অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারত: 'পিঙ্ক টেস্টে' কোহলিও গোলাপি সাজে! কেন সিডনি টেস্টের এই নাম, জেনে নিন
সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বনাম ভারত চতুর্থ টেস্টে সম্পূর্ণ গোলাপি সাজে মাঠে নামলেন বিরাট কোহলি। জেনে নিন কী কারণে এসসিজি টেস্টকে পিঙ্ক টেস্ট বলা হচ্ছে।
সিডনিতে ভাল শুরু করেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি বিরাট কোহলি। ফিরে গিয়েছেন ২৩ রান করেই। কিন্তু তারপরেও আলোচনার কেন্দ্রে তিনি। বা বলা ভাল তাঁর এদিনের গোলাপী সাজ। হ্যাঁ, গোলাপীতে গোলাপী সিডনির গ্য়ালারিকে বিস্মিত করে 'পিঙ্ক টেস্ট'-এ বিরাটকেও দেখা যায় গোলাপী সাজে।
মায়াঙ্ক আগরওয়াল আউট হতেই মাঠ আসেন কোহলি। দেখা যায়, তাঁর গ্লাভস, ব্যাটের হাতলের কভার থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্রিকেট সরঞ্জাম, এমনকী ব্য়াটে এমআরএফ-এর লোগোটি পর্যন্ত গোলাপী রঙের। আসলে 'পিঙ্ক টেস্ট' উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানাতেই তিনি এমনটা করেন। যা নিয়ে ধন্য ধন্য করছে ক্রিকেট মহল।
পিঙ্ক টেস্ট
চলতি সিডনি টেস্টকে বলা হচ্ছে পিঙ্ক টেস্ট। তবে শুধু এই টেস্টই নয়, সিডনিতে ২০০৯ সাল থেকেই প্রতি জানুয়ারিতে হওয়া টেস্ট ম্যাচকেই বলা হয় পিঙ্ক টেস্ট। প্রথম বছর এই টেস্ট খেলা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে। এই নিয়ে ১১তম পিঙ্ক টেস্ট খেলা হচ্ছে।
|
কিন্তু কেন?
এই নামকরণের পিছনে আসলে রয়েছে এক সমাজ সচেতনতামূলক আন্দোলন। প্রাক্তন অজি জোরে বোলার গ্লেন ম্য়াকগ্রার সংস্থা 'দ্য ম্য়াকগ্রা ফাউন্ডেশন' সারা বিশ্বজুড়ে স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সচেততা গড়ে তোলার কাজ করে। সেই কাজকে সমর্থন জানাতেই প্রতি জানুয়ারিতে সিডনিতে আয়োজিত টেস্টকে পিঙ্ক টেস্ট-এর আয়োজন করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
|
পিঙ্ক টেস্টের শুরু
পিঙ্ক টেস্টের সূচনার পিছনে অবশ্য় রয়েছে এক দুঃখজনক ঘটনা। ২০০৫ সালে স্তন ক্যানসার ধরা পড়ে গ্লেন ম্যাকগ্রার স্ত্রী জেন ম্যাকগ্রা। এররই তাঁরা দুজনে মিলে দ্য ম্যাকগ্রা ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু এর তিন বছর পরই জীবনাবসান ঘটে জেনের। তার পরের বছর থেকেই ম্য়াকগ্রার পাশে এসে দাঁড়ায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
|
এই টেস্টের বিশেষত্ব
পিঙ্ক টেস্ট চলাকালীন গ্যালারি থেকে মাঠ, সব জায়গায় গোলাপী রঙ দেখা যায়। দর্শকরা যেমন গোলাপী পোশাক পড়ে আসেন, অজি ক্রিকেটাররাও তাদের ক্রিকেট সরঞ্জামে গোলাপী রঙ ব্যবহার করেন। ম্যাচের আগে টিম ফোটো সেশনে তাদের মাথায় ব্য়াগি গ্রিনের বদলে থাকে গোলাপী রঙের টুপি। এছাড়া টেস্টের তৃতীয় দিনটিকে বলা হয় 'জেন ম্যাকগ্রা ডে'। ওইদিনের ম্যাচের আয় পুরোটাই দেওয়া হয় 'দ্য গ্লেন ম্যাকগ্রা ফাউন্ডশন'-কে। ম্য়াচ চলাকালীন এসসিজির একটি স্টান্ড নামাঙ্কিত থাকে জেন ম্যাকগ্রার নামে। যেখানে বসার সুযোগ পান শুধু মহিলারাই।
|
গ্লেন ম্যাকগ্রা ফাউন্ডশনের সাফল্য
যে মারণ-রোগে স্ত্রীকে হারাতে হয়েছিল, তার থেকে অন্যান্য মহিলা ও পুরুষদের বাঁচাতেই সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছইলেন প্রাক্তন অজি জোরে বোলার। বোলার হিসেবে যেরকম সাফল্য পেয়েছেন, এই ক্ষেত্রেও তাঁর সংস্থা সেভাবেই সাফল্য পেয়েছে। তাঁর ফাউন্ডশনের সহযোগিতা পেয়েছে ৬৭ হাজারেরও বেশি পরিবার। সংস্থা হয়ে ১২০ জন ম্যাকগ্রা ব্রেস্ কেয়ার নার্স আছেন, যাঁরা গোটা অস্ট্রেলিয়ায় স্তন ক্যানসারে আক্রান্তদের সেবা করে থাকেন।