আই লিগ: যুবভারতীতে দুরন্ত ফুটবল! মোহনবাগানের জয় আটকাল শঙ্করলালের ভুলে
মোহনবাগান বনাম চেন্নাই সিটি এফসি, আইলিগ ২০১৮-১৯-এর ম্যাচের প্রতিবেদন।
দারুণ জমজমাট একটি আইলিগ ম্যাচের সাক্ষি থাকল শনিবার (১ ডিসেম্বর)-এর যুবভারতী। মোহনবাগান ও চেন্নাই এফসি দুই দলই আগাগোড়া আক্রমণাত্বক ফুটবল খেলে গেল। ম্যাচে বেশিরভাগ সময় মোহনবাগানের প্রাধান্য থাকলেও শেষ অবধি ম্যাচ অমিমাংসিতই থাকল ১-১ ফলে। তবে যে কোনও দলই জিততে পারত।
প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বিশ্বমানের একটি গোলে বাগানকে এগিয়ে দিয়েছিলেন সেই সনি নর্ডে (৫০')। এদিন মাঝমাঠে দারুণ খেলছিলেন ওমর। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ১৪ মিনিট আগে মোহন কোচ তাঁকে তুলে নেন। আর তারপরই আশে সমতা ফেরানোর গোল। ৮১ মিনিটে গোল করে যান চেন্নাইয়ের নেস্টর গোর্দিলো।
এদিন চার্চিল ম্যাচের দলের থেকে প্রথম একাদশে তিনটি পরিবর্তন করেছিলেন শঙ্করলাল। গোলরক্ষক শিলটন পাল, রক্ষণে দলরাজ সিং ও আক্রমণভাগে দিপান্ডা ডিকার বদলে তিনি এদিন খেলান শঙ্কর রায়, কিমকিমা ও ওমরকে। অপরদিকে চেন্নাই-এর প্রথম একাদশে এধিন ফিরে আসেন তাদের ভয়ঙ্কর স্ট্রাইকার পেদ্রো মানজি। গোলে প্রথমবার নামেন স্যান্টানা।
প্রথম থেকেই চার্চিল ম্যাচের থেকে একেবারে অন্য দল বলে মনে হচ্ছি মোহনবাগানকে। ম্য়াচের ১০ মিনিটের মাথাতেই কিসেকার পাস থেকে গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন পিন্টু। কিন্তু তাঁর শট সরাসরি চলে যায় চেন্নাই গোলরক্ষকের হাতে। বস্তুত, গোটা ম্যাচেই এদিন স্যান্টানা বহু শ্রেত্রে দলের পতন রোধ করেন।
এদিন বাগানের মাঝমাঠে যেন মালি ছিলেন ওমর। তাঁর পা থেকে একের পর এক পাস বেরিয়েছে ডান প্রান্তে পিন্টু ও বাঁপ্রান্তে নর্ডের জন্য। সনিও বাঁপ্রান্ত থেকে বারবার ঢুকে পড়ছিলেন চেন্নাই সিটি বক্সে। ফলে এক মুহূর্তের জন্যও নিজের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেননি চেন্নাইয়ের বংশপাল। ক্রমাগত সনিকে আটকাতেই ব্যস্ত ছিলেন তিনি। বিরতিতে ফল ছিল ০-০।
বিরতির পর একই ছন্দে আক্রমণ শুরু করেছিল সবুজ মেরুন। আর খেলা শুরুর ৫ মিনিচের মধ্যেই সনির প্রতিভার কাছে পরাস্ত হন চেন্নাই গোলরক্ষক স্যান্টানা। কিসেকার থ্রু বল ধরে বাঁপ্রান্ত থেকে একেবারই নিজস্ব ভঙ্গীতে কাট করে ভিতরে ছুকে এসেছিলেন হাইতিয়ান স্ট্রাইকার। তারপর বক্সের মাথা থেকেই গোল লক্ষ্য করে একটি দুরন্ত শট নেন। বলটি বাঁক খেয়ে দ্বিতীয় পোস্ট দিয়ে ঢুকে যায় গোলে। স্য়ান্টানার কিছু করার ছিল না।
কিন্তু এরপরই বাগান কোচ শঙ্করলালের একটি ছোট্ট ভুলে ঘুরে যায় খেলা। নির্ধারিত সময়ের আর ১ মিনিট বাকি ছিল। দল এগিয়ে ছিল, এবং যেভাবে খেলছিল, তাতেই বোধহয় কিছুটা আত্মতুষ্টি এসেছিল শঙ্করলালে মধ্যে। এতক্ষণ যে ওমর একের পর এক সুযোগ তৈরি করে রক্ষণ সামলাতেই ব্যস্ত রাখছিলেন চেন্নাই মাঝমাঠের ফুটবলারদের, তাঁকেই তুলে শিল্টন ডিসিলভাকে নামান বাগান কোচ।
এরপরেই মোহনবাগানে আক্রমণে ঝাঁঝ কমে যায়। ধীরে ধীরে উপরে উঠে আসতে থাকে চেন্নাই সিটি। আর ৫ মিনিটের মধ্যেই আসে তাদের কাঙ্খিত গোল। রবার্তো এস্লাভার ক্রস বক্সের মধ্যে নিয়ন্ত্রনে নিয়েছিলেন গোর্দিলো। তারপর ঠান্ডা মাথায় পরাস্ত করেন শঙঅকর রায়কে।
সমতা ফেরানো পরই রক্তের স্বাদ পাওয়া বাঘের মতো ক্ষিপ্র ভঙ্গীতে মোহনবাগানের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল চেন্নাই সিটি এফসি। এই সময় রীতিমতো কাঁপুনি ঘধরে যগিয়েছিল বাগান রক্ষণে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিপদ ঘটেনি।