২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ : ১০টি দলের স্বপ্ন একটাই, দৌড় শুরু
১৯৯৯ সালে প্রথম কারেন্সি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল ইউরো। নাইজেরিয়া থেকে উঠেছিল সেনা শাসন। স্কটিশ পার্লামেন্ট চালু হয়েছিল ওই বছরই।
১৯৯৯ সালে প্রথম কারেন্সি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল ইউরো। নাইজেরিয়া থেকে উঠেছিল সেনা শাসন। স্কটিশ পার্লামেন্ট চালু হয়েছিল ওই বছরই। ১৯৯৯-তেই পানামা ক্যানেলের সব অধিকার পানামিয়ান সরকারের হাতে তুলে দিয়েছিল আমেরিকা। আবার ওই বছরেই ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বকাপ।
ঠিক ২০ বছর পর আরো একবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে টেমসের পারে। যে নদী দিয়ে ইতিমধ্যেই বয়ে গিয়েছে অনেকখানি জল। সচিন তেন্ডুলকরের অধ্যায় শেষে বিরাট কোহলি যুগের সাহসী পদচারণা ক্রিকেট বিশ্বে। ব্যাট ও বলের খেলা ওয়ান ডের-ও উর্ধ্বে উঠে টি-টোয়েন্টি নামক ঝড়ের আকার নিয়েছে। তবু ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ যেন আলাদা আবেগ। চার বছর ধরে চ্যাম্পিয়নের তকমা বয়ে নিয়ে বেড়াতে চায় না, ক্রিকেট বিশ্বে এমন দল আছে কী!
বিশ্বকাপের ১২তম এডিশনে ৩০ জুন লন্ডনের ওভালে আয়োজক ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। নতুন ইতিহাস লেখারও সূচনা হচ্ছে ওই দিন থেকেই। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, অন্যান্য বারের থেকে অনেক বেশি ওপেন এবারের বিশ্বকাপ। তাই কোন কোন দল শেষ চারে জায়গা দখল করবে, তা এখনই বলা বেশ কঠিন। তবে আয়োজক ইংল্যান্ড ও ভারতকে কাপ জয়ের দাবিদার ধরছেন অনেকে।
১৯৮৭ পর্যন্ত ছিল লাল বল। সাদা বলে বিশ্বকাপ শুরু হয় ১৯৯২ সাল থেকে। সেবার অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে বসেছিল ক্রিকেট মহাযজ্ঞের আসর। তখন থেকে এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে চালু থাকা ফর্ম্যাটে এবার পরিবর্তন আনা হয়েছে। আনা হয়েছে রাউন্ড রবিন লিগের প্রক্রিয়া। এর অর্থ, প্রতিটি দলকেই খেলতে হবে প্রতিটি দলের সঙ্গে। পয়েন্ট ও রান রেটের নিরিখে লিগের সেরা চারটি দল সরাসরি সেমিফাইনাল খেলবে। তাই এবারের লড়াই আগের থেকে অনেক বেশি কঠিন বলেই মনে করা হচ্ছে। এবং এমন একটি টুর্নামেন্ট ফর্ম্যাটের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত যুঝতে হলে ক্রিকেটারদের মানসিক ও শারীরিক ভাবে অনেক রাফ অ্যান্ড টাফ হতে হবে বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের।
চার বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে গ্রুপ পর্যায়তেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। এরপর ব্রিটিশদের ক্রিকেট পরিকল্পনায় আমূল পরিবর্তন আসে। প্রতিভাধর কিছু খেলোয়াড়ের অন্তর্ভূক্তিতে গত তিন বছরে প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে ইয়ন মর্গ্যান নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দল। খেলার প্রতিটি স্তরেই আগ্রাসন দেখিয়েছে তারা। তাই ঘরের মাঠে প্রথমবার বিশ্বকাপ তোলার ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের পাল্লা যে বেশ ভারী, তা কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে।
ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নে যারা কাঁটা হতে পারে, তাদের মধ্যে অন্যতম যে বিরাট কোহলির টিম ইন্ডিয়া, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন ইয়ন মর্গ্যানরা। ওপেনে রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ানের দাপট, ওয়ান ডাউনে বিশ্বসেরা বিরাট কোহলির বিক্রম এবং মিডিল অর্ডারে মিস্টার কুল মহেন্দ্র সিং ধোনির উপস্থিতি ভারতের ব্যাটিং লাইন-আপকে শক্তিশালী করেছে। একই সঙ্গে হার্দিক পাণ্ডিয়া, জসপ্রীম বুমরারদের ফর্মও টিম ইন্ডিয়াকে অন্যান্য দলগুলির থেকে আলাদা করেছে। তরুণ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহল, কুলদীপ যাদবের প্রতিভা বিশ্বকাপে নতুন কিছু করতে পারে।
বার বার পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নও বটে। ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অজিরা। এবার ইংল্যান্ডের মাটিতেও কাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার অস্ট্রেলিয়াকেই ধরেছেন অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ। গত দুই মরশুম পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন সুলভ যায়নি অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটীয় সফর। তারই মধ্যে বল বিকৃতি কাণ্ডে অভিযুক্ত হয়ে প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ও ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নাকে অস্ট্রেলিয়া বোর্ড নির্বাসনে পাঠালে দলের আত্মবিশ্বাস তলানিতে গিয়ে ঠেকে। চলতি বছরের শুরুতে ভারত ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজ জিতে ফের ট্র্যাকে ফেরে অজিরা।
চোকার্সের তকমা ঘোঁচাতে এবার বিশ্বকাপে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকেও টুর্নামেন্টের ডার্ক হর্স মনে করছেন কেউ কেউ। অন্যদিকে আফগানিস্তান, বাংলাদেশও এই বিশ্বকাপে জায়ান্ট কিলারের ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।