ভাঙল নীরবতা, বিস্ফোরক মিতালির আঙুল 'কিছু ক্ষমতাবান মানুষ'-এর দিকে, কাদের মুখোশ খুললেন
নীরবতা ভেঙ্গে মিতালী রাজ অভিযোগ করলেন ডায়ানা এডুলজি ও রমেশ পাওয়ার তাঁর কেরিয়ার ধ্বংস কর
অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন তিনি। মহিলা টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচে ইংল্যান্ডে বিরুদ্ধে বাদ পড়া নিয়ে অবশেষ মুখ খুললেন মিতালী রাজ। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ 'কিছু ক্ষমতাবান মানুষ আমার শেষ করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
না টি২০ অধিনায়ক হরমনপ্রিত বা দলের কোনও সতীর্থের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও অভিযোগ নেই। তাঁর অভিযোগের লক্ষ্য দলের কোচ রমেশ পাওয়ার ও বিসিসিআই-এর ক্রিকেট প্রশাসনিক কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন মহিলা ক্রিকেটার ডায়না এডুলজির দিকে। মিতালী জানিয়েছেন তাঁরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দিতে চাইছেন।
হতাশা
মিতালী জানিয়েছেন, পর্বে পর পর দুই ম্যাচে অর্ধশতরান করার পরও বাদ পড়ায় তাঁর কুড়ি বছরের কেরিয়ারে প্রথমবার তাঁকে গ্রাস করেছিল হতাশা। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়, যে ভারতীয় দলে তাঁর খেলার আর কোনও মূল্য আছে কিনা, তাও ভাবতে বাধ্য হন। এভাবে তাঁর আত্মবিশ্বাস গুঁড়িয়ে দিয়ে তাঁর কেরিয়ার শেষ করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
অভিযোগ নেই
একই সঙ্গে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, টি২০ অধিনায়িকা হরমনপ্রিতের বিরুদ্ধে তাঁক কোনও অভিযোগ নেই। তাঁকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল কোচ রমেশ পাওয়ারেরই। তবে হরমন সেই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করায় তিনি দুঃখ পেয়েছিলেন।
আক্ষেপ
তবে তাঁর সবচেয়ে বড় আক্ষেপ এত কাছে এসেও টি২০ বিশ্বকাপ জিততে না পারা। তিনি জানিয়েছেন ভারতের মহিলা দলের হয়ে টি২০ বিশ্বকাপ জিততে চেয়েছিলেন তিনি। সেই সোনার সুযোগ হাতছাড়া হওয়াটা তাঁকে যন্ত্রনা দেয়।
পীড়াদায়ক
ক্রিকেট প্রশাসনিক কমিটির সদস্যা তথা ভারতের প্রাক্তন মহিলা ক্যাপ্টেন ডায়না এডুলজি রবিবারই সংবাদ মাধ্যমের সামনে মিতালীকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানান। তা নিয়ে সরাসরি ডায়নাকে আক্রমণ করেছেন মিতালী। তিনি ফাঁস করেছেন, আগেই তিনি রমেশ পাওয়ার তাঁকে কিভাবে নাকাল করেছেন, তা বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছিলেন ডায়নাকে। কিন্তু তারপরেও 'নির্লজ্জ'-এর ডায়না যেভাবে ওই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন তা অত্যন্ত পীড়াদায়ক বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের মহিলা দলের ওয়ানডে অধিনায়িকা।
অপমান
গোটা টি২০ বিশ্বকাপ জুড়ে কোচ রমেশ পাওয়ার, তাঁর মতো একজন সিনিয়র খেলোয়াড়কে ক্রমাগত অপমান করে গিয়েছেন বলে অভিযোগ মিতালীর। ঠারে ঠারে তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে দলে তিনি ব্রাত্য। তিনি জানিয়েছেন, কোনও জায়গায় তিনি এসে বসলেই উঠে চলে যেতেন পাওয়ার। নেটে অন্য সকলে যখন ব্যাট করত, রমেশ দাঁড়িয়ে দেখতেন। কিন্তু তিনি ব্যাট করার সময়ই চলে যেতেন। এমনকি কোনও সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে মিতালী গেলেও ফোনে চোখ বোলাতে বোলাতে রমেশ সেখান থেকে চলে যেতেন। দলের সবাই বুঝতে পারত, তাঁকে অপমান করার জন্যই এরকমটা করা হচ্ছে।
সোমবারই রাহুল জোহরি ও সাবা করিমের সঙ্গে দেখা তাদের বক্তব্য জানিয়েছেন মিতালী, হরমনপ্রিত ও দলের ম্যানেজার তৃপ্তি ভট্টাচার্য। তাদের সেই বক্তব্যের ভিত্তিতে রিপোর্ট দেওয়ার কথা প্রশাসনিক কমিটিকে। কিন্তু সেই কমিটির এক সদস্যের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করলেন মিতালী। এবার এই বিতর্কের জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটাই দেখার।