আই লিগ: বদনাম ঘোচালেন প্লাজা! ঘরের মাঠে থামল মোহনবাগানের অপরাজেয় দৌড়
মোহনবাগান বনাম চার্চিল ব্রাদার্স, আইলিগ ২০১৮-১৯-এর ম্যাচের প্রতিবেদন।
রবিবার (২৫ নভেম্বর)-এর আগে পর্যন্ত আইলিগ ২০১৮-১৯ মরসুমে অপরাজিত ছিল মোহনবাগান। কিন্তু সেই জায়গাটা কেড়ে নিলেন ইস্টবেঙ্গলে খেলে যাওয়া বিদেশী ফুটবলার উইলিস প্লাজা। জোড়া গোল মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার বদনাম ঘোঁচালেন তিনি। তাঁর বর্তমান দল গোয়ার চার্চিল ব্রাদার্স ০-৩ গোলে জিতে এখনও লিগে অপরাজিত রইল।
এদিন চার্চিলের হয়ে গোলের খাতা খুলেছিলেন অবশ্য তাদের অধিনায়ক দাওয়াদা সিসে (২১')। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে (৫১' ও ৫৫') পরপর দুই গোল করেন কলকাতা ময়দানের পুরনো মুখ প্লাজা। সনি নর্ডেও বাগানের পতন রোধ করতে পারেননি।
প্রথম থেকেই সনি
এদিন এই আইলিগ মরসুমে প্রথমবার একেবারে শুরু থেকে বাগানের ঘরের ছেলে সনি নর্ডেকে খেলান সবুজ মেরুন কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী। ওমরকে বসিয়ে প্রিয় লেফট উইং-এই খেলানো হয় তাঁকে। এছাডা় রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে খেলা বাকি দল অপরিব্তিত ছিল। ডিফেন্সে এদিনও খেলেন দলরাজ সিং।
চার্চিল দলে তিনটি পরিবর্তন করেছিলেন তাঁদের কোচ পিটার গিগিয়ু। কার্ড সমস্যা কেটে যাওয়ার পর প্রত্যাশা মতোই এদিন দলের তিন কাঠির নিচে ফেরেন প্ৎথম গোলরক্ষক জেমস কিথান। নল্লাপ্পান মোহনরাজ ও খালিদ আউচোর জায়গায় খেলেন ফার্নান্ডেজ ও জোঙেল মার্টিন্স।
সনির চুমু
এদিন শুরুর থেকেই আক্রমণভাগে পিছিয়ে পড়েছিল মোহনবাগান। চার্চিলের বক্সে তাদের প্রথম আক্রমণ শানাতে শানাতেই প্রথম ১৫ মিনিট পার হয়ে যায়। বল নিয়ে উঠছিলেন ডিকা। তাঁকে অনায্যভাবেই ফেরলে দিয়েছিলেন চার্চিল ফুটবলাররা। কিন্তু খেলা না থামিয়ে সেই বল নিয়ে এগিয়ে যান সনি নর্ডে। বক্সের একেবারে মাথা থেকে তিনি গোলে শট নিয়েছিলেন। কিন্তু বাগান জনতার মন ভেঙে সেই বল দ্বিতীয় পোস্টে চুমু খেয়ে বেরিয়ে যায়।
অরক্ষিত সিসে
তবে ম্যাচের প্রথম গোল আসে চার্চিল অধিনায়ক সিসের পা থেকে। ম্যাচের ২১ মিনিটের ম্থায় সবুজ মেরুন বক্সে প্লাজাকে উদ্দেশ্য করে ক্রস ভাসিয়েছিসলেন চার্চিলের ফুটবলার হ্যাংশিং। দলরাজ প্লাজাকে সেই বলের নাগাল পেতে দেননি। কিন্তু তাঁর পিছনেই সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় অপেক্ষা করছিলেন সিসে। গোলের একেবারে কাছ থেকে বলটি জালে জড়িয়ে দিতে ভুল করেননি তিনি। বিরতির আগেই অবশ্য গোল শওধের সুযোগ পেয়েছিলেন ইউতা। কিন্তু কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। বিরতিতে বাগান ওই এক গোলেই পিছিয়ে ছিল।
প্লাজা ঝড়
এই অবস্থায় দ্বিতীয়ার্ধে ঘরের মাঠে জেতার জন্য ঝাঁপাবে বাগান এমনটাই মনে করা হয়েছিল। বদলে প্রথম ১০ মিনিট কাটতে না কাটতেই উইলিস প্লাজা সবুজ মেরুন জালে আরও দুবার বল জড়িয়ে দেন। এর আগে একাধীকবার প্লাজাকে তাঁর সতীর্থদের ক্রস ধরা থেকে প্রতিহত করেছিলেন দলরাজ। কিন্তু ৫১ মিনিটে ইসরায়েল গুরুংয়ের তোলা একটি ক্রসের ক্ষেত্রে দলরাজকে ছাপিয়ে যান প্লাজা। তাঁর হেডে বিশেষ জোর না থাকলেও কিন্তু দলরাজের গায়ে লেগে তা দিক পরিবর্তন করে গোলে ঢুকে যায়।
এর ৫ মিনিট যেতে না যেতেই দ্বিতীয় গোল পেয়ে যান প্লাজা। এই গোলের ক্ষেত্রে প্লাজার কৃতিত্বের থেকেও মোহনবাগান রক্ষণের ব্যর্থতা বেশি। বাঁপ্রান্ত থেকে সিসের তোলা একটি নিখুঁত ক্রস থেকে ফের হেডে গোল করেন তিনি। তিনি য়খন বলটিতে মাথা ছোঁয়াচ্ছেন তাঁর ধারে কাছে বাগান-রক্ষণের কোনও ফুটবলার ছিলেন না।
নড়ে চড়ে বসলেও লাভ হল না
তিন গোলে পিছিয়ে পড়ার পরই নড়েচড়ে বসে মোহনবাগান। তাদের খেলায় পরিকল্পনার ছাপ দেখা যায়। কিন্তু ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ৩ গোল দেওয়ার পর রক্ষণে একেবারে ঝাঁপ ফেলে দেয় গিগিয়ুর দল।যা ভেদ করতে পারেননি ডিকা-কিসেকা, এমনকী সনি নর্ডেও।
এই হারের ফলে ৫ ম্যচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে মোহনবাগান নেমে গেল লিগ টেবিলের ৪ নম্বরে। আর কলকাতার মাঠ থেকে ৩ পয়েন্ট তুলে ৫ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে একেবারে দ্বিতীয় স্থানে উঠে গেল চার্চিল।