চাপের পরীক্ষায় বিজয়ী 'বোলার' শঙ্কর! নাগপুরে রোমাঞ্চকর ম্যাচে পাঁচশততম জয় তুলে নিল মেন ইন ব্লুজ
নাগপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একেবাহরে শেষ ওভারে ৮ রানে রোমাঞ্চকর জয় পেল ভারত।
দুর্দান্ত রোমাঞ্চকর একটি ওডিআই ম্যাচের সাক্ষী থাকল নাগপুর। উত্তেজনায় ছাড়িয়ে গেল টি২০ ম্য়াচকেও। একেবারে শেষ ওভারে ৩ বলের মধ্যে ২টি উইকেট শিকার করে ভারতকে জেতালেন বিজয় শঙ্কর। ভারতের ২৫০ রানের থেকে ৮ রান আগেই গুটিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ফলে দ্বিতীয় ম্য়াচেও জয় পেয়ে ভারত সিরিজে এগিয়ে গেল ২-০ ফলে।
এদিন ভারতের ২৫০ রান তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। দুই অজি ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ (৩৭) ও উসান খোয়াজা (৩৮) ১৫ ওভারে ৮৩ রান তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু পর পর দুই সেট ব্য়াটসম্যানকে হারিয়ে রান তোলার গতি কিছুটা হলেও হারায় অস্ট্রেলিয়া। দলে ফেরা শন মার্শ (১৬) ও ফর্মে থাকা ম্যাক্সওয়েল (৪) রান পেলেও মিডল অর্ডারে হ্যান্ডসকম্ব ৪৮ রান করেন। অর্ধশতরান করে একেবারে শেষ ওভার পর্যন্ত অজিদের আশা টিকিয়ে রেখেছিলেন স্টইনিস (৫২)। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
|
চাপের পরীক্ষায় বিজয়ী শঙ্কর
এদিন শেষ দিকে ম্য়াচ পৌঁছায় চরম উত্তেজনায়। শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ১১ রান, ভারতের ২ উইকেট। ক্রিজে ছিলেন সেট ব্যাটসম্যান স্টইনিস ও লিয়ন। বুমরা-শামির ওভার ফুরিয়েছিল। কোহলির হাতে বিকল্প ছিল শঙ্কর ও কেদার। বোধহয় বোলার বিজয়কে পরীক্ষা করার জন্যই তার আগে ম্যাচে মাত্র ১ ওভার করে ১৩ রান দেওয়া শঙ্করের হাতে বল তুলে দেন কোহলি। প্রথম বলে স্টইনিসকে এলবিডব্লু করলেন। পরের বলে দিলেন ২ রান। তৃতীয় বলেই বোল্ড করে ম্যাচ খতম করলেন তিনি।
|
দারণ শুরু অস্ট্রেলিয়ার
দীর্ঘদিন বাদে ভারতের বিরুদ্ধে রান পেলেন অজি অধিনায়ক। অস্ট্রেলিয়া এদিন ওপেনিং জুটিতে তুলল ১৫ ওভারে ৮৩ রান। প্রতিদিন যে ধারাবাহিকতা বুমরা-শামির বলে দেখা যায়, তা এদিন ছিল না।
ম্যাচে ফেরালেন স্পিনাররা
এখান থেকে ভারতকে ম্যাচে ফেরান স্পিনাররা। প্রথমে ফিঞ্চকে তুলে নেন কুলদীপ, পরের ওভারেই খোয়াজাকে ফেরান কেদার যাদব। শন মার্শ শিকার হলেন ধোনি-জাদেজা যুগলবন্দীর। জাদেজার বল অনেকটা স্পিন করে তাঁর ব্য়াটের কানায় লেগে যায় লেগ স্টাম্পের পাশে। ধোনি সঠিক অনুমানে সেই ক্যাচ তালুবন্দী করেন। এদিন কিন্তু জাদেজা ফের ভাল বল করলেন। ১০ ওভারে মাত্র ৪৮ রান দিলেন। তবে ফর্মে থাকা ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি দেন কুলদীপই। ২৮ ওভারের পর অজিদের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৩২।
লাগাম লাগল রান তোলার গতিতে
পর পর এই কয়েকটি উইকেটের পতনে লাগাম লাগে অস্ট্রেলিয়ার রান তোলার গতিতে। অ্যালেক্স কেরি তো কুলদীপের বিরুদ্ধে আকুল পাথারে পড়েছিলেন। এখানেই অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজনীয় রানরেট ৬-এর উপরে চলে যায়। সেই সঙ্গে প্রথমে জাদেজার ফিল্ডিংয়ের শিকার হন সেট ব্য়াটসম্য়ান হ্যান্ডসকম্ব। কেরি (২২)-ও কুলদীপকে পাল্টা মারের রাস্তায় গিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন। সবমিলিয়ে ৫৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন কুলদীপ।
বুমরার প্রত্যাবর্তন ও ধস
এরপরই বুমরা ও শামিকে আক্রমণে ফেরান কোহলি। এদিন প্রথম স্পেলে উইকেট তুলতে না পারলেও ফিরে এসেই প্রথমে কুল্টার নাইল ও পরে কামিন্সের উইকেট তুলে নেন বুমরা। ১০ ওভারে তিনি মাত্র ২৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন। দিনটা অবশ্য ভাল গেল না তাঁর সঙ্গী সামির ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে উইকেটহীন থাকলেন তিনি। আর বাকি কাজটা সাড়েন বিজয় শঙ্কর।
|
প্রথম ইনিংসে কোহলি শো
ভারতের এদিনের ব্য়াটিং অবশ্য মোটেই ভাল হয়নি। অধিনায়ক কোহলির শতরান (১১৬), বিজয় শঙ্করের দৃঢ় ইনিংস (৪৬) ও শেষ দিকে জাদেজার প্রতিরোধ ছাড়া বলার মতো বিশেষ কিছু নেই। ব্যর্থতার তালিকায় রয়েছেন দুই ওপেনার (রোহিত (০), শিখর (২১)), আম্বাতি রায়ডু (১৮)। খেলতে পারেননি আগের ম্য়াচের দুই নায়ক কেদার যাদব (১১) ও ধোনি (০)-ও। ৪ উইকেট নেন অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স।
এই জয়ের ফলে একদিনের ক্রিকেটে ভারত পাঁচষততম জয় তুলে নিল। অস্ট্রেলিয়ার পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে এই কৃতিত্বের অধিকারী হল ভারত।