শুরুর কাঁপুনি সামলালো মিডল অর্ডার, বাকি কাজ বোলাররা - কিউইর দেশে ভারতের সবচেয়ে বড় জয়
ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম ওয়ানডে ৩৫ রানে জিতে ভারত ৪-১ ফলে সিরিজ শেষ করল।
হ্যামিল্টনের মতো রবিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ওয়েলিংটনেও নিউজিল্যান্ড বোলাররা ধস নামিয়েছিলেন ভারতের টপ অর্ডারে। কিন্তু তারপর রায়ডু (৯০), হার্দিক (৪৫) ও বিজয় শঙ্কর (৪৫)-এর অবদান ও বোলারদের আরও এক দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভারত ৩৫ রানে জয়ী হল। ফলে ৪-১ ফলে সিরিজ জিতে কিউইর দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে সিরিজ জিতল ভারত। ম্যাচের সেরা হলেন আম্বাতি রায়ডু। সিরিজ সেরা হলেন মহম্মদ শামি।
এদিনের ম্য়াচটিকে বলা যেতে পারে দুই পক্ষর মিডল অর্ডারের লড়াই। প্রথম পাওয়ার প্লে-তেই মাত্র ১৮ রানে ভারতের ৪ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। ফিরে গিয়েছিলেন ভরসার ধোনিও। সেখান থেকে প্রথমে বিজয় শঙ্কর ও পরে কেদার যাদব (৩৪)-এর সঙ্গে যথাক্রমে ৯৮ ও ৭৪ রানের দুটি জুটি গড়ে অবস্থা সামাল দেন আম্বাতি রায়ডু। শেষের ওভারগুলিতে হার্দিক পাণ্ডিয়া ২২ বলে ৪৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ভারতকে ২৫২ রানে পৌঁছে দিয়েছিলেন।
উল্টো দিকে রান তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ডও দ্রুত কিছু উইকেট হারিয়েছিল। দশ ওভার যেতে না যেতেই দুই কিউই ওপেনার হেনরি নিকোলস (৮) ও কলিন মুনরো (২৪)-কে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শামি। তারপরের ওভারেই ফর্মে থাকা রস টেলর কে মাত্র ১ রানে এলবিডব্লু করেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। কিউইদের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৩৮।
এরপর নিজেদের মধ্যে কেন উইলিয়ামসন (৩৯) ও টম ল্যাথাম (৩৭) নিজেদের মধ্যে ৬৭ রানের জুটি গড়ে ইনিংসকে থিতু করেন। এরপর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে শুরু করে কিউইরা। যারফলে জিমি নিশাম (৪৪)-এর প্রতিরোধ কাজে আসেনি।
এদিন ভারত দলে তিনটি পরিবর্তন করেছিল। কার্তিকের বদলে ধোনি, খলিলের বদলে শামি এবং কুলদীপকে বসিয়ে অলরাউন্ডার বিজয় শঙ্করকে খেলানো হয়। ফলে রোহিত শর্মার হাতে এদিন শামি, ভুবনেশ্বর, হার্দিক ও বিজয় - ৪ জোরে বোলার ছিলেন। ৪ জনই অত্যন্ত আঁটসাঁট বোলিং করলেন।
ফলে শুরুতে যে ঝড় তুলতে চেয়েছিলেন কিউইরা তা উঠল না। বরং দ্রুত উইকেট হারাতে হল। এরপর আবার যখন উইলিয়ামসন ও ল্যাথাম উইকেটে জমে গিয়েছেন তখনই ১৯ তম ওভারে আক্রমণে এলেন চাহাল। আর তারপরই স্পিনে বিরুদ্ধে তাঁদের দুর্বলত ফের উন্মুক্ত হয়ে গেল।
উইলিয়ামসনকে ফেরালেন কেদার যাদব। তিনি কিন্তু ম্যাচের পর ম্যাচ ভারতের ৬ নম্বরের ভূমিকায় দারুণ পারফর্ম করে চলেছেন। এরপর লেগস্পিনার চাহাল পর পর ল্যাথাম ও গ্র্যান্ডহোমি (১১)-কে ফিরিয়ে দিয়ে ৩২ ওভারে ১৩৫ রানে নিউজিল্যান্ডের ৬ উইকেট ফেলে দেন।
এরপর একটি দারুণ ইনিংস খেলছিলেন নিশাম। মাঠের প্রতিটি কোনে শট মারছিলেন। কিন্তু ধোনি তাঁর উপস্খিতি জানান দিলেন নিশামকে রান আউট করে।
৪১ রান দিয়ে মোট ৩ উইকেট নিলেন চাহাল। ২টি করে উইকেট নিলেন শামি ও পাণ্ডিয়া। আর আর ১টি করে উইকেট পেলেন কেদার ও ভূবনেশ্বর।
এর আগে বোলিং সহায়ক উইকেটে আগে ব্যাট নিয়ে সমস্যায় পড়েছিল ভারত। ম্যাট হেনরির বলে বোল্ড হন রোহিত (২)। বোল্টের বলে আপার কাট মারতে গিয়ে থার্ড ম্যান এলাকায় ধরা পড়েন শিখর (৬)। সপ্তম ওভারে হেনরির বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে সময়ের ভুলে স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান শুভমান গিল (৭)-ও। ধোনি (১)-ও ফিরে যান ১০ ওভারের মধ্য়েই।
এখান থেকে প্রতিরোধ গড়েন রায়ডু ও বিজয় শঙ্কর। প্রথমবার একদিনের ক্রিকেটে ব্যাট করতে নেমে কঠিন পরিস্থিতিতে কিন্তু বেশ ভাল খেলেন শঙ্কর। অপর প্রান্তে সেই সময় রায়ডু সেভাবে রান করতে না পারলেও শঙ্কর কিন্তু নিয়মিত প্রান্ত বদল করে ও খারাপ বল পেলে মেরে ভালই এগিয়েছেন।
৮৬ বলে অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করার পর অবশ্য ঝোড়ো ব্য়াটিং শুরু করেছিলেন রায়ডু। এদিন তাঁর শতরান বাধা ছিল। কিন্তু ৪৪ তম ওভারে ম্য়াচ হেনরির বলে তার ১০ রান আগেই থামেন তিনি। নিয়মিত উইকেট তুলে ভারতীয় ব্য়াটসম্যানদের ডেথ ওভারে ব্ল্য়াকক্যাপসরা আটকে রাখলেও হার্দিকের ক্যামিও ইনিংসের জোরেই ভারতের রান আড়াইশ টপকায়।
কিউই বোলারদের মধ্যে এদিন সেরা ছিলেন ম্য়াট হেনরি। ৩৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি। আর আগের ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের ব্যাটিংকে ধ্বংস করা বোল্ট পেয়েছেন ৩ উইকেট।