রোহিতের সেঞ্চুরিতেও পরাজিত ভারত! দেখে নিন ব্যর্থ রান তাড়ার ক্ষেত্রে ভারতীয়দের স্মরণীয় পাঁচ শতরান
রোহিত শর্মার সেঞ্চুরি ভারতকে ম্যাচ জেতাতে পারেনি। দেখে নেওয়া যাক ব্যর্থ রান তাড়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের করা ৫টি স্মরণীয় ওয়ানডে শতরান।
ক্রিকেট দলগত খেলা। ব্যক্তিগত প্রতিভার ঝলক দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে দিতে পারে, কিন্তু জেতার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টাই শেষ কথা। সিডনিতে শনিবার এই বিষয়টি আরও একবার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। রোহিত শর্মা দুর্দান্ত ১৩৩ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু দলের বাকি ব্য়াটসম্য়ানদের মধ্যে একমাত্র ধোনি (৫১) ও ভূবনেশ্বর কুমার (২৯*) ছাড়া কেউ বলার মতো রান পাননি। ফলে শেষ পর্যন্ত ৩৪ রানে হারতে হয়েছে ভারতকে।
ভারত দল হিসেবে খেললেও বিভিন্ন সময়ে, কখনও গাভাস্কার, কখনও কপিল, কখনও বা সচিন, ধোনি, কোহলিরা তার মধ্য়েও ব্যক্তিগত প্রতিভার ঝলকে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে এই তারকারা এককভাবে লড়াই চালালেও, সমর্থন পাননি বাকিদের থেকে। ঠিক সিডনির মতোই তাদের শতরান সত্ত্বেও ভারত পরাজিত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত একদিনের ক্রিকেটে ১৯টি ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে।
দেখে নেওয়া যাক তারমধ্যে স্মরণীয় পাঁচটি শতরান।
রোহিত শর্মা, ১৫০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০১৫
২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ভারত সফরে কানপুরে একদিনের সিরিজের প্রথম ম্যাচে প্রথমে ব্য়াট করে প্রোটিয়ারা ৩০৩ রান তুলেছিল। জবাবে দ্বিতীয় উিকেট জুটিতে রোহিত-রাহানে ১৪৯ রান যোগ করেন। কিন্তু ম্ডল অর্ডার পুরো ব্যর্থ হয়। রোহিত ১৫০ করে আউট হওয়ার সময় ভারতের দরকার ছিল ২৩ বলে ৩৫। কিন্তু ধোনি-রায়না ক্রিজে থেকেও রানটা তুলতে পারেনি। ভারত হারে ৫ রানে।
গৌতম গম্ভীর, ১১৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া, ২০০৮
২০০৮ সালে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার ত্রিদেশীয় সিরিজে সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্য়াট করে ৩১৭ রান তুলেছিল। পন্টিং ১২৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। জবাবে একসময় ভারত ৫১ রানে ৪ উইকেট হারায়। ধোনি ও উথাপ্পাকে নিয়ে লড়াই চালিয়েছিলেন গম্ভীর। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি। গম্ভীর ১১৯ বলে ১১৩ রান করলেও ভারত ১৮ রানে পরাজিত হয়েছিল।
বিরাট কোহলি, ১২৩ বনাম নিউজিল্যান্ড, ২০১৪
২০১৪ সালে ভারতের নিউজিল্যান্ড সফরে একদিনের সিরিজের প্রথম ম্যাচটি হয়েছিল নেপিয়ারে। ভারতের সামনে ২৯৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল কিউইরা। রান তাড়া করতে নেমে নিয়িত ব্য়বধানে উইকেট হারায় ভারত। পঞ্চম উইকেটে তখনকার অধিনায়ক ধোনিকে সঙ্গে নিয়ে কোহলি ৯৫ রানের জুটি গড়েছিলেন। ৪২.২ ওভারে ২২৪/৫ থেকে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ভারত ২৬৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। বিরাট ১১১ বলে ১২৩ রান করেও দলকে জেতাতে পারেননি।
সচিন তেন্ডুলকার, ১৭৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া, ২০০৯
২০০৯ সালে ভারতে ৭ ম্যাচের ওডিআই সিরিজ খেলতে এসেছিল অজিরা। হায়দরাবাদে পঞ্চম ওডিআই-তে শন মার্শ, ওয়াটসনের দাপটে ৩৫০ রানের পাহাড় গড়েছিল অস্ট্রেলিায়। ওপেনিং জুটিতে সচিন-সেওয়াগ ৯ ওভারে ৬৬ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর দ্রুত কিছু উইকেট পড়ায় বিপদে পড়েছিল ভারত। কিন্তু একাই ভারতকে টানার দায়িত্ব নিয়ে নেন সচিন। ১৭৫ রানের বিশাল ইনিংস খেলে আউট হওয়ার সময় ভারতের দরকার ছিল ১৭ বলে ১৯। হাতে ছিল ৩ উইকেট। সচিনের সেই দুর্দান্ত প্রচেষ্টাও জলে গিয়েছিল, ভারত ম্য়াচ হেরেছিল মাত্র ৩ রানে।
ইউসুফ পাঠান, ১০৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০১১
২০১০-১১ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ৫ ম্য়াচের একদিনের সিরিজের শেষ ম্য়াচে হানা দিয়েছিল বৃষ্টি। ওবার সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছিল ৪৬। হাসিম আমলার শতরানে দক্ষিণ আফঅরিকা প্রথমে ব্যাট করে তোলে ২৫০ রান। জবাবে একটা সময় ভারত ১১৯/৮ হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে স্টেইন মর্কেলদের পিটিয়ে পাঠান ৭০ বলে ১০৫ রানের রুদ্ধশ্বাস ইনিংস খেলেন। জাহির খানের সঙ্গে নবম উিকেটের জুটিতে ১০০ রান যোগ করেন। কিন্তু শেষ লাইনটা অতিক্রম করতে পারেননি। ভারত ৩৩ রানে পরাজিত হয়েছিল।