দল হিসেবেই ব্যর্থ রোহিত বাহিনী! কে কত নম্বর পেলেন - দেখে নিন টি২০ সিরিজের রিপোর্ট কার্ড
নিউজিল্যান্ড ও ভারতের মধ্যে সদ্যসমাপ্ত টি২০আই সিরিজে রোহিত শর্মা বাহিনী একটি দল হিসেবে ব্যর্থ হয়েছে। দেখে নিন এই সিরিজের নিরিখে মাইখেল বেঙ্গলির রিপোর্ট কার্ড।
৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে টিম ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয় মহাদেশে একটা দারুণ সময় কাটিয়েছে। শুরুতে অস্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টির ব্যাঘাতে টি২০ সিরিজ অমিমাংসিত রাখতে হয়েছিল। কিন্তু, তারপর প্রথমে টেস্ট সিরিজ ও পরে একদিনের সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করে নিউজিল্যান্ড পারি দিয়েছিল ভারত। কিউইর দেশে এসেও একদিনের সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে দুর্দান্ত জয় পেয়েছিল।
মধুরেন সমাপয়েত অবশ্য হয়নি। ১-২ ব্যবধানে টি২০আই সিরিজে পরাজিত হয়ে বেশ হতাশাজনকই হয়েছে ভারতের এই দীর্ঘ বিদেশ সফরের শেষটা। মাত্র ৫ দিনের ছোট এই সিরিজে একজন-দুইজন নয় গোটা ভারতীয় দলই ব্যর্থ হয়েছে। এ এক বিরল ঘটনা বটে। সাম্প্রতিক অতীতে দেখা গিয়েছে টিম ইন্ডিয়ায় কেউ একজন ব্যর্থ হলে অপর কেউ ঠিক খেলে দিয়েছেন। এই ক্ষেত্রে তা ঘটেনি।
এই প্রতিবেদনে এই সিরিজের নিরিখে মাইখেল বেঙ্গলি টিম ইন্ডিয়ার রিপোর্ট কার্ড উপস্থাপন করল।
রোহিত শর্মা - ৫
দ্বিতীয় টি২০আই ম্যাচে রোহিত শর্মা অ্যাঙ্করের ভূমিকা নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত দল জিতলেও তিনি ইনিংস দীর্ঘায়িত করতে পারেননি। বাকি দুটি ম্যাচে ২০০-র বেশি রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করায় বিরাট কোহলির অনুপস্থিতিতে তাঁরই মুখ্য ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও মোটামুটি ভালই করেছেন। কিন্তু ব্যাটসম্য়ান হিসেবে নিজের ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হিটম্যান।
শিখর ধাওয়ান - ৪
প্রথম ম্যাচে ১৮ বলে ২৯ করা ছাড়া তিনি বিশেষ কিছু করতে পারেননি। ২০০ রান তাড়া করার ক্ষেত্রে তাঁর কাছ থেকে ঝোড়ো ইনিংস আশা করা হয়েছিল।
ঋষভ পন্থ - ৬
পর পর দুই ম্যাচে একটি অপরাজিত ৪০ ও একটি ১২ বলে ২৮ রানের ইনিংস অন্যান্য সময়ে তাঁকে আরও বেশি পয়েন্ট দিতে পারত। বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজে তাঁকে সাদা বলের ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ দিয়েছিল দল। একটি মাত্র ক্ষেত্রে দলে জয় এনে দিয়েছেন ঠিকই কিন্তু পন্থ সুযোগকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেননি।
বিজয় শঙ্কর - ৬.৫
১৫৫ স্ট্রাইক রেট নিয়ে তামিলনাড়ুর অলরাউন্ডারটি তিন ইনিংসে যথাক্রমে ২৭, ১৪ ও ৪৩ রান করেছেন। তাঁর বড় রানের ইনিংসে দলকে জেতাতে না পারলেও তাঁর ব্যাটিং প্রতিভাকে ভালভাবে তুলে ধরেছেন। দারুণ তেজ রয়েছে তাঁর ব্যাটিংয়ে। সিরিজে তিনি বল করার সুযোগ পাননি।
এমএস ধোনি - ৫
স্টাম্পের পিছনে ধোনি ছিলেন বরাবরের মতোই সেরা। তবে ব্যাটে এই সিরিজে তাঁকে সেভাবে পাওয়া যায়নি।ঢ বিশএষ করে তৃতীয় ম্যাচে তিনি ব্যাট হাতে একটু বেশি অিবদান রাখতে পারলে ভারত জিততেই পারত। কিন্তু প্রয়োজনীয় মুহূর্তে তিনি আউট হয়ে যান।
দীনেশ কার্তিক - ৫
তৃতীয় ম্যাচে ১৬ বলে ৩৩ রান করে তিনি ভারতকে জয়ের দোরগোড়া পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, ক্রুণাল পাণ্ডিয়াকে স্ট্রাইক না দিয়ে একটি সিঙ্গল না নেওয়ার সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়ে যায়। এই নিয়ে বেশ সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছএ তাঁকে। তবে এই ম্যাচে কিন্তু তিনি নিজেকে ৬ নম্বরের জন্য আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন।
হার্দিক পাণ্ডিয়া - ৩
ব্যাট হাতে তাঁর কোনও অবদান নেই বললেই চলে, বল হাতেও বিশএষ কিছু করতে পারেননি। ৭ নম্বর ব্য়াটসম্যানের সামনে খুব বেশই ব্যাট করার সুযোগ আসে না। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে প্রয়োজনের সময় তিনি উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন। এছাড়া প্রতি ম্যাচেই তিনি খুব বেশি রান দিয়েছেন।
ক্রুণাল পাণ্ডিয়া - ৫
তিনি তাঁর ভাল খেলার নিদর্শন রেখেছেন দ্বিতীয় ম্য়াচে বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে এবং তৃতীয় ম্যাচে ১৩ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে। কিন্তু সমস্যা হল, তাঁর বাল আর খারাপ পারফরম্যান্সের মধ্যে ফারাকটা অনেক বেশি।
ভুবনেশ্বর কুমার - ৩
৪৭-১, ২৯-১, ৩৭-১ - প্রতি ম্যাচেই উইকেট নিলেও সিরিজে ওভারপ্রতি ৯.৪১ করে রান দিয়েছেন তিনি। ভারতের প্রধান বোলার হিসেবে এই বিলাসিতা করার সুযোগ নেই তাঁর। কৃপণ বোলার হিসেবে পরিচিত ভুবির পক্ষে এই রেকর্ড অত্যন্ত খারাপ।
যুজবেন্দ্র চাহাল - ২
২ ম্যাচে খেলে ১ উইকেট নিয়েছেন। সেই সঙ্গে রান ব্যয় করেছেন প্রচুর। একদিনের সিরিজের চাহালকে টি১২০ সিরিজে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। তৃতীয় টি২০আই তে তাঁর বদলে কুলদীপ এসে ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন।
খলিল আহমেদ - ৩
৩ ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন বাঁ-হাতি তরুণ জোরে বোলারটি। কিন্তু সিরিজে ওভার প্রতি ১০-এরও বেশি করে রান দিয়েছেন। কিউইদের ২০০ রানের ইনিংস খেলা দুই ম্যাচে প্রতি ওভারে দিয়েছেন ১২ করে। তাঁর মধ্যে সম্ভাবনা অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু ধারাবাহিক হয়ে উঠতে হবে।