মহিলা দলের কোচ নির্বাচন নিয়ে আরও নাটক! বিসিসিআই-এর অন্দরেই দাবি প্রক্রিয়াটিই অবৈধ
বিসিসিআইয়ের কোষাধ্যক্ষ অনিরুধ চৌধুরী বলেছেন যে ভারতের মহিলা ক্রিকেট দলের কোচ বাছাইয়ের প্রক্রিয়াটি অবৈধ।
ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ বাছাই নিয়ে নাটক চরমে উঠল। এই একটি বিষয় নিয়েই বিসিসিআই ও তার প্রশাসনিক কমিটি অন্দরের গোলমাল চলে এল প্রকাশ্যে। বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) মুম্বইয়ে কোচ নির্বাচনের জন্য আবেদদনকারীদের সাক্ষাৎকার নিলেন কপিলদের কমিটি। কিন্তু, ওই দিনই গোটা কোচ বাছাই প্রক্রিয়াটির বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল।
প্রশ্ন তুললেন বিসিসিআই-এর কোষাধ্যক্ষ অনিরুধ চৌধুরি। তিনি সাফ জানিয়েছেন, মহিলা ক্রিকেট দলের এই কোচ বাছাই প্রক্রিয়াটি অবৈধ। এর মাধ্যমে যদি কাউকে নিয়োগ করা হয়, তাহলে সেই নিয়োগের বিষয়টিও হবে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া। তাঁর মতে সিওএ-এর দুই সদস্যের মধ্যে একজনের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। দেখে নেওয়া যাক বিষয়টি ঠিক কি -
সিওএ-তে ফাটল
বেশ কয়েকদিন ধরেই সুপ্রিম কোর্ট নিয়োজিত বিসিসিআই-এর ক্রিকেট প্রশাসনিক কমিটির দুই সদস্য বিনোদ রাই ও ডায়না এডুলজির মধ্যে বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ফারাক দেখা যাচ্ছে। মহিলা দলের কোচ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। এডুলজি রমেশ পাওয়ারকেই কোচের পদে বহাল রাখার জন্য রাইকে অনুরোধ করেছিলেন। তাকে পাত্তা না দিয়ে তিনি বরং কপিল দেব, অংশুমান গায়কোয়াড় ও শান্তা রঙ্গস্বামীকে নিয়ে ইন্টারভিউ প্য়ানেল গঠন করেন।
ডায়নাকে অবজ্ঞা
বিনোদ রাই বৃহস্পতিবার কোচ বাছাইয়ের ইন্টারভিউ হবে ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে ডায়না জানিয়েছিলেন এই ইন্টারভিউ প্য়ানেলের প্রতি তাঁর অনুমোদন নেই। এমনকী, বিসিসিআই-এর অন্যান্য পদাধিকারীদেরও তিনি তাঁর আপত্তির কথা জানালেও তাঁকে অবজ্ঞা করেই কোচ বাছাই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করার সামিল বলে দাবি করেছেন অনিরুধ।
কেন অবৈধ?
বিসিসিআই কোষাধ্যক্ষ কোচ বাছাই প্রক্রিয়াটিকে অবৈধ বলছেন, কারণ সুপ্রিম কোর্ট নিয়োজিত এক সিওএ সদস্যের মতকে অগ্রাহ্য করেই এই বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর মতে কোনও বিষয়ে দুজনের মতের মিল নাই হতে পারে। সেক্ষেত্রে বোর্ডের বাকি সদস্যদের ঐক্যমতের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করা উচিত ছিল। তা না করে একজনের মত অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অর্থের অপচয়
এভাবে কোনও সংস্থা চলতে পারে না বলেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যে যে সিদ্ধান্তের পিছনে বিসিসিআই অর্থ ব্যয় করছে সেই সব সিদ্ধান্ত সঠিক এবং তার প্রয়োজনীয় অনুমোদন থাকা প্রয়োজন। তা না হয়ে বিসিসিআইয়ের অর্থ ভুল জায়গায় ব্যয় করা হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। এসবই দায়িত্বহীনতার পরিচয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কোচ বাছাইয়ের ইন্টারভিউ
মুম্বইতে বোর্ডের সদর দফতরে অবশ্য এদিন পূর্বসূচি মতোই মহিলা দলের কোচের পদে আবেদনকারীদের সাক্ষাতকার নিয়েছেন কপিল দেব, অংশুমান গায়কোয়াড় ও শান্তা রঙ্গস্বামী। তাঁরা কাউকে শেষ পর্যন্ত বাছাই করলেও তার ভবিষ্যত কি হবে, কোষাধ্যক্ষের এই ক্ষোভ প্রকাশের পর তা নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
যা নিয়ে কোনও অস্পষ্টতা নেই, তা হল বিসিসিআই-এর অন্দরে কিছুই ঠিকঠাক চলছে না। সবটাই ডামাডোল হয়ে রয়েছে।