ক্যাসিয়াস ক্লে থেকে যেভাবে বক্সিং কিংবদন্তি হয়ে উঠলেন মহম্মদ আলি
১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকির লুইসভিলে জন্ম নিয়েছিল ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে জুনিয়র। পরবর্তীকালে সেই হয়ে ওঠে বিশ্বের সেরা বক্সিং কিংবদন্তিদের একজন মহম্মদ আলি। কীভাবে ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে জুনিয়র থেকে মহম্মদ আলি হয়ে উঠলেন তিনি, সেই কাহিনি একেবারে রূপকথার মতো।
বাবা ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে সিনিয়র ছিলেন একজন আফ্রিকান-আমেরিকান। তিনি সামান্য রঙের রাজ করতেন। মা ওডেসা ও'গ্র্যাডি ক্লে ছিলেন গৃহবধূ। তাঁদের ছেলেই পরে বক্সিং দুনিয়ার বাদশা হয়ে ওঠেন। শুধু বক্সিং নয়, বক্সিং রিংয়ের বাইরেও মহম্মদ আলি মানেই ছিল লড়াই ও সংগ্রাম।
আর সেই লড়াইয়ের মানসিকতা থেকেই বক্সিংয়ের রিংয়ে পা রাখেন তিনি। মাত্র ১২ বছর বয়সে নিজের সাইকেল হারানোর পরে তিনি চোরকে সাজা দিতে চেয়ে ঠেঙাতে চান। সেইসূত্রে ক্লে বক্সিং শেখা শুরু করেন। এরপর মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে তৎকালীন বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন সনি লিস্টনকে তিনি হারিয়ে দিয়ে বক্সিং জগতে হইচই ফেলে দেন।
সেই শুরু, তারপর আর বক্সিং রিংয়ে তাঁকে ঠেকানো যায়নি। এই ঘটনার পরই তিনি 'নেশন অব ইসলাম'-এ যোগ দেন। এবং নিজের নাম বদলে মহম্মদ আলি রাখেন। ১৯৭৫ সালে তিনি ইসলামও গ্রহণ করেন।
হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার তিন বছর পরে ১৯৬৭ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে মার্কিন সেনাবাহিনীর হয়ে যুদ্ধে যেতে আলি অস্বীকার করেন। আলির বক্তব্য ছিল, তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাস ভিয়েতনামের সঙ্গে যুদ্ধে সায় দিচ্ছে না। কারণ ইসলাম যুদ্ধে সায় দেয় না।
এই ঘটনার পর তাঁকে ছল করে বিভিন্ন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এবং বক্সিং পদক কেড়ে নেওয়া হয়। সেইসময়ে প্রায় চারবছর বক্সিং লড়তে পারেননি তিনি। ১৯৭১ সালে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সমস্ত অভিযোগ থেকে আলিকে মুক্তি দেয়।
ফের বক্সিং লড়তে শুরু করেন মহম্মদ আলি। ১৯৭৪ ও ১৯৭৮ সালে তিনি ফের দু'বার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্য়াম্পিয়নশি জেতেন ও দুনিয়ার সেরা বক্সার বিবেচিত হন। নিজের কেরিয়ারে মোট ৬১টি ম্যাচ খেলে তিনি ৫৬টি জিতেছিলেন। হেরেছিলেন মাত্র ৫টিতে। এছাড়া সর্বাধিক মোট ৩৭ বার প্রতিপক্ষকে নক আউট করে ইতিহাস গড়েন এই বক্সিং কিংবদন্তি।