বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: দু'টি দলই জিতেছে তিনটি করে ম্যাচ
আগামীকাল দ্য কেনিংটন ওভালে আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে হতে চলেছে এবারের আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধন।
আগামীকাল দ্য কেনিংটন ওভালে আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে হতে চলেছে এবারের আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধন। সাড়ে ২৫,০০০ আসন-বিশিষ্ট এই ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামটিতে এবারে মোট পাঁচটি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। ভারতীয় সময়ে বেলা তিনটেতে শুরু হওয়া এই খেলার দিকে নজর থাকবে ক্রিকেটবিশ্বের তামাম ক্রিকেটপ্রেমীর।
ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে মোট ছ'বার মুখোমুখি হয়েছে যার এবং দুই দলই জিতেছে তিনটি করে খেলায়। শেষ পাঁচটি খেলায় ইংল্যান্ড জিতেছে তিনটিতে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা দু'টিতে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এই দু'টি দেশ মোট ৫৯ বার মুখোমুখি হয়েছে যার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ২৯ বার, ইংল্যান্ড ২৬ বার, একটি খেলা টাই হয় এবং তিনটি অমীমাংসিত থাকে।
এবারে নজর রাখা যাক বিশ্বকাপের আঙিনায় ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে অতীতে হওয়া খেলাগুলির দিকে।
১৯৯২ সাল থেকে বিশ্বকাপে খেলছে এই দু'টি দল একে অপরের বিপক্ষে
বিশ্বকাপে এই দু'টি দল সর্বপ্রথম মুখোমুখি হয় ১৯৯২ সালে, যেবার দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমবার বিশ্বকাপে যোগ দেয় বর্ণবৈষম্যের যুগান্তে। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে হওয়া লিগের সেই বৃষ্টি-বিঘ্নিত খেলাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিন উইকেটে হারায় ইংল্যান্ড। আগে ব্যাট করে কেপলার ওয়েসেলস-এর দল ২৩৬ রান করে ৫০ ওভারে, চার উইকেটের বিনিময়ে। বৃষ্টির পরে ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল ৪১ ওভারে ২২৬ এবং তারা সাত উইকেট হারিয়ে প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয়। ইংল্যান্ডের অধিনায়কত্বে ছিলেন আলেক স্টুয়ার্ট যিনি ৭৭ রান করে ম্যান অফ দ্য ম্যাচও হন।
এই দুই দেশের দ্বিতয় মোলাকাতটি হয় সেই বিশ্বকাপেরই সেমি-ফাইনালে। টসে জিতে ওয়েসেলস গ্রাহাম গুচের ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠান এবং তারা ৫০ ওভারে করে ২৫২, ছয় উইকেটে। গ্রেম হিক সর্বোচ্চ ৮৩ করেন। এই ম্যাচেও বিঘ্ন ঘটায় বৃষ্টি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নয়া লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৫ ওভারে ২৫৩ রান। সেই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ছিল ছয় উইকেটে ২৩১ এবং ১৩ বলে তাদের প্রয়োজন ছিল ২২ রান। কিন্তু ফের আরেকবার বৃষ্টি নামার ফলে লাগু হয় সেই বিশ্বকাপের অদ্ভু নিয়ম এবং দুই ওভার কেটে নেওয়া হয় দক্ষিণ আফ্রিকার অথচ লক্ষ্য থাকে সেই একই। অর্থাৎ, প্রোটিয়াদের তখন করতে হত ১ বলে ২২ যা কার্যত অসম্ভব। ইংল্যান্ড ২০ রানে জেতে। হিক পান ম্যাচের সেরার সম্মান।
এই দল দুটির মধ্যে এর পরের বিশ্বকাপ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে, ১৯৯৬ সালে। সেবারে মাইকেল আথারটনের ইংল্যান্ডকে ৭৮ রানে চূর্ণ করে হ্যান্সি ক্রোনিয়ের দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকা আগে ব্যাট করে ২৩০ রান করে ৫০ ওভারে এবং জবাবে ইংল্যান্ড মুড়িয়ে যায় মাত্র ১৫২ রানে। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হন জন্টি রোডস।
এর পরে ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপে তাদের মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। কেনিংটন ওভালেই অনুষ্ঠিত সেই খেলাতে প্রথমে ব্যাট করে প্রোটিয়ারা তোলে ২২৫ রান, ৭ উইকেটে। হার্সেল গিবস সর্বোচ্চ করেন ৬০ রান। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিং-এর সামনে ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় মাত্র ১০৩ রানে।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রিজটাউনে এর পরের খেলাটি হয় এবং তাতেও দক্ষিণ আফ্রিকা হেলায় হারায় ইংরেজদের। টসে জিতে আগে ব্যাট করে ইংল্যান্ড মাত্র ১৫৪ রানে অল আউট হয়ে যায় এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সেই রান তুলতে বিশেষ বেগ পেতে হয় না। নয় উইকেটে জয় লাভ করে গ্রেম স্মিথ-এর দল। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ছিলেন মাইকেল ভন।
এগারো সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড জেতে মাত্র ছয় রানে
এরপর ২০১১ সালের বিশ্বকাপে চেন্নাইতে ফের মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। আগে ব্যাট করে শুরুটা ভালো করলেও ইংল্যান্ড ইমরান তাহিরের স্পিনের ছোবলে মাত্র ১৭১ রানে খতম হয়ে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকা ভালোই এগোচ্ছিল এই রান তুলতে কিন্তু ১২৪ রানে তিন উইকেট থেকে তারা আচমকা ভেঙে পরে মাত্র ১৬৫ রানেই শেষ হয়ে যায় এবং হারে ছয় রানে। স্টুয়ার্ট ব্রড নেন ১৫ রানে চারটি উইকেট।