ধস রুখে দিলেন রায়ডু-শঙ্কর, গিয়ার পাল্টালেন হার্দিক - ওয়েলিংটনে ধাক্কা সামলে লড়াকু রান ভারতের
ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম ওয়ানডেতে আরও একবার টপ অর্ডারে ধস নামার পর, মিডল অর্ডারের লড়াইয়ের জোরে ভারত ২৫২ রান করেছে।
রবিবার ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ড বনাম ভারত পঞ্চম তথা শেষ ওডিআই ম্যাচে প্রথম পাওয়ার প্লে-তেই মাত্র ১৮ রানে ৪ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। ফিরে গিয়েছিলেন ভরসার ধোনিও। সেখান থেকে ধস রুখলেন আম্বাতি রায়ডু (৯০) ও বিজয় শঙ্কর (৪৫)। আর শেষের দিকে হার্দিক পাণ্ডিয়া ২২ বলে ৪৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেললেন। ভারত ৪৯.৫ ওভারে ২৫২ রানে অলআউট হয়ে গেল।
রায়ডুর ১১৩ বলে ৯০ রানের ইনিংসে শুরুর দিকে তিনি একেবারেই শট নিতে পারছিলেন না। তবে প্রথমে বিজয় শঙ্কর ও পরে কেদার যাদব (৩৪)-এর সঙ্গে যথাক্রমে ৯৮ ও ৭৪ রানের দুটি জুটি গড়ে তিনিই ভারতীয় ইনিংসের ধস আটকেছিলেন। তবে এদিন ভারত ভুলটা করে বসেছিল টসের সময়ই।
পিচ দেখে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন শুরুতে বল নড়াচড়া করবে। তারপরেও ভারত আগে ব্য়াট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন কিন্তু জানিয়েছিলেন তাঁরা আগে বলই করতে চেয়েছিলেন। গতে পারে বিশ্বকাপের আগে এই রকম সুইং-এর কড়াইতে ব্যাটসম্যানদের ফেলে দেখে নিতে চেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু এই পরীক্ষার ফল খুব একটা আশানুরূপ হয়নি।
পর পর দ্বিতীয ম্যাচে ব্যর্থ হল ভারতের টপ অর্ডার। ম্যাচ হেনরি ও ট্রেন্ট বোল্ড প্রথম বল থেকেই চাপে রেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ম্যাট হেনরির বলে বোল্ড হন রোহিত (২) আর বোল্টের বলে আপার কাট মারতে গিয়ে থার্ড ম্যান এলাকায় ধরা পড়েন শিখর (৬)। সপ্তম ওভারে হেনরির বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে সময়ের ভুলে স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান শুভমান গিল (৭)-ও।
ভারত এদিন কুলদীপকে বসিয়ে বিজয় শঙ্করকে খেলায়। ফলে এক অতিরিক্ত ব্যাটসম্যানে মিডল অর্ডার মজবুত হয়েছিল। কিন্তু ভারত যার উপর সবচেয়ে বেশি ভরসা করেছিল সেই ধোনি এদিন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। বোল্টের ভিতরে ঢুকে আসা বলে মাত্র ১ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। এই সময়ে মনে হয়েছিল হ্যামিল্টনের ম্যাচেরই পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে।
কিন্তু, এখান থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন রায়ডু ও বিজয় শঙ্কর। প্রথমবার একদিনের ক্রিকেটে ব্যাট করতে নেমে কঠিন পরিস্থিতিতে কিন্তু বেশ ভাল খেললেন শঙ্কর। অপর প্রান্তে সেই সময় রায়ডু ২০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করছিলেন। শঙ্কর কিন্তু নিয়মিত প্রান্ত বদল করে ও খারাপ বল পেলে মেরে ভালই এগোচ্ছিলেন। তাদের জুটি ৫০ পার করার পর মারতে শুরু করেন রায়ডু-ও। কিন্তু তাঁর শট বাছাই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।
শঙ্করের রান আউটে ভেঙে যায় ভারতের এদিনের সবচেয়ে সফল জুটি। এরপর ৮৬ বলে অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করার পর ঝোড়ো ব্য়াটিং শুরু করেছিলেন রায়ডু। এই সময় প্রথম বার চাপে পড়েছিল কিউই বোলিং। এদিন কিন্তু রায়ডুর শতরান বাধা ছিল। কিন্তু ৪৪ তম ওভারে ম্য়াচ হেনরির বলে তার ১০ রান আগেই থামেন তিনি।
নিয়মিত উইকেট তুলে ভারতীয় ব্য়াটসম্যানদের ডেথ ওভারে ব্ল্য়াকক্যাপসরা আটকে রাখলেও হার্দিকের ক্যামিও ইনিংসের জোরেই ভারতের রান আড়াইশ টপকায়। ৪৭তম ওভারে অ্যাস্টলের বলে পর তিনটি ছয় মারেন হার্দিক। বোল্ট ও নিশামের বলও তিনি বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছেন এদিন। ভারতের রানটা খুব বেশি না হলেও ভারতীয় বোলিং আক্রমণ এই মুহূর্তে যে ফর্মে আছে তাতে এই রানটা খুব সহজে তুলতে পারবে না কিউইরা।
কিউই বোলারদের মধ্যে এদিন সেরা বোলিং করলেন ম্য়াট হেনরি। ৩৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট পেলেন তিনি। শুরুর পাওয়ার প্লে-তে যেমন উইকেট তুললেন, তেমন ডেথ ওভারেও উইকেট পেলেন তিনি। আগের ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের ব্যাটিংকে ধ্বংস করা বোল্ট নিলেন ৩ উইকেট। তিনি রান দিয়েছেন ৩৯।