইবার তাঁকে একটু শ্বাস নেওয়ার সময় দেওয়া দরকার। তাঁর বদলে দলে আসতে পারেন বাঁহাতি পেসার খলিল আহমেদ অথবা মহম্মদ সিরাজ। অস্ট্রেলিয়ায় সিরাজের অভিষেকটা মোটেই ভাল হয়নি। কাজেই দলে সুযোগ পাওয়ার বিষয়ে একটু হলেও এগিয়ে আছেন খলিল আহমেদ।