বরাবরই কঠিন সফর, তাসত্ত্বেও কিউইর দেশে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের বেশ কিছু উজ্জ্বল মহূর্ত
নিউজিল্যান্ড সফরের ইতিহাসে ভারতের কিছু উজ্জ্বল মুহূর্ত।
ইতিমধ্যেই নিউজিল্যান্ডে পৌঁছে গিয়েছে বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল। রবিবারই (২০ জানুয়ারি) বিরাট বাহিনী পা রাখে অকল্যান্ডে। ভারতীয় দল পৌঁছনোর আগে থেকেই অস্ট্রেলিয়া সফরকে 'স্টার্টার' ও নিউজিল্যান্ড সফরকে 'মেইন কোর্স' বলে বাজার গরম করে দিয়েছেন প্রাক্তন কিউই অলরাউন্ডার স্কট স্টাইরিশ। তাঁর মতে অস্ট্রেলিয়া সফরের থেকেও কঠিন আসন্ন সিরিজ।
বস্তুত, তিনি খুব একটা ভুল বলেননি। নিউজিল্যান্ড সফর বরাবরই যে কোনও বিদেশী দলের কাছেই বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ। দক্ষিণ গোলার্ধের শেষ প্রান্তে অবস্থিত দেশটির সম্পূর্ণ অন্যরকম পরিস্থিতি ও সেই পরিস্থিতিতে গড়ে ওঠা খেলোয়াড়দের মোকাবিলা করাটা সহজ কাজ নয়। ২৩ জানুয়ারি থেকে বিরাটদের তাই কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে।
তবে নিউজিল্যান্ডে কিন্তু এর আগে ব্যাক্তিগতভাবে বা দলগত ভাবে ভারতী.য় দলের বেশ কয়েকটি উজ্জ্বল পারফরম্যান্স রয়েছে। যা থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে বর্তমান দল। সিরিজ শুরুর আগে দেখে নেওয়া যাক সেরকমই কিছু নিদর্শন।
ওপেনার সচিনের জন্ম
বছর পাঁচেক আগেই আন্তর্জাতিক কেরিয়ার শুরু করলেও একদিনের ম্যাচে ওপেনার সচিন তেন্ডুলকারের জন্ম কিন্তু হয়েছিল ১৯৯৪ সালের নিউজিল্যান্ড সফরেই। অকল্যান্ডে একদিনের ম্যাচে ভারতের তখনকার নিয়মিত ওপেনার নভজোৎ সিং সিধু ঘাড়ে ব্যথার জন্য খেলতে পারেননি। তাই ততদিন পর্যন্ত মিডল অর্ডারে ব্য়াট করা সচিনকে ওপেন করতে পাঠানো হয়েছিল। ৪৯ বলে ১৫টি চার ও ১টি ছয়ের মাধ্যমে ৮২ রান করেছিলেন তিনি। সেই শুরু হয়েছিল একদিনের ক্রিকেটে ভারতের নীল জার্সিতে সচিনের ওপেন করা।
২০০৮-০৯ সিরিজ জয়
২০০৮-০৯ সফরও ভারত শুরু করেছিল ২টি টি২০-র দুটিতেই হেরে। কিন্তু একদিনের সিরিজ শুরু হতেই অন্য ভারতকে দেখা গিয়েছিল। প্রথম ম্য়াচে সেওয়াগ, ধোনি, রায়না তিনজনেই অর্ধশতরান করেন। ডার্কওয়ার্থ-লুইস নিয়মে ভারত জিতেছিল ৫৩ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচ বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়। তৃতীয় ম্যাচে ১৩৩বলে ১৬৩ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলেছিলেন সচিন। যোগ্য সহায়তা দেন যুবরাজ ও ধোনি। ৪ উইকেটে ৩৯২ রানের পাহাড় গ়ড়েছিল ভারত। জবাবে ব্ল্যাক ক্যাপসরা ৩৩৪-এর বেশি এগোতে পারেনি। চতুর্থ ম্য়াচেও জয় পায় ভারত। সেওয়াগ (১২৫) ও গম্ভীর (৬৩)-এর সৌজন্যে ভারত ২৭১ রান তাড়া করে ২৩.৩ ওভারেই ২০১ তুলেছিল। বৃষ্টিতে খেলা সেখানেই বন্ধ হওয়ায় ভারতের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১৮।
পরাবাস্তব সেওয়াগ
২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত। একেবারে সবুজ পিচে ভারতের ৭ ম্যাচে স্কোর ছিল যথাক্রমে ১০৮, ২১৯, ১০৮, ১২২, ১৬৯/৮, ২০০/৯ ও ১২২। একমাত্র সেওয়াগ দুটি শতরান-সহ ২৯৯ রান করেছিলেন। সচিন, সৌরভ, রাহুল দ্রাবিড়, লক্ষ্ণণ, যুবরাজ ও কাইফের মিলিত রান ছিল ৪০৪। সেওয়াগ ছাড়া দুই দলের কেউই শতরান পাননি। এর মধ্যে সেওয়াগের ওই পারফরম্য়ান্স দেখলে মনে হয় পরাবাস্তব ঘটনা।
এবং শ্রীনাথ
নিউজিল্যান্ডে কিছু সাফল্য পেলেও ভারতীয় দলকে বেশিরভাগ সময়েই বড় মাপের হারের মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু, এই দেশে ধারাবাহিক সাফল্য পেয়েছিলেন প্রাক্তন ভারতীয় জোরে বোলার জাবাগাল শ্রীনাথ। নিউজিল্যান্ডের পিচ ও পরিস্থিতি শ্রীনাথের জন্য আদর্শ ছিল। ১৯৯২ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে বেশ কয়েকটি সফরে তিনি ১৭টি একদিনের ম্যাচে ৪৩টি উইকেট দখল করেছিলেন। এখনও অবধি এই রেকর্ডই নিউজিল্যান্ডে কোনও বিদেশী বোলারের পক্ষে সেরা। সবচেয়ে সফল হয়েছিলেন ২০০২-০৩ এর সফরে। কেরিয়ারের সায়াহ্নেও তিনি ১৭ স্ট্রাইকরেটে ১৮টি উইকেট দখল করেছিলেন।